আমাদের সম্মানিত দাদা
হুযূর ক্বিবলা আলাইহিস সালাম উনার স্মরণে একজন কুতুবুজ্জামান-উনার দিদারে
মাওলা উনার দিকে প্রস্থান-
অপরদিকে হযরতুল আল্লামা সাইয়্যিদ মুহম্মদ মুখলেছুর রহমান আলাইহিস সালাম-উনার মুর্শিদ ক্বিবলা খলিফাতুল্লাহ, ইমামুল হুদা, কুতুবুল আলম, শাইখুল ইসলাম, আলহাজ্ব, হযরত মাওলানা আবু নছর মুহম্মদ আব্দুল হাই ছিদ্দীকী ফুরফুরাবী রহমতল্লাহি আলাইহি ছিলেন আধ্যাত্ম মহিমায় উজ্জীবিত এক অনন্য পুরুষ এবং পূর্ণাঙ্গ ওলী আল্লাহ। তিনি যে বুযুর্গ পূর্বপুরুষ, বিশেষতঃ মহান পিতার সন্তান ছিলেন, তা একান্তভাবে উনার কামিয়াবীর শীর্ষ মঞ্জিলে উত্তরণের ক্ষেত্রে সহায়ক হয়েছিল। উনার পিতা ছিলেন হাদিয়ে যামান, ইমামুল মুসলিমীন, মাশায়েখুল মিল্লাত ওয়াদ্দ্বীন, ইমামুল হুদা, কুদওয়াতুস্ সালেক্বীন, যুবদাতুল আরেফীন, ইমামে রব্বানী, ক্বাইয়্যুমুয্ যামান, আমীরুশ্ শরীয়ত, ইমামুত্ তরীক্বত, মুজাদ্দিুয্ যামান, সিরাজুস্ সালেক্বীন, ফখরুল মুহাদ্দিসীন, হাদিয়ে দাওরান, আফতাবে শরীয়ত, মাহতাবে তরীক্বত, মাহীয়ে বিদ্য়াত, শাইখুল মুহাক্কিক্বীন, কুতুবে রব্বানী, মাহবুবে ছুবহানী, দস্তগীর, মুর্শিদে বেনজীর, কুতুবুল আকতাব, মারজাউল খালক্বি ওয়াল মায়াব, গাউসুস্ সাক্বালাইন, ক্বামিউদ্ দালালাত ওয়াল গাওইয়াত, মুহ্ইস্ সুন্নাহ্, আলা হযরত, আলহাজ্ব, হযরতুল আল্লামা মাওলানা আবূ বকর ছিদ্দীকী ফুরফুরাবী রহমতুল্লাহি আলাইহি।
১২৬৩ হিজরী সালে তিনি ভারতের পশ্চিম বাংলার
হুগলী জিলাধীন ফুরফুরা শরীফে জন্মগ্রহণ করেন। ঊনবিংশ শতাব্দীর শেষভাগে বিধর্মী ও
বিজাতীয় দর্শন ও আদর্শে আবিষ্ট এই জনপদের অনেক মুসলমান ইসলামের মূলধারা থেকে
বিচ্যূত হয়ে পড়েছিলেন। ধর্ম, সংস্কৃতি, ইজ্জত, ঐতিহ্য, আচরণ, এমনকি আত্মমর্যাদা বিস্মৃত ঐ সব মুসলমানকে তিনি হিদায়েতের
বাণী শুনিয়েছেন এবং আধ্যাত্মিক ও নৈতিক শিক্ষায় উজ্জীবিত করেছেন। মুসলমানদের মন ও
মননে নিবিষ্ট অবসাদ ও অভিশাপ থেকে তিনি তাদের বিমুক্তি ঘটিয়েছেন। অর্ধশতাব্দী ব্যাপী
বিপুল কর্মধারা এবং আধ্যাত্ম সাধনার মুবারক ফসল তিনি আমাদের জন্য রেখে গেছেন। উনার
সম্মুখে শরীয়ত এবং ধর্মের বিরুদ্ধে কোন কথা বলা ও কাজ করার শক্তি ও সাহস কারো
ছিলনা। শিরক, বিদ্য়াত, অন্যায়, অনাচার ও ধর্মহীন আধুনিকতা উৎখাতে তিনি ছিলেন এক উদ্যোগী ও সংগ্রামী আধ্যাত্ম
পুরুষ। উনার অনুপম চরিত্র মাধুর্য ও অমায়িক আচরণের তুলনা মেলা ভার। অনেক বিধর্মী
মানুষ উনার কাছে মুসলমান হয়েছে। ধর্ম ও সমাজ হিতৈষণামূলক তৎকালীন শ্রেষ্টতম
পত্রিকা মিহির ও সুধাকর,
ইসলাম প্রচারক, মুসলেম হিতৈষী, ইসলাম
দর্শন, হানাফী, ইত্যাদি উনারই পৃষ্ঠপোষকতা ও আনুকূল্যে প্রকাশিত হয়েছিল। মুবারক জীবনব্যাপী
তিনি ইসলাম ধর্মের খিদমতে নিয়োজিত থেকে উনার সংস্কার সাধন করেন। তিনি প্রতিষ্ঠা ও
পরিচালনা করেছেন অসংখ্য মসজিদ, মাদ্রাসা, মক্তব, দ্বীনী কর্মশালা ও বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠান। উনার
প্রতিষ্ঠিত, অনুসৃত এবং সরাসরি উনার সঙ্গে সম্পৃক্ত “ফুরফূরা সিলসিলা” আল্লাহ পাক কর্তৃক কবুলকৃত। এই মুবারক সিলসিলা বিশ্বব্যাপী স্বীকৃত ও সমাদৃত। মুবারক বংশ
পরম্পরায় বুযুর্গ পিতা-মাতা, উভয়ের দিক থেকে উনার যোগসূত্র স্থাপিত হয়েছে ইসলামের প্রথম
খলীফা, আফযালুন্ নাছ,
বা’দাল আম্বিয়া,
হযরত আবু বকর ছিদ্দীক রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু-উনার
সঙ্গে। এই মহান মুজাদ্দিদ হযরতুল আল্লামা আবু বকর ছিদ্দীকী ফুরফুরাবী রহমতুল্লাহি
আলাইহি পঁচানব্বই বছর বয়স মুবারক অবসানে ২৫ মুর্হরম, ১৩৫৮ হিজরী/ ১৭ মার্চ, ১৯৩৯
ঈসায়ী সাল, শুক্রবার মহান আল্লাহ্ পাক-উনার দিদারে পরগারের দিকে প্রস্থান করেন।
(ইন্নালিল্লাহি ওয়া ইন্নাইলাইহি রজিউন) উনার ইন্তিকালে ইসলামের মর্মবাণী অনুধাবন ও
অনুশীলনের ক্ষেত্রে বিরাট ক্ষতি সাধিত হয়। এই ক্ষতি পূরণের অনিবার্যতায় উনার
সুযোগ্য সন্তান আলহাজ্ব হযরত মাওলানা আবু নছর মুহম্মদ আব্দুল হাই ছিদ্দীকী
ফুরফুরাবী রহমতুল্লাহি আলাইহিকে নায়েবে মুজাদ্দিদ হিসেবে আল্লাহ্ পাক যমীনে পাঠান।
(অসমাপ্ত)
আবা-৯১
0 Comments:
Post a Comment