রাজারবাগ শরীফ উনার পরিচিতি-৩৬

রাজারবাগ শরীফ উনার পরিচিতি-৩৬
কুরবানীর টিমঃ
নিছাব পরিমাণ অর্থ থাকলে কুরবানী করা ওয়াজীব। আগে আমাদের দেশের মুসলমান উনাদের ঘরে ঘরে এমনকি গ্রাম দেশে একটু সচ্ছলতা থাকলেই মানুষ গরু, মহিষ যবেহ করে কুরবানী করতেন এবং মানুষের মাঝে গোশত বিলাতেন। কিন্তু ইদানীং কিছু মানুষ লোক দেখাবার উদ্দেশ্যে (সকলে নয়) আলাদা পশু কুরবানী করলেও অধিকাংশ মানুষ তাদের আলাদাভাবে পশু কুরবানী করার সামর্থ্য থাকলেও দায়সারা ভাবে শেয়ারে কুরবানী করতে পছন্দ করে। নাউযুবিল্লাহ। এর অর্থ তাদের মাঝে কুরবানী করার রছম-রেওয়াজ আছে কিন্তু কুরবানীর হাকীকী শিক্ষা নেই।
দেশে অসংখ্য মাদ্রাসা থাকলেও সেখানকার ছাত্রদের কেবল কুরবানীর যৎ সামান্য শিক্ষা দিয়ে কুরবানীর পশু যবেহ করে চামড়া সংগ্রহেই নিয়োজিত করা হয়। যেহেতু এদের এ বিষয়ে তাকওয়া নেই ফলে তারা নিজেরাও সঠিকভাবে আমল করতে পারেনা আর মানুষকে তালিম দেবারতো প্রশ্নই আসেনা।
অথচ যিনি পনেরো শতকের সম্মানিত মুজাদ্দিদ, মুজাদ্দিদে আযম আলাইহিস সালাম তিনি এই কায়িনাতের বুকে কুরবানীর আমল করার এক অনবদ্য ইতিহাস সৃস্টি করেছেন সুবহানাল্লাহ।
তিনি সৃষ্টির শুরু থেকে যত হযরত নবী-রসূল আলাইহিমুস সালাম, হযরত সাহাবায়ে কিরাম রদিয়াল্লাহুতায়ালা আনহুম,আউলিয়া কিরাম রহমতুল্লাহি আলাইহিম আল্লাহ পাক উনার দিদারে চলে গেছেন উনাদের সকলের নাম মুবারকে পর্যায়ক্রমে কুরবানী করে যাচ্ছেন। এভাবে তিনি দশ লক্ষ নাম মুবারকে কুরবানীর করার নিয়ত মুবারক করে আমল করে যাচ্ছেন । সুবহানাল্লাহ। আর প্রতি বছর নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্ললাহ হুযুর পাক সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম, হযরত আহলে বাইত শরীফ আলাইহিমুস সালাম, হযরত খলীলুল্লাহ আলাইহিসসালাম, হযরত যাবীহুল্লাহ আলাইহিস সালাম উনাদের শান মুবারকে কুরবানী করে থাকেন। সুবহানাল্লাহ। এ বছর ১০-১১- ১২ ই যিলহজ্জ শরীফে (১৪৪০ হিজরিতে) প্রায় ৩১২ টি গরু, ৭১২ টি খাসী কুরবানী করার উদ্যোগ নেয়া হয়। সুবহানাল্লাহ।
আমাদের দেশের তথাকথিত বিত্তশালীরা লোক দেখানোর উদ্দেশ্যে অনেক বেশী মূল্যে পশু কিনে নিজেদের নামে কুরবানী করে থাকে। এক্ষেত্রে পনেরো শতকের সম্মানিত মুজাদ্দিদ, হযরত মুজাদ্দিদে আযম আলাইহি সালাম তিনি ইরশাদ মুবারক করেন, বাজারে পাওয়া সবচেয়ে দামী ও ভাল পশু কুরবানী হওয়া উচিত নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযুর পাক সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম উনার এবং সম্মানিত আহলে বাইত শরীফ আলাইহিমুস সালাম উনাদের উদ্দেশ্যে। সুবহানাল্লাহ।
কিন্তু হযরত মুজাদ্দিদে আযম আলাইহিসসালাম তিনি কুরবানীর এই মহান শিক্ষা মানুষের মাঝে বিলিয়ে দেবার লক্ষ্যে তিনি আলাদা তায়াজ্জুহ-ফায়িয দিয়ে বিশেষভাবে তৈরি করেছেন যিনি হযরত শাহ দামাদে আউয়াল হযরত শাফীউল উমাম আলাইহিস সালাম উনাকে। তিনি এই তালিম মুবারক প্রদানের উদ্দেশ্যে নিরলস পরিশ্রম করে থাকেন। তিনি মাস ব্যাপী প্রতিদিন তালিম দিয়ে থাকেন। কখনো দিনে কয়েকবার এই তালিম প্রদান করে থাকেন। কেবল তালিমই নয়, তিনি বিশেষ পরিকল্পনা করে সকলকে প্রস্তুত করে থাকেন। উনার মুবারক তালিম পেয়ে তালিমগ্রহিতাগণ বিভিন্ন এলাকায় যেয়ে তালিম প্রদান করেন। মানুষকে শেখানোর উদ্দেশ্যে প্রকাশ করা হয়েছে কুরবানীর উপর বিশেষ রেসালা ।
নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযুর পাক সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসালাম তিনি সূর্য উঠার কিছু পরেই অর্থাৎ মাকরুহ ওয়াক্ত শেষ হতেই তিনি পবিত্র ঈদগাহে গিয়ে দুই রাকাত পবিত্র ঈদুল আদহার নামাজ আদায় করেই কুরবানী করে নিতেন। সুবহানাল্লাহ। পবিত্র যিলহজ্জ শরীফ মাস উনার নয় দিন রোজা রাখার পর ১০ম দিন অর্থাৎ কুরবানীর দিন তিনি কুরবানীর পশুর গোশত ছাড়িয়ে নিয়ে, রান্না করিয়ে তা দিয়ে ইফতার মুবারক করতেন।সুবহানাল্লাহ। পনের শতকের সম্মানিত মুজাদ্দিদ হযরত মুজাদ্দিদে আযম আলাইহিস সালাম তিনি অবিকল সেই সুন্নত মুবারক জারী করেছেন ।
ঢাকা সহ বিভিন্ন জেলা থেকে আগত আমিল ভাইগণ পবিত্র ঈদুল আদহার নামাজ শেষ বের হয়ে যান ছুঁড়ি হাতে । মানুষকে কুরবানীর সঠিক তালিম দিয়ে,কুরবানী করে, সঠিক স্থানে চামড়া পৌছানোর ব্যাপারে উৎসাহিত করে, এতিমখানার জন্য চামড়া সংগ্রহের কাজে। সুবহানাল্লাহ। শ্রমিক থেকে সচিব, আমলা থেকে কামলা সকলকেই এইমুবারক কাজে আনজাম দিতে হয়। এই বিষয়টি যামানার সুমহান মুজাদ্দিদ মুজাদ্দিদে আযম আলাইহিস সালাম উনার বেমেছাল তাজদীদ মুবারকের অংশ। এর মধ্যে রয়েছে ইছলাহীর এক অনুপম রহস্য। সুবহানাল্লাহ।
রাজারবাগ সিলসিলার সকল মুরিদান যার উপর কুরবানী ওয়াজিব উনাদের সকলকেই নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযুর পাক সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম উনার নাম মুবারকে কুরবানী করার বিশেষ তাগিদ দেয়া হয়ে থাকে যা পৃথিবীর আর কোথাও দেখা যায়না।

0 Comments: