আমাদের
সম্মানিত দাদা হুযূর ক্বিবলা আলাইহিস সালাম উনার স্মরণে একজন
কুতুবুজ্জামান উনার দিদারে মাওলা উনার দিকে প্রস্থান-
মুর্শিদ ক্বিবলা উনার সঙ্গে সম্পর্কের গভীরতা-
আল্লাহ্ পাক-উনার নিগূঢ় নৈকট্য হাছিলের তীব্র বাসনা জন্ম সূত্রেই হযরতুল আল্লামা সাইয়্যিদ মুহম্মদ মুখলেছুর রহমান আলাইহিস সালাম-উনার অন্তর মুবারকে ঠাঁই পেয়েছে। মুর্শিদ ক্বিবলা উনার সন্নিধানে এই নৈকট্যের মাত্রা এমন স্তরে উন্নীত হয়েছে, যেখানে জীবন ও মরণের বাঞ্ছিত সকল সফলতা ও চাওয়া-পাওয়া একাকার হয়ে গেছে। প্রত্যাশিত নিয়ামতের নাগাল সীমানায় পৌঁছেও সমর্পিত তিনি অবিশ্রান্ত কোশেশে নিয়োজিত। প্রত্যাশা পূরণের পরিণত মন্জিলে এসেও অতৃপ্তিবোধের অহর্নিশ দহন তাঁকে আক্রান্ত করে। নবতর উত্তরণে অনুক্ষণ উন্মেষের ক্ষেত্রে উনার এই পরম অতৃপ্তিবোধ নিয়ামক প্রেরণা হিসেবে সাব্যস্ত হয়েছে। উনার মুর্শিদ ক্বিবলা ইমামুল হুদা, কুতুবুল আলম, শাইখুল ইসলাম, হাদিউস সাক্বালাইন, নায়েবে মুজাদ্দিদ, আলহাজ্ব, হযরত মাওলানা, আবু নছর মুহম্মদ আবদুল হাই ছিদ্দীকী ফুরফুরাবী রহমতুল্লাহি আলাইহিও এমন মধুর বেদনায় অনুক্ষণ আচ্ছন্ন। মুরীদ ও মুর্শিদ ক্বিবলা উনার লক্ষ্য অভিন্ন। তাই আল্লাহ্ পাক-উনার মুহব্বত-মারিফাত হাছিলে উভয়ের উন্মুখ অন্তর মুবারকে সৃষ্ট অতলান্ত বেদনা ও অতৃপ্তিবোধের অভিন্নতা উনাদের মাঝে অবিচ্ছেদ্য সম্পর্ক গড়ে তুলেছে। এই যন্ত্রনা ও বেদনাকাতরতায় হযরতুল আল্লামা সাইয়্যিদ মুহম্মদ মুখলেছুর রহমান আলাইহিস সালাম-উনার কামিয়াবীর নবতর ভিত্ নির্মিত হচ্ছে এবং অবিরাম আল্লাহ্ পাক-উনার নৈকট্য লাভ হচ্ছে। এই নিদারুণ কষ্টের অবসান কাম্য নয়। মুর্শিদ ক্বিবলা উনার মুবারক সোহবতে কামিয়াবীর এমন সোপান অর্জিত হয়েছে, যেখানে জাগতিক প্রয়োজনের অনর্থক অংশের চাহিদার অবসান হয়েছে। এখন কেবল আল্লাহ্ পাক-উনার একান্ত আনুগত্যের নিরিখে মুর্শিদ ক্বিবলা উনার নির্দেশিত পরিশীলনে নিজেকে পরখ করে দেখা। মুর্শিদ ক্বিবলা সন্নিধানে কামিয়াবীর একধাপ থেকে আরেক ধাপে উত্তরণের অবিচ্ছিন্ন ধারাবাহিকতায় বেদনা-বিমুগ্ধ অনুভূতিতে এখন শুধু নিত্যদিন বার বার নিজেকে আবিস্কারে ব্যাপৃত থাকা।
আল্লাহ্ পাক-উনার পরিপূর্ণ সন্তুষ্টি হাছিলের লক্ষ্যে
মুবারক সোহ্বত লাভের জন্য একজন উপযুক্ত মুর্শিদ খুঁজে পাওয়া অনিবার্য। অপরদিকে
নিয়ামতের গুরুত্ব উপলব্ধি, ধারণ ও বহনের জন্য যোগ্য মুরীদ খুঁজে পাওয়াও মুর্শিদের
জন্য জরুরী। তবে সত্য যে, মনোনীত ওলীগণ আল্লাহ্ পাক-উনার সদয় ইচ্ছায় যে কোন
মুরীদকেই কামিয়াবীর শীর্ষ সোপানে পৌঁছে দিতে পারেন। কিন্তু মুরীদ যোগ্য ও সমঝদার
হলে কাজটি অবলীলায় সমাধা করা সহজ হয়। তাছাড়া, মুরীদ উপযুক্ত হলে উনার সঙ্গে মুরীদের ভাব বিনিময়
এবং নিয়ামত আদান-প্রদানের বিষয়টি অবারিত ও আনন্দদায়ক হয়। সকলের সমঝ একই মাত্রার
হয়না এবং কাম্য পর্যায়ের সমঝ অনেকেরই থাকেনা। হযরত ঈসা আলাইহিস্ সালাম বলেছেনঃ “আল্লাহ্ পাক-উনার
ইচ্ছায় আমি মৃতকে জীবিত করেছি, জন্মান্ধকে দৃষ্টি ফিরিয়ে দিয়েছি এবং কুষ্ঠরোগীকে
সুস্থ করেছি। কিন্তু নির্বোধকে বোধ দিতে পারিনি।” বলার অপেক্ষা রাখেনা যে, ওলীয়ে মাদারজাদ, কুতুবুজ্জামান, আওলাদুর রসূল, আলহাজ্ব, হযরতুল আল্লামা, শাহ্ ছুফী সাইয়্যিদ মুহম্মদ মুখলেছুর রহমান আলাইহিস
সালাম পূর্ব থেকেই কামিয়াবীর শীর্ষ ধাপে উপনীত ছিলেন। আল্লাহ্ পাক-উনার এমন মাহবুব
ওলীকে মুরীদ হিসেবে কাছে পেয়ে মুর্শিদ ক্বিবলা এতমিনান।
প্রত্যেক মুর্শিদের সোহবতেই অনেক-অসংখ্য ছালিক থাকেন।
সকলেরই লক্ষ্য আল্লাহ্ পাক এবং উনার প্রিয়তম হাবীব ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া
সাল্লাম-উনার মারিফাত ও মহব্বত অর্জন। উনাদের মধ্যে কেউ কেউ এমন থাকেন, যাঁরা মুর্শিদ ক্বিবলা
উনার একান্ত মাহবুব এবং আল্লাহ্ পাক-উনার সন্তুষ্টিলাভে ধন্য। পরিপূর্ণ আনুগত্য ও
যোগ্যতার বিচারে উনাদের সকলের মধ্যে একজন এরূপ মর্যাদায় অধিষ্ঠিত থাকেন, আল্লাহ্ পাক-উনার
সদয় ইচ্ছায় যিনি আপন মুর্শিদ ক্বিবলা উনার লব্ধ নিয়ামতের নির্যাস লাভের উপযুক্ত।
হযরতুল আল্লামা সাইয়্যিদ মুহম্মদ মুখলেছুর রহমান আলাইহিস সালাম-উনার অধিষ্ঠানও এমন
পর্যায়ের। কাজেই উনার প্রতি প্রাণের আঁকা মুর্শিদ ক্বিবলা হযরতুল আল্লামা আবু নছর
মুহম্মদ আব্দুল হাই ছিদ্দীকী ফুরফুরাবী রহমতুল্লাহি আলাইহি-উনার আকর্ষণ অতুলণীয়।
প্রেক্ষিত কারণেই বিশিষ্ট খলিফা হিসেবে মনোনয়নের মাধ্যমে এই প্রিয়তম মুরীদকে নিয়ামতের
নির্যাস সোপর্দ করার সকল আয়োজন ইতোমধ্যেই শুরু হয়ে গেছে। (অসমাপ্ত)
আবা-৯৩
0 Comments:
Post a Comment