বেমেছাল মর্যাদা-মর্তবা, বুযুর্গী, রোব, কামালতের অধিকারিণী সাইয়্যিদাতুন নিসা, আফদ্বালুন নিসা সাইয়্যিদাতুনা হযরত উম্মুল উমাম আলাইহাস সালাম


 বেমেছাল মর্যাদা-মর্তবা, বুযুর্গী, রোব, কামালতের অধিকারিণী সাইয়্যিদাতুন নিসা, আফদ্বালুন নিসা সাইয়্যিদাতুনা হযরত উম্মুল উমাম আলাইহাস সালাম

সাইয়্যিদাতুন নিসা, ক্বায়িম-মাক্বামে উম্মাহাতুল মু’মিনীন ঢাকা রাজারবাগ শরীফ উনার সাইয়্যিদাতুনা মুহতারামা হযরত উম্মুল উমাম আলাইহাস সালাম উনার মুবারক মর্যাদা-মর্তবা যামানায় অতুলনীয়। উনার মুবারক চরিত্র, আমল ও ইখলাছ অত্যন্ত প্রশংসনীয়। বর্তমান ফিতনায় জর্জরিত মুসলিম দুনিয়ায় মুসলিম মহিলাকুল অবহেলিতা, লাঞ্ছিতা, ধিকৃতা। কথিত প্রগতির জোয়ারে ভাসমান মহিলারা যখন তার অস্তিত্বকে খড়-কুটার ন্যায় উপলব্ধি করছে। যখন সে নিজকে পণ্যদ্রব্য ভাবছে। সর্বোপরি মহিলাদের চরমভাবে অবমূল্যায়ন করা হচ্ছে;

সেই মুহূর্তেই খালিক্ব মালিক রব মহান আল্লাহ পাক উনার রহমত স্বরূপ আবির্ভূত হন যামানার ছিদ্দীক্বা, মহিলাকুলের মুক্তির দিশারী, মহিলাকুলের সাইয়্যিদা, নারী মূল্যায়নের আলোকবর্তিকা, নূরে জাহান, আওলাদে রসূল, হাদিয়ে যামান, সাইয়্যিদাতুনা মুহতারামা হযরত উম্মুল উমাম আলাইহাস সালাম। বাতিলের একচেটিয়া প্রভাবে যখন মহিলাকুল পুরোপুরি অসহায়, বাতিলের প্রবল শক্তির বিপরীতে মহিলাকুল অস্তিত্বহীন। সেই মুহূর্তেই খোদায়ী শক্তিতে বলীয়ান হয়ে বাতিলের বিরোধিতায় সহজেই জয়ী হচ্ছেন বীরাঙ্গনার দীপ্ত প্রতীক সাইয়্যিদাতুনা মুহতারামা হযরত উম্মুল উমাম আলাইহাস সালাম। বাতিলের শোচনীয় পরাজয়ের শত শত ঘটনা ধ্রুব তারার ন্যায় স্পষ্ট। সেখান থেকে একটি উল্লেখ করছি মাত্র। একবার মহান মুজাদ্দিদে আ’যম, সাইয়্যিদুনা ইমাম রাজারবাগ শরীফ উনার হযরত মুর্শিদ ক্বিবলা আলাইহিস সালাম উনার বিশেষ ছফর ছিল দেশের দক্ষিণ-পূর্বাঞ্চলে। উক্ত অঞ্চলের বান্দরবান জেলা শহরে দুদিন তাজদীদী ছফর হয়। উক্ত তাজদীদী তা’লীমের জন্য দুটি খানকা শরীফ নির্ধারণ করা হতো। পুরুষদের জন্য একটি অপরটি নারীদের জন্য। পুরুষদের তা’লীম দিতেন মহান মুজাদ্দিদে আ’যম, সাইয়্যিদুল আউলিয়া হযরত মুর্শিদ ক্বিবলা আলাইহিস সালাম এবং মহিলাদের তা’লীম দিতেন উনারই মুবারক আহলিয়া নূরে জাহান, মুহতারামা সাইয়্যিদাতুনা হযরত উম্মুল উমাম আলাইহাস সালাম। অনুরূপ পূর্ব পরিকল্পনা মাফিক বান্দরবানেও আয়োজন করা হয়েছে। সেখানে দর্শনার্থী পুরুষদের পাশাপাশি হাজার হাজার মহিলারা বোরকা পরে চাদর মুড়ি দিয়ে খাছ পর্দার সাথে তা’লীমী মজলিসে উপস্থিত হন। মহিলারা মুহতারামা হযরত উম্মুল উমাম আলাইহাস সালাম উনার মুবারক মধু মিশ্রিত আকর্ষণীয় বাণী বা নছীহত শুনে, উনার মুবারক চেহারা দর্শন করে অনায়াসেই আকৃষ্ট হয়ে যায়। বেনামাযী নারী নামাযী হয়, বেপর্দা মহিলা পর্দানশীন হয়। মুত্তাক্বী পরহেযগার মুসলিমা হয়ে যায়। সুবহানাল্লাহ!

উল্লেখ্য যে, বান্দরবানের এক পাহাড়ি, নাম তার মুহম্মদ শামসুদ্দীন। সে তার আহলিয়ার (স্ত্রীর) হিদায়েতের ঘটনা বর্ণনা করলেন যে, তার আহলিয়া (স্ত্রী) ছিল এক নম্বর দুনিয়াদার, নামায পড়তো না, পর্দা করতো না, সারাক্ষণ ঝগড়া করতো, আহালের (স্বামীর) প্রতি যুলুম করত, অপচয়কারিণী ছিলো। অধিকাংশ সময় টেলিভিশন দেখতো। বহু চেষ্টা করেও তাকে ভালো করা যায়নি। একবার ঘর থেকে টেলিভিশন বের করতে চাইলে, হুমকি দেয় আমাকে তালাক দিয়ে ঘর থেকে টেলিভিশন বের করতে পারবে; এর আগে নয়। আমি খুব চিন্তায় পড়ে গেলাম। এমন সময় শুনলাম যে, বান্দরবানের একটি আবাসিক হোটেলে এক বুযুর্গ ওলী এসেছেন। সাথে উনার সম্মানিতা আহলিয়াও এসেছেন। তিনি খাছ পর্দার সাথে মহিলাদের তা’লীম দিচ্ছেন। 

হাজার হাজার মহিলারা সেখানে যাচ্ছে। এসব শুনে ঘরে এসে আহলিয়াকে (স্ত্রীকে) বললাম। অগত্যা সে রাজি হয়ে গেল। আমি আর দেরি না করে ঝটপট তাকে নিয়ে চলে আসি উক্ত তা’লীমী মজলিসে। আহলিয়াকে (স্ত্রীকে) স্ত্রীকে পাঠিয়ে দেই মহিলাঙ্গনে। আমি চলে আসি পুরুষাঙ্গনে। মুজাদ্দিদ আ’যম মামদূহ হযরত মুর্শিদ ক্বিবলা আলাইহিস সালাম উনার কাছে তওবা করে বাইয়াত হই। উনার সাথে মুনাজাত করি। ঝরঝর করে দু’চোখের পানি ছেড়ে দিয়ে আহলিয়ার (স্ত্রীর) হিদায়েতের জন্য দোয়া করি। পরিশেষে ফেরার সময় হলো। যথাসময়ে আহলিয়াকে (স্ত্রীকে) নিয়ে বাড়ি ফিরলাম। আহলিয়া (স্ত্রী) বলে উঠলো- ঘর থেকে টেলিভিশন সরিয়ে ফেলুন, টেলিভিশন দেখা হারাম, তা ঘরে রাখাও হারাম। এতদিন বুঝিনি, হযরত উম্মুল উমাম আলাইহাস সালাম উনার মুবারক ছোহবতে, নছীহতে এখন ভালো করেই হক্বকে হক্ব হিসেবে বুঝতেছি, আর না হক্বকে নাহক্ব রূপে জানছি। সুবহানাল্লাহ!

জনাব শামসুদ্দীন বলতেছেন, আমার আহলিয়া (স্ত্রী) এখন পর্দা করে, পাঁচ ওয়াক্ত নামাযসহ আওয়াবীন, তাহাজ্জুদ নামায পড়ে। রোযা রাখে, আমার সাথে বেয়াদবি করে না, ঝগড়া করে না, সে সম্পূর্ণ ভালো হয়ে গেছে। ভালো হয়ে গেছে। বলতে বলতে তার দু’চোখ বেয়ে আনন্দের অশ্রু গড়িয়ে পড়ে। সুবহানাল্লাহ!

সাইয়্যিদাতুন নিসা, নূরে জাহান, ছিদ্দীক্বায়ে আযীমা মুহতারামা হযরত উম্মুল উমাম আলাইহাস সালাম উনার কত উচ্চঁ বেমেছাল মর্যাদা-মর্তবা, বুযুর্গী, রোব, কামালত, যা বলার অপেক্ষাই রাখে না। উনার মুবারক ছোহবত, নছীহত গ্রহণ করতে বিশ্ব মহিলা মহলকে উদাত্ত আহ্বান জানাচ্ছি।


0 Comments: