মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র সাইয়্যিদু সাইয়্যিদিল আ’ইয়াদ শরীফ পালন করার বেমেছাল ফযীলত মুবারক-পর্ব-১২

মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র সাইয়্যিদু সাইয়্যিদিল আ’ইয়াদ শরীফ পালন করার বেমেছাল ফযীলত মুবারক-পর্ব-১২

মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র সাইয়্যিদু সাইয়্যিদিল আ’ইয়াদ শরীফ হচ্ছেন সরাসরি মহান আল্লাহ পাক উনার মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র আমল মুবারক। সুবহানাল্লাহ! স্বয়ং মহান আল্লাহ পাক তিনি নিজেই সৃষ্টির শুরু থেকে অদ্যবধি দায়িমীভাবে মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র সাইয়্যিদু সাইয়্যিদিল আ’ইয়াদ শরীফ পালন করে যাচ্ছেন এবং অনন্তকাল যাবৎ পালন করতেই থাকবেন। সুবহানাল্লাহ! তাই মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র সাইয়্যিদু সাইয়্যিদিল আ’ইয়াদ শরীফ উনার চেয়ে বড় এবং ফযীলতপূর্ণ আর কোনো আমল নেই। সুবহানাল্লাহ! বান্দার তরফ থেকে সর্বশেষ মাক্বাম হচ্ছে আবদিয়াতের মাক্বাম আর মহান আল্লাহ পাক উনার তরফ থেকে সর্বোচ্চ, সর্বশ্রেষ্ঠ এবং সর্বশেষ মাক্বাম মুবারক হচ্ছেন মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র সাইয়্যিদু সাইয়্যিদিল আ’ইয়াদ শরীফ উনার মাক্বাম মুবারক। সুবহানাল্লাহ! তাহলে এই মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র সাইয়্যিদু সাইয়্যিদিল আ’ইয়াদ শরীফ পালন করলে বান্দা-বান্দী, উম্মত, জিন-ইনসান কত বড় নিয়ামত লাভ করবে এবং তা পালন করার কত বেমেছাল ফযীলত মুবারক, সেটা সমস্ত জিন-ইনসান, তামাম কায়িনাতবাসী সকলের চিন্তা ও কল্পনার উর্ধ্বে। সুবহানাল্লাহ! নি¤েœ মাওলিদুন্নবী ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম অর্থাৎ মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র সাইয়্যিদু সাইয়্যিদিল আ’ইয়াদ শরীফ পালন করার বেমেছাল ফযীলত মুবারক সম্পর্কে হযরত ইমাম-মুজতাহিদ রহমতুল্লাহি আলাইহিম উনাদের কিছু ক্বওল শরীফ এবং একখানা বিশেষ ঘটনা মুবারক উল্লেখ করা হলো- 

সম্মানিত জান্নাত মুবারক লাভ:

قَالَ حَضْرَتْ اَلْاِمَامُ الشَّافِعِىُّ رَحْـمَةُ اللهِ عَلَيْهِ مَنْ جَـمَعَ لِمَوْلِدِ النَّبِـىِّ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ اِخْوَانًا وَهَيَّاَ طَعَامًا وَاَخْلـٰى مَكَانًا وَعَمِلَ اِحْسَانًا وَصَارَ سَبَبًا لِّقِرَائَتِهٖ بَعَثَهُ اللهُ يَوْمَ الْقِيَامَةِ مَعَ الصِّدِّيْقِيْـنَ وَالشُّهَدَاءِ وَالصَّالِـحِيْـنَ وَيَكُوْنُ فِـىْ جَنَّاتِ النَّعِيْمِ

অর্থ: “হযরত ইমাম শাফিয়ী রহমতুল্লাহি আলাইহি (বিলাদত শরীফ ১৫০ হিজরী শরীফ : বিছাল শরীফ ২০৪ হিজরী শরীফ) তিনি বলেন, মাওলিদুন্নবী ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম অর্থাৎ মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র সাইয়্যিদু সাইয়্যিদিল আ’ইয়াদ শরীফ উনার সম্মানার্থে যিনি খুশি মুবারক প্রকাশ করে লোকজন একত্রিত করবেন, খাদ্য প্রস্তুত করবেন, জায়গা নির্দিষ্ট করবেন এবং উত্তম আমল করবেন অর্থাৎ নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার প্রতি মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র ছলাত মুবারক পাঠ করবেন, উনার মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র ছানা-ছিফত মুবারক করবেন, মহান আল্লাহ পাক তিনি সেই ব্যক্তি উনাকে হাশরের দিন ছিদ্দীক্ব, শহীদ, ছালেহ্ উনাদের সাথে উঠাবেন এবং উনার সম্মানিত ঠিকানা মুবারক হবেন সম্মানিত জান্নাতুন না‘ঈম মুবারক উনার মধ্যে।” সুবহানাল্লাহ! (আন নি’মাতুল কুবরা)

আল্লামা হযরত ইমাম জাযরী রহমতুল্লাহি আলাইহি তিনি বলেন,

لَعُمْرِىْ اِنَّـمَا يَكُوْنُ جَزَاؤُهٗ مِنَ اللهِ الْكَرِيْـمِ اَنْ يَّدْخُلَهٗ بِفَضْلِهِ الْعَمِيْمِ جَنَّاتِ النَّعِيْمَ

অর্থ: “আমার জিন্দেগীর ক্বসম! অসীম দয়ালু মহান আল্লাহ পাক উনার পক্ষ থেকে সে ব্যক্তির প্রতিদান হচ্ছেন- মহান আল্লাহ পাক তিনি উনার বিশেষ অনুগ্রহে ঐ ব্যক্তি উনাকে সম্মানিত জান্নাতুন নাঈম উনার মধ্যে প্রবেশ করাবেন।” সুবহানাল্লাহ! (শারহুয যারক্বানী, সুবুলুল হুদা ওয়ার রশাদ, তারীখুল খ¦মীস ইত্যাদি)

কিতাবে বর্ণিত রয়েছেন-

مَنْ عَظَّمَ لَيْلَةَ مَوْلِدِهٖ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ بِـمَا اَمْكَنَهٗ مِنَ التَّعْظِيْمِ وَالْاِكْرَامِ كَانَ مِنَ الْفَائِزِيْنَ بِدَارِ السَّلَامِ

অর্থ: “যে ব্যক্তি নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র বরকতময় বিলাদতী শান মুবারক প্রকাশের রাত্রি (এবং দিবস) মুবারক উনাকে অর্থাৎ মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র সাইয়্যিদু সাইয়্যিদিল আ’ইয়াদ শরীফ উনাকে সর্বোচ্চ সাধ্য-সামর্থ্য অনুযায়ী মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র তা’যীম-তাকরীম মুবারক করবেন, সম্মান করবেন, তিনি চির শান্তিময় সম্মানিত জান্নাত মুবারক উনার অধিকারী হয়ে কামিয়াবী লাভ করবেন।” সুবহানাল্লাহ! (খুৎবাতু ইবনে নুবাতাহ্)

মূলত, যাঁরা মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র সাইয়্যিদু সাইয়্যিদিল আ’ইয়াদ শরীফ পালন করবেন, উনারা বিনা হিসেবে জান্নাতী তো অবশ্যই; শুধু তাই নয়, উনারা সর্বোচ্চ ও সর্বশ্রেষ্ঠ জান্নাতী। সুবহানাল্লাহ! মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র সাইয়্যিদু সাইয়্যিদিল আ’ইয়াদ শরীফ পালনকারী উনাদের জন্য আলাদাভাবে বিশেষ জান্নাত মুবারক রয়েছেন। সেখানে শুধু যাঁরা মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র সাইয়্যিদু সাইয়্যিদিল আ’ইয়াদ শরীফ পালন করেন উনারাই প্রবেশ করবেন। অন্য কেউ সেই বিশেষ জান্নাত মুবারক উনার মধ্যে প্রবেশ করতে পারবে না। সুবহানাল্লাহ! উনারা সেই সম্মানিত জান্নাত মুবারক উনার মধ্যে সরাসরি নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার খাদিম হিসেবে উনার সাথেই অবস্থান করবেন। সুবহানাল্লাহ!

সম্মানিত ঈমান মুবারক লাভ করার মাধ্যমে সফলতা অর্জন:

قَالَ حَضْرَتْ سَيِّدُ الطَّائِفَةِ جُنَيْدُ ۣ الْبَغْدَادِىُّ رَحْـمَةُ اللهِ عَلَيْهِ مَنْ حَضَرَ مَوْلِدَ النَّبِـىِّ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ وَعَظَّمَ قَدْرَهٗ فَقَدْ فَازَ بِالْاِيْـمَانِ

অর্থ: “সাইয়্যিদুত ত্বয়িফাহ্ হযরত জুনায়িদ বাগদাদী রহমতুল্লাহি আলাইহি (বিলাদত শরীফ ২১৫ হিজরী শরীফ : বিছাল শরীফ ২৯৮ হিজরী শরীফ) তিনি বলেন, মাওলিদুন্নবী ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম অর্থাৎ মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র সাইয়্যিদু সাইয়্যিদিল আ’ইয়াদ শরীফ উনার সম্মানার্থে যিনি খুশি মুবারক প্রকাশ করার জন্য মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র মাহফিল মুবারক-এ উপস্থিত হবেন এবং যথাযথ সম্মান প্রদর্শন করবেন অর্থাৎ মাল-সম্পদ খরচ করবেন, মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র ছানা-ছিফত মুবারক করবেন এবং মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র তা’যীম-তাকরীম মুবারক করবেন, তিনি সম্মানিত ঈমান মুবারক লাভ করার মাধ্যমে সফলতা অর্জন করবেন।” সুবহানাল্লাহ! (আন নি’মাতুল কুবরা, ইয়ানাতুত্ ত্বালিবীন ৩/৪১৪, কিতাবু ফাদ্বায়িলি মাওলিদিন্নবী ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম ২ নং পৃষ্ঠা, রিসালাতু মাওলিদিন্নবী ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম ৩ নং পৃষ্ঠা)

অর্থাৎ ঐ ব্যক্তি স্বয়ং নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার হাক্বীক্বী মুহব্বত মুবারক লাভ করবেন, হাক্বীক্বী মু’মিন হিসেবে সাব্যস্ত হবেন এবং তিনি ইহকাল ও পরকালে হাক্বীক্বী কামিয়াবী লাভ করবেন। সুবহানাল্লাহ!

সর্বদিক থেকে সর্বপ্রকার খায়ের-বরকত লাভ:

আল্লামা হযরত ইমাম ইবনে জাওযী হাম্বলী ছিদ্দীক্বী রহমতুল্লাহি আলাইহি (বিলাদত শরীফ ৫১০ হিজরী শরীফ : বিছাল শরীফ ৫৯৭ হিজরী শরীফ) তিনি বলেন,

لَا زَالَ اَهْلُ الْـحَرَمَيْـنِ الشَّرِيْفَيْـنِ وَالْمِصْرِ وَالْيَمَنِ وَالشَّامِ وَسَائِرِ بِلَادِ الْعَرَبِ مِنَ الْمَشْرِقِ وَالْمَغْرِبِ يَـحْتَفِلُوْنَ بِـمَجْلِسِ مَوْلِدِ النَّبِـىِّ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ وَيَفْرَحُوْنَ بِقُدُوْمِ هِلَالِ رَبِيْعِ الْاَوَّلِ وَيَغْتَسِلُوْنَ وَيَلْبَسُوْنَ بِالثِّيَابِ الْفَاخِرَةِ وَتَزَيَّنُوْنَ بِاَنْوَاعِ الزِّيْنَةِ وَيَتَطَيَّبُوْنَ وَيَكْتَحِلُوْنَ وَيَاْتُوْنَ بِالسُّرُوْرِ فِـىْ هٰذِهِ الْاَيَّامِ وَيَبْتَذِلُوْنَ عَلَى النَّاسِ بِمَا كَانَ عِنْدَهُمْ مِنَ الْمَضْرُوْبِ وَالْاَجْنَاسِ وَيَهْتَمُّوْنَ اِهْتِمَامًا بَلِيْغًا عَلَى السَّمَاعِ وَالْقِرَاءَةِ لِمَوْلِدِ النَّبِـىِّ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ وَيَنَالُوْنَ بِذٰلِكَ اَجْرًا جَزِيْلًا وَفَوْزًا عَظِيْمًا وَمِـمَّا جُرِّبَ عَنْ ذٰلِكَ اِنَّهٗ وُجِدَ فِـىْ ذٰلِكَ الْعَامِ كَثْرَةُ الْـخَيْـرِ وَالْبَـرَكَةِ مَعَ السَّلَامَةِ وَالْعَافِيَةِ وَسَعَةُ الرِّزْقِ وَاِزْدِيَادُ الْمَالِ وَالْاَوْلَادِ وَالْاَحْفَادِ وَدَوَامُ الْاَمْنِ فِـى الْبِلَادِ وَالْاَمْصَارِ وَالسُّكُوْنُ وَالْقَرَارُ فِـى الْبُيُوْتِ وَالدَّارِ بِبَـرَكَةِ مَوْلِدِ النَّبِـىِّ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ

অর্থ: “মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র মক্কা শরীফ এবং মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র মদীনা শরীফ উনাদের অধিবাসীগণ এবং মিশর, ইয়ামেন, সিরিয়া ও পূর্ব-পশ্চিমের আরব দেশগুলোতে লোকজন সব সময় মাওলিদুন্নবী ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম অর্থাৎ মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র সাইয়্যিদু সাইয়্যিদিল আ’ইয়াদ শরীফ উনার মাহফিল মুবারক করে আসছেন। উনারা মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র সাইয়্যিদু সাইয়্যিদিশ শুহূরিল আ’যম শরীফ (মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র রবীউল আউওয়াল শরীফ) মাস উনার চাঁদ উদিত হলে খুশি মুবারক প্রকাশ করেন, ঈদ পালন করেন। উনারা খুশি মুবারক প্রকাশ করে (১) গোসল করেন, (২) উত্তম পোষাক পরিধান করেন, (৩) বিভিন্ন সাজে সুসজ্জিত হন, (৪) আতর ব্যবহার করেন এবং (৫) চোখে সুরমা লাগান। আর ঐ দিনসমূহে উনারা অত্যন্ত আনন্দচিত্তে (মাওলিদুন্নবী ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম অর্থাৎ মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র সাইয়্যিদু সাইয়্যিদিল আ’ইয়াদ শরীফ মাহফিল মুবারক-এ) উপস্থিত হন। উনারা নিজেদের কাছে নির্দিষ্ট (টাকা-পয়সা) এবং বিভিন্ন প্রকার যা কিছু থাকত, তা গরীব-মিসকীনদের মধ্যে বিলিয়ে দেন। আর উনারা সম্মানিত সামা’ শরীফ এবং মাওলিদুন্নবী ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম অর্থাৎ মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র সাইয়্যিদু সাইয়্যিদিল আ’ইয়াদ শরীফ উনার আলোচনার জন্য অত্যন্ত গুরুত্ব দেন। এই মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র আমল মুবারক উনার কারণে উনারা অনেক নেকী এবং বিরাট সফলতা লাভ করেন। সুবহানাল্লাহ! আর এটা পরিক্ষিত বিষয় যে, (যেই বছর মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র সাইয়্যিদু সাইয়্যিদিল আ’ইয়াদ শরীফ উনার মাহফিল মুবারক করা হয়,) মাওলিদুন্নবী ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম অর্থাৎ মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র সাইয়্যিদু সাইয়্যিদিল আ’ইয়াদ শরীফ উনার বরকত মুবারক-এ সেই বছর প্রচুর পরিমাণে খায়ের-বরকত, শান্তি-নিরাপত্তা, সুস্থতা ও রিযিক্বের প্রাচুর্যতা লাভ হয় এবং ধন-সম্পদ, সন্তান-সন্ততি ও নাতি-নাতনীর প্রবৃদ্ধি অর্জিত হয়। আর দেশে দেশে ও শহরে শহরে দায়িমী (স্থায়ী) নিরাপত্তা ও শান্তি এবং বাড়ি-ঘরে স্থিরতা ও প্রশান্তি বিরাজমান থাকে।” সুবহানাল্লাহ! (বায়ানুল মীলাদিন নাবাওঈ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম, আদ্ র্দুরুল মুনায্যাম ১০০-১০১ নং পৃ.)

সাইয়্যিদু সাইয়্যিদিল আ’ইয়াদ শরীফ উনার সম্মানার্থে বিশেষ মেহমানদারী মুবারক এবং নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার সরাসরি মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র মাহফিল মুবারক তদারকী করা:

আহলু বাইতি রসূলিল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম, ক্বায়িম মাক্বামে হাবীবুল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম, রহমাতুল্লিল আলামীন মামদূহ মুর্শিদ ক্বিবলা সাইয়্যিদুনা হযরত সুলত্বানুন নাছীর আলাইহিস সালাম তিনি ১৪৪৩ হিজরী শরীফ উনার মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র ৬ই ছফর শরীফ লাইলাতুছ ছুলাছা শরীফ (মঙ্গলবার রাতে) মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র ‘ফালইয়াফরহূ শরীফ’ সাইয়্যিদু সাইয়্যিদিল আ’ইয়াদ শরীফ মাহফিল মুবারক-এ ইরশাদ মুবারক করেন, “গতকাল (মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র ৫ই ছফর শরীফ লাইলাতু সাইয়্যিদি সাইয়্যিদিল আইয়্যাম শরীফ অর্থাৎ লাইলাতুল ইছনাইনিল আযীম শরীফ বা সোমবার রাতে) একখানা ঘটনা মুবারক ঘটেছেন। ঘটনা মুবারকখানা হলেন- ৫ই ছফর শরীফ মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র উম্মুল মু’মিনীন সাইয়্যিদাতুনা হযরত আছ ছানিয়াহ্ আলাইহাস সালাম উনার মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র বরকতময় বিলাদতী শান মুবারক প্রকাশ দিবস। এখন আগে কি হয়েছে জানি না; তবে মনে হলো যেনো উনি আমাকে উনার অনুষ্ঠানে সবসময় দাওয়াত দেন। (সুবহানা মামদূহ মুর্শিদ ক্বিবলা আলাইহিস সালাম!) কালকে তিনি আমাকে দাওয়াত মুবারক দিয়েছেন। আমি উনার ওখানে গেলাম। উনি আমাকে ‘হাইস্’ (খেজুর, মাখন/ঘি ও পনির দ্বারা তৈরী এক প্রকার খাবার) খাওয়ালেন আর একটা ঝাল ঝাল কি যেন খাওয়ালেন। মনে হলো, উনি যেনো সবসময় আমাকে দাওয়াত দেন। খাওয়া-দাওয়া শেষ হওয়ার পর উনি আমাকে বললেন যে, ‘আমাদের আলোচনা মুবারক যখন করা হয়, তখন আমাদের আলোচনা মুবারক এবং আমাদের সাথে মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র হযরত আহলু বাইত শরীফ আলাইহিমুস সালাম উনাদের আলোচনা মুবারকও যেন করা হয়। অন্য আলোচনা যেন না করা হয়।’ দুই জনের অর্থাৎ প্রথম আর শেষে যেই দুইজন আলোচনা করেছে, তাদেরটা ঠিকই ছিলো। আর মাঝখানে যে আলোচনা করেছে, সে কিছু আনুষাঙ্গিক আলোচনা করেছে। সে প্রসঙ্গে মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র উম্মুল মু’মিনীন সাইয়্যিদাতুনা হযরত আছ ছানিয়াহ্ আলাইহাস সালাম উনি বলেছেন যে, ‘আমাদের আলোচনা করার মধ্যে অন্য আলোচনা যেন না আসে।’ এটা উনি আমাকে বললেন। আমি শুনলাম। ঠিক আছে। বুঝতে পারলে? মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র উম্মুল মু’মিনীন সাইয়্যিদাতুনা হযরত আছ ছানিয়াহ্ আলাইহাস সালাম উনার বিলাদত শরীফ উপলক্ষে দাওয়াত মুবারক দিয়েছেন। (সুবহানা মামদূহ মুর্শিদ ক্বিবলা আলাইহিস সালাম!)

আরজী: কোথায় দাওয়াত দেয়া হয়েছে? 

জওয়াব মুবারক: উনার বাড়িতে। মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র মদীনা শরীফ উনার বাড়িতে, যেখানে মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র হুজরা শরীফ। যেখানে উনারা থাকতেন, উনার মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র হুজরা শরীফ-এ।

আরজী: আর কেউ ছিলেন? 

জওয়াব মুবারক: আর কেউ ছিলেন না। উনাকেই আমি দেখেছি, আর কাউকে দেখিনি। মনে হলো যেন উনি সবসময়ই উনার অনুষ্ঠান মুবারক-এ আমাকে সম্মানিত দাওয়াত মুবারক দেন। এই বারও দাওয়াত মুবারক দিয়েছেন। (সুবহানা মামদূহ মুর্শিদ ক্বিবলা আলাইহিস সালাম!)

আরজী: তাহলে উনারা খুব ভালোভাবেই বিষয়গুলি খেয়াল করেন।

জওয়াব মুবারক: নিশ্চয়ই। তা না হলে উনি এটা বললেন কেন্? 

আরজী: সবই শুনেন।

জওয়াব মুবারক: না শুনার তো কিছু নেই। হাযির-নাযির হলে তো শুনা যায়ই। হাযির-নাযিরের ব্যাপার আছে, আবার অনেকগুলি বিষয় আছে মহান আল্লাহ পাক উনি কুদরতীভাবে শুনিয়ে দেন। অনেক রকম আছে। (সুবহানা মামদূহ মুর্শিদ ক্বিবলা আলাইহিস সালাম!) 

আরজী: রাতে, না দিনে? 

জওয়াব মুবারক: রাতে।

আরজী: ছোহবত মুবারক উনার পরে?

জওয়াব মুবারক: না, না, না। প্রথম জনের আলোচনা শেষ হয়ে, ২য় জন যখন আলোচনা শুরু করলো, তার একটু পরে। অর্থাৎ সোয়া ৮টা থেকে সাড়ে ৮টার মধ্যে।

আরজী: ৮-১০ বছর আগে। প্রতিযোগীতা শরীফ মাহফিল শেষ হওয়ার পর যখন ওয়াজ শরীফ মাহফিল শুরু হলেন, সেই ওয়াজ শরীফ মাহফিল উনার ১ম দিন। মামদূহ হযরত মুর্শিদ ক্বিবলা আলাইহিস সালাম বলেছিলেন যে, ‘আজকে আমি মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র মসজিদ মুবারক-এ তাশরীফ মুবারক নিয়ে যখন মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র মিম্বার শরীফ-এ বসলাম, তখন দেখলাম- স্বয়ং নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনি ঘুরে ঘুরে দেখতেছেন, কে কে মাহফিল মুবারক-এ উপস্থিত হয়েছেন।’ (সুবহানা মামদূহ মুর্শিদ ক্বিবলা আলাইহিস সালাম!)

জওয়াব মুবারক: দেখেনই তো। এটা অস্বাভাবিক কিছুই না, স্বাভাবিক। সবসময়ই দেখেন। উনি তো সব জায়গায় হাযির-নাযির। (সুবহানা মামদূহ মুর্শিদ ক্বিবলা আলাইহিস সালাম!) এটা তো স্বাভাবিক। 

মুহাব্বতটা কি এভাবেই পাওয়া যায়? উনারা কি এমনে দাওয়াত দেন? মোফতে দাওয়াত দেন? মোফতে না। হ্যাঁ; তবে সব কথা বলা যাবে না। যতটুকু বলা যায়, এতোটুকু বলি শুধু। কোথায় আসমান! কোথায় যমীন! উনি তো আসমানে; বরং আরো উপরে। উনি দাওয়াত দিয়ে নিয়ে যাবেন কেন? উনার কি কোনো প্রয়োজন পড়েছে দাওয়াত দেয়ার? না; বরং মুহব্বত-নিছবত মুবারক উনার কারণে দাওয়াত দেন।” (সুবহানা মামদূহ মুর্শিদ ক্বিবলা আলাইহিস সালাম!)

তাহলে মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র সাইয়্যিদু সাইয়্যিদিল আ’ইয়াদ শরীফ পালন করার কতো বেমেছাল ফযীলত মুবারক, সেটা সমস্ত জিন-ইনসান, তামাম কায়িনাতবাসী সকলের চিন্তা ও কল্পনার উর্ধ্বে। (সুবহানা মামদূহ মুর্শিদ ক্বিবলা আলাইহিস সালাম!)

যিনি খালিক্ব মালিক রব মহান আল্লাহ পাক তিনি ছাহিবু সাইয়্যিদি সাইয়্যিদিল আ’ইয়াদ শরীফ, আহলু বাইতি রসূলিল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম, ক্বায়িম মাক্বামে হাবীবুল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম, রহমাতুল্লিল আলামীন মামদূহ মুর্শিদ ক্বিবলা সাইয়্যিদুনা হযরত সুলত্বানুন নাছীর আলাইহিস সালাম উনার সম্মানার্থে আমাদের সবাইকে অনন্তকালব্যাপী জারীকৃত মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র সাইয়্যিদু সাইয়্যিদিল আ’ইয়াদ শরীফ মাহফিল মুবারক-এ মাল-জান, সময় সমস্ত কিছু দিয়ে মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র গোলামী মুবারক উনার আনজাম মুবারক দেয়ার তাওফীক্ব দান করুন। আমীন!


0 Comments: