আমাদের সম্মানিত দাদা
হুযূর ক্বিবলা আলাইহিস সালাম উনার স্মরণে একজন কুতুবুজ্জামান উনার দিদারে
মাওলা উনার দিকে প্রস্থান-
মুর্শিদ ক্বিবলা সন্নিধানে আনন্দ-বেদনায় মুহ্যমান হযরতুল আল্লামা সাইয়্যিদ
মুহম্মদ মুখলেছুর রহমান রহমতল্লাহি আলাইহি এখন ভাবছেন অনিশ্চিত মানব জীবনের কথা, মানুষের
আশা, আশঙ্কা, নিরাশা, দ্বন্দ্ব, সংশয় ও দোদুল্যমানতার কথা। ভাবছেন মুর্শিদ ক্বিবলা এবং আল্লাহ্ পাক-উনার
মুহব্বত-মারিফাত অর্জনে বাঞ্ছিত গন্তব্যের কথা। অনতিপূর্বে তিনি পর পর দু’জন
মুর্শিদের সোহ্বতে ছিলেন। উনাদের মুবারক উছীলায় তিনি লাভ করেছেন আল্লাহ্ পাক ও উনার
প্রিয়তম হাবীব হুজুর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম-উনার অপরিমেয় সন্তুষ্টি।
তিনি গভীর আগ্রহে ও অনুসন্ধানী দৃষ্টিতে প্রত্যক্ষ করেছেন উভয় মুর্শিদের জীবন
সাধনা, কৃচ্ছতা, অনুসন্ধান, অনুভব ও অনুশীলনের পৃথক প্রেক্ষিত। ওলীআল্লাহ্গণের মুবারক জীবনধারা ও
বৈশিষ্ট্য পৃথক পৃথক স্বাতন্ত্র্যে বৈচিত্রময় হলেও উনাদের সকলের মহিমাময় কামালত
পূর্ণতা পায় মহামিলনের অভিন্ন গতিধারায়। তাই বলা হয়, ভিন্ন ভিন্ন ফুল ভিন্ন ভিন্ন
(আপন-আপন) রং-এ রঞ্জিত ও সুবাসিত। কিন্তু সব ফুলই মানুষকে আকৃষ্ট করে, প্রীত
করে গন্ধ বিলায়।
ভাবনা ও আত্মসমর্পণের এক পর্যায়ে হযরতুল আল্লামা সাইয়্যিদ মুহম্মদ মুখলেছুর রহমান আলাইহিস সালাম মুর্শিদ ক্বিবলা সমীপে বাইয়াত হবার প্রার্থনা জানালেন। তরীক্বতের সমকালীন প্রাণপুরুষ, খলিফাতুল্লাহ্, কাইয়্যুমুয্যামান, ইমামুল হুদা, কুতুবুল আলম, হাদিউস্ সাক্বালাইন, নাশিরুল মিল্লাতিল মুস্তাফিয়া, শাইখুল ইসলাম, আলহাজ্ব, হযরত মাওলানা আবু নছর মুহম্মদ- আব্দুল হাই ছিদ্দীকী ফুরফুরাবী রহমতুল্লাহি আলাইহি উনার অন্তরঙ্গ মানুষ হযরতুল আল্লামা সাইয়্যিদ মুহম্মদ মুখলেছুর রহমান আলাইহিস সালাম-উনার বাইয়াত হবার নিবেদন সম্পর্কে পূর্ব থেকেই অবহিত ছিলেন। মুবারক দৃষ্টির নূরানী আভায় তিনি উনার মাহবুব মুরীদকে সিক্ত করে দিলেন। নিমিষের তত্ত্বাবধান এবং মনোনিবেশে নিয়ামত ধারণ ও বহনে করে প্রত্যাশিত মুরীদকে তিনি পরিপূর্ণ তুললেন। আনুষ্ঠানিক বাইয়াতের জন্য তিনি হাত মুবারক প্রসারিত করে দিলেন। প্রসারিত হাত মুবারকে সবিনয়ে আপন হাত রাখলেন কুতুবুজ্জামান হযরতুল আল্লামা সাইয়্যিদ মুহম্মদ মুখলেছুর রহমান আলাইহিস সালাম। উভয়ের মুবারক দৃষ্টি বিনিময় এবং অব্যক্ত ভাব ও ভাষার গোপন লেনদেনে বাইয়াতের আনুষ্ঠানিকতা সম্পন্ন হলো। মুর্শিদ ক্বিবলার মোবারক পরশে মাহবুব মুরীদ নিজেকে আবিস্কার করলেন আল্লাহ্ পাক-উনার নিগূঢ় নৈকট্যের এমন এক অবস্থানে, যেখান থেকে বিচ্যূতি ও বিভেদের কোন সংশয় ও আশঙ্কা নেই।
পূর্বের দু’জন মুর্শিদ ক্বিবলার মুবারক সন্নিধানেও অবারিত নিয়ামত হাছিল হয়েছে। কিন্তু আজকের প্রাপ্তিযোগ অবর্ণনীয়। আমীরে শরীয়ত, মাহতাবে তরীক্বত, মাহিউল বিদ্য়াত, মুহইস্ সুন্নাতিন নুবুবিয়্যা, পীরে দস্তগীর, আলহাজ্ব হযরত মাওলানা আবূ নছর মুহম্মদ আব্দুল হাই ছিদ্দীকী ফুরফুরাবী রহমতুল্লাহি আলাইহি-উনার মুবারক সোহবত এবং তত্ত্বাবধানে ভিন্নতর প্রক্রিয়া ও মাত্রায় আজ যে অভাবিত উপলব্ধি ও উত্তরণের দুয়ার উন্মোচিত হয়েছে তা অতুলনীয়। মুর্শিদ ক্বিবলা উনার সঞ্চিত নিয়ামতের নির্যাস দানে মাহবুব মুরীদকে আল্লাহ্ পাক-উনার কাছে সোপর্দ করে দিলেন। উভয়ের গভীর জানাজানি ও পারস্পরিক গোপন লেনদেনের মর্মকথা মুর্শিদ ক্বিবলা ছাড়া খানকা শরীফে উপস্থিত জনেরা কে কিভাবে উপলব্ধি করলেন, তা কে জানে? (অসমাপ্ত)
আবা-৮৯
0 Comments:
Post a Comment