মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র সাইয়্যিদু সাইয়্যিদিল আ’ইয়াদ শরীফ পালন করার বেমেছাল ফযীলত মুবারক-পর্ব-১০
মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র সাইয়্যিদু সাইয়্যিদিল আ’ইয়াদ শরীফ হচ্ছেন সরাসরি মহান আল্লাহ পাক উনার মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র আমল মুবারক। সুবহানাল্লাহ! স্বয়ং মহান আল্লাহ পাক তিনি নিজেই সৃষ্টির শুরু থেকে অদ্যবধি দায়িমীভাবে মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র সাইয়্যিদু সাইয়্যিদিল আ’ইয়াদ শরীফ পালন করে যাচ্ছেন এবং অনন্তকাল যাবৎ পালন করতেই থাকবেন। সুবহানাল্লাহ! তাই মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র সাইয়্যিদু সাইয়্যিদিল আ’ইয়াদ শরীফ উনার চেয়ে বড় ও ফযীলতপূর্ণ আর কোনো আমল নেই। সুবহানাল্লাহ! বান্দার তরফ থেকে সর্বশেষ মাক্বাম হচ্ছে আবদিয়াতের মাক্বাম আর মহান আল্লাহ পাক উনার তরফ থেকে সর্বোচ্চ, সর্বশ্রেষ্ঠ এবং সর্বশেষ মাক্বাম মুবারক হচ্ছেন মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র সাইয়্যিদু সাইয়্যিদিল আ’ইয়াদ শরীফ উনার মাক্বাম মুবারক। সুবহানাল্লাহ! তাহলে এই মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র সাইয়্যিদু সাইয়্যিদিল আ’ইয়াদ শরীফ পালন করলে বান্দা-বান্দী, উম্মত, জিন-ইনসান কত বড় নিয়ামত লাভ করবে এবং তা পালন করার কত বেমেছাল ফযীলত মুবারক, সেটা সমস্ত জিন-ইনসান, তামাম কায়িনাতবাসী সকলের চিন্তা ও কল্পনার উর্ধ্বে। সুবহানাল্লাহ! মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র সাইয়্যিদু সাইয়্যিদিল আ’ইয়াদ শরীফ পালন করার বেমেছাল ফযীলত মুবারক সম্পর্কে বাস্তবেও অসংখ্য ঘটনা মুবারক বর্ণিত রয়েছেন। নিম্নে দুইখানা ঘটনা মুবারক উল্লেখ করা হলো-
(১) মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র সাইয়্যিদু সাইয়্যিদিল আ’ইয়াদ শরীফ উনার সম্মানার্থে নিশ্চিত মৃত্যু থেকে রক্ষা পাওয়া এবং অসংখ্য লোকের ঈমান গ্রহণ:
فِىْ عَامٍ ১৯৫৩ م وَفِىْ مَدِيْنَةِ صَيْدًا جُنُوْبِ لِبْنَانَ كَالْعَادَةِ فِىْ يَوْمِ مِيْلَادِ الرَّسُوْلِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ يَحْتَفِلُ الْمُسْلِمُوْنَ وَمِنْ شَعَائِرِ الْاِحْتِفَالَاتِ فِىْ لِبْنَانَ اِطْلَاقُ النَّارِ فِى الْهَوَاءِ وَهِىَ عَادَةٌ مُتَعَارَفَةٌ وَقَدِيْمَةٌ فِىْ ذٰلِكَ الْوَقْتِ سَقَطَتْ رُصَاصَةٌ طَائِشَةٌ عَلٰى رَأْسِ فَتَاةٍ نَّصْرَانِيَّةٍ مِنْ عَائِلَةِ غِطَاسٍ وَهِىَ عَائِلَةٌ مَّعْرُوْفَةٌ فِىْ تِلْكَ الْمَدِيْنَةِ سَارَعَ اَهَالِى الْمِنْطَقَةِ بِاَخْذِ الْفَتَاةِ اِلٰى مَشْفَى الدُّكْتُوْرِ غَسَّانَ حَمُّوْدٍ وَلٰكِنَّ الْاَطِبَّاءَ عَجَزُوْا عَنْ شِفَاءِ هٰذِهِ الْفَتَاةِ وَقَالُوْا لِاَهْلِهَا اُنْقُلُوْهَا فَوْرًا اِلٰى مُسْتَشْفَى الْجَامِعَةِ الْاَمْرِيْكِيَّةِ بِبَيْرُوْتَ نَظْرًا لِخُطُوْرَةِ حَالَتِهَا وَعَلَى الْفَوْرِ تَمَّ نَقْلُ الْفَتَاةِ اِلٰى مُسْتَشْفَى الْجَامِعَةِ الْاَمْرِيْكِيَّةِ بِبَيْرُوْتَ وَاجْتَمَعَ اَشْهَرُ اَطِبَّاءِ لِبْنَانَ مَعَ طَاقِمٍ طِبِّىٍّ اَمْرِيْكِىٍّ لِمُعَالَجَةِ الْفَتَاةِ وَلٰكِنَّ الثَّقْبَ فِى الرَّأْسِ كَانَ اَقْوٰى مِنْهُمْ وَالنَّزِيْفُ بَدَاَ بِالتَّزَايَدِ حَتّٰى عَجَزَ الْاَطِبَّاءُ وَاَصَابَتْ خَيْبَةُ الْاَمَلِ الْاُسْرَةَ فَهَرِعَتِ الْاُمُّ بِالنِّدَاءِ وَهِىَ نَصْرَانِيَّةٌ اَيْنَ اَنْتَ يَا سَيِّدَنَا مَوْلَانَا مُحَمَّدُ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ اَيْنَ اَنْتَ يَا مَنْ يُّسَمُّوْكَ رَسُوْلَ الْمُسْلِمِيْنَ تَعَالَ وَشَاهِدْ مَاذَا فَعَلَتْ اُمَّتُكَ بِاِبْنَتِىْ وَهِىَ تَنْهَمِرُ دُمُوْعُهَا دُوْنَ تَوَقُّفٍ وَتَقُوْلُ لَقَدْ قَتَلُوا الْمُسْلِمُوْنَ اِبْنَتِىْ لِيَحْتَفِلُوْا بِوِلَادَتِكَ وَفِىْ نَفْسِ اللَّحْظَةِ كَانَ الْاَطِبَّاءُ دَاخِلَ الْغُرْفَةِ مَعَ الْفَتَاةِ يُرَشِّحُوْنَ اَحَدَ الْاَطِبَّاءِ يَخْرُجُ اِلَى الْاُمِّ وَيَقُوْلُ لَهَا اُدْخُلِىْ وَوَدَّعِىْ اِبْنَتَكَ بِاٰخِرِ نَظْرَةٍ فَاِبْنَتُكِ مُفَارِقَةٌ لِلْحَيَاةِ لَا مَحَالَةَ بَدَاَتِ الرَّعْشَةُ فِىْ جَسَدِ الْاُمِّ اَلْاَقْدَامُ مَا عَادَتْ تَتَحَمَّلُ الْجَسَدَ تَتَقَدَّمُ بِبَطِيْءٍ شَدِيْدٍ فَالْاَمْرُ شَدِيْدٌ عَلَى الْاُمِّ وَاللَّحْظَاتُ الْاَخِيْرَةُ فَتَحَتِ الْاُمُّ بَابَ الْغُرْفَةِ وَكَانَتِ الْمُفَاجَاَةَ اَلْبِنْتُ تَصْرَخُ وَهِىَ جَالِسَةٌ عَلٰى سَرِيْرِهَا فِى الْغُرْفَةِ اَغْلِقِى الْبَابَ يَا اُمِّىْ اَسْرِعِىْ يَا اُمِّىْ لَا تَدْعِيْهِ يَخْرُجُ يَا اُمِّىْ اَسْرِعِىْ اَمْسِكِيْهِ لَا تَدْعِيْهِ يَخْرُجُ اَلْاُمُّ تَقِفُ عَنِ الْكَلَامِ مَصْدُوْمَةً مِّنَ الْمَوْقِفِ فَمَا هٰذَا مَنِ الْمَقْصُوْدُ كَيْفَ صَحَّتِ الْبِنْتُ مِنْ غَيْبُوْبَتِهَا وَنَطَقَتْ اَسْئِلَةٌ كَثِيْرَةٌ دَارَتْ فِىْ مُخَيِّلَةِ الْاُمِّ فِىْ ثَوَانِىْ وَلَحْظَاتٍ قَلِيْلَةٍ قَالَتِ الْاُمُّ يَا بِنْتِىْ مَنْ بُدِىَ اَمْسِكُ عَنْ مَّنْ بِتَحْكِىْ يَا اِبْنَتِىْ وَكَانَ الْجَوَابُ الَّذِىْ صَدَمَ الْاُمَّ وَجَمِيْعَ الْمَوْجُوْدِيْنَ اِنَّهٗ سَيِّدُنَا مَوْلَانَا مُحَمَّدٌ رَّسُوْلُ اللهِﷺ يَا اُمِّىْ دَخَلَ سَيِّدُنَا مَوْلَانَا مُحَمَّدٌ رَّسُوْلُ اللهِﷺ اِلٰى غُرْفَتِىْ وَوَضَعَ يَدَهٗ عَلٰى رَأْسِىْ فَذَهَبَ الْجُرْحُ وَذَهَبَ الدَّمُ وَعِنْدَمَا فَتَحْتِ الْبَابَ خَرَجَ يَا اُمِّىْ فَنَطَقَتِ الْاُمُّ الشَّهَادَةَ وَنَطَقَهَا جَمِيْعُ الْمَوْجُوْدِيْنَ فِىْ لَحْظَتِهَا وَاَسْلَمَتْ عَائِلَةُ غِطَاسٍ فِىْ صَيْدًا بِاَجْمَعِهَا وَاَسْلَمَ طَاقِمٌ كَامِلٌ مِّنَ الْاَطِبَّاءِ الْاَمْرِيْكَانِ وَمُعْظَمُ اَهْلِ لِبْنَانَ يَعْلَمُوْنَ بِـهٰذِهِ الْحَادِثَةِ
অর্থ: “১৯৫৩ সালে দক্ষিণ লেবাননের সিডন শহরে সম্মানিত মুসলমান উনারা (প্রতি বছরের ন্যায় উনাদের) আদত বা অভ্যাস অনুযায়ী ঈদে বিলাদতে রসূলিল্লাহি ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম অর্থাৎ মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র সাইয়্যিদু সাইয়্যিদিল আ’ইয়াদ শরীফ উপলক্ষে সম্মানিত মাহফিল মুবারক করছিলেন। এই সম্মানিত মাহফিল মুবারক উপলক্ষে লেবাননের ঐতিহ্য ছিলো- উপরের দিকে গোলাবর্ষণ করা। আর (মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র সাইয়্যিদু সাইয়্যিদিল আ’ইয়াদ শরীফ উপলক্ষে খুশি মুবারক প্রকাশ করে উপরের দিকে গোলাবর্ষণ করা) এটা ছিলো ঐ সময়ের সুপ্রসিদ্ধ ঐতিহ্য। (হঠাৎ) উদ্দেশ্যহীন একটি গুলি খ্রীষ্টধর্মে দীক্ষিত পরিবারের একজন খ্রীষ্টান মেয়ের মাথায় পড়ে। আর ঐ পরিবারটা ছিলো সেই শহরের মধ্যে সুপরিচিত। তখন এলাকাবাসী মেয়েটিকে দ্রুত ‘ডাক্তার গাস্সান হাম্মূদ হাসপাতালে’ নিয়ে যায়। কিন্তু ডাক্তাররা মেয়েটির অবস্থার ভয়াবহতা দেখে চিকিৎসার ব্যাপারে অপারগ হয়ে তার পরিবারকে বললো- ‘তোমরা অবিলম্বে তাকে বৈরুতের আমেরিকান ইউনিভার্সিটি হাসপাতালে স্থানান্তরিত করো।’ তাৎক্ষণিকভাবে মেয়েটিকে বৈরুতের আমেরিকান ইউনিভার্সিটি হাসপাতালে স্থানান্তর করা হলো। মেয়েটির চিকিৎসার জন্য আমেরিকান চিকিৎসা সংক্রান্ত স্টাফের সাথে লেবাননের প্রসিদ্ধ চিকিৎসকরা একত্রিত হলো। কিন্তু মাথার জখম ছিলো তাদের ধারণার থেকেও অধিকতর গুরুতর। (মাথায় গুলি লাগার কারণে, মেয়েটির মাথার মগজ এলোমেলো হয়ে গেছে। ফলে) রক্তক্ষরণ শুরু হওয়ার পর থেকেই রক্তক্ষরণ ক্রমশ বৃদ্ধি পেতে থাকে। (কোনো ক্রমেই তা কমানো সম্ভব হচ্ছিলো না।) শেষ পর্যন্ত সমস্ত চিকৎসকরা অপারগ হয়ে যায়। (তারা বলে যে, মেয়েটি নিশ্চিত মারা যাবে। কারণ তার মাথার জখম কখনও সাড়ানো সম্ভব নয় এবং তার রক্তক্ষরণও বন্ধ করা সম্ভব নয়।) পরিবার-পরিজন, আত্মীয়-স্বজনরাও হতাশাগ্রস্ত হয়ে যায়। মেয়েটির মা ছিলো খ্রীষ্টান, নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনাকে সম্বোধন মুবারক করে সে কেঁদে কেঁদে বলছিলো- ‘আপনি কোথায়? আপনাকে সম্মানিত মুসলমান উনাদের মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র রসূল ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম হিসেবে অভিহিত করা হয়- আপনি কোথায়? (দয়া করে) আসুন এবং প্রত্যক্ষ করুন, দেখুন- আপনার সম্মানিত উম্মত উনারা আমার মেয়ের সাথে কি আচরণ করেছেন।’ আর তার অবস্থা এরূপ ছিলো যে, তার দুচোখ বেয়ে অবিরতধারায় অশ্রু গড়িয়ে পড়ছিলো এবং সে বলছিলো- ‘আপনার মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র বরকতময় বিলাদতী শান মুবারক উনার সম্মানার্থে সম্মানিত মাহফিল মুবারক করার জন্য অর্থাৎ মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র সাইয়্যিদু সাইয়্যিদিল আ’ইয়াদ শরীফ উনার সম্মানার্থে সম্মানিত মাহফিল মুবারক করার জন্য সম্মানিত মুসলমান উনারা আমার মেয়েকে হত্যা করেছেন।’ (না‘ঊযুবিল্লাহ!) একই মুহূর্তে চিকিৎসকরা কক্ষের ভিতরে মেয়েটির চিকিৎসা করছিলো। তাদের সকলের পরামর্শক্রমে একজন চিকিৎসক বাইরে গিয়ে মেয়েটির মাকে বললো- ‘তুমি প্রবেশ করে তোমার মেয়েকে শেষ দেখা দেখে বিদায় জানাও। কোনো উপায় নেই; তোমার মেয়ে মৃত্যুর দ্বার প্রান্তে।’ (এটা শুনে) মায়ের শরীরে কাঁপুনি শুরু হলো। তার পা শরীরের ভার বহন করে (মেয়ের কাছে) ফিরে যেতে সক্ষম হচ্ছিলো না। সে অত্যন্ত ধীর গতিতে সামনে এগিয়ে যাচ্ছিলো। একজন মায়ের জন্য মেয়ের শেষ মুহূর্তের অবস্থা অত্যন্ত কঠিন। (মেয়েটির) মা কক্ষের দরজা খুলে বিস্মিত হলো (এ জন্য যে,) মেয়েটি কক্ষে তার খাটের উপর বসে চিৎকার করে বলছে- ‘মা! দরজা বন্ধ করুন। মা! দ্রুত আসুন। তিনি চলে যাচ্ছেন, উনাকে যেতে দিয়েন না। মা! তাড়াতাড়ি করুন। উনাকে ধরে রাখুন। তিনি চলে যাচ্ছেন, উনাকে যেতে দিয়েন না।’ পরিস্থিতি দেখে হতবাক হয়ে মা কথা বলা বন্ধ করে দিলো। (আর মনে মনে বলতে লাগলো-) এটা কি? কাকে উদ্দেশ্য করা হচ্ছে? মৃত্যুশয্যা থেকে সে কিভাবে সুস্থ হলো? আর সে কথাও বলছে? কয়েক সেকেন্ডের মধ্যে, সামান্য মুহূর্তের মধ্যে মায়ের মনে অনেক প্রশ্ন ঘুরপাক খাচ্ছিলো। মা বললো- ‘আমার মেয়ে! কে সম্মানিত তাশরীফ মুবারক নিয়েছেন? আমি কাকে ধরে রাখবো? হে আমার মেয়ে! তুমি কার কথা বলছো?’ মেয়েটির জবাব এমন ছিলো, যা তার মা এবং উপস্থিত সবাইকে প্রভাবিত করে। (মেয়েটি বললো-)
اَنَّهٗ سَيِّدُنَا مَوْلَانَا مُحَمَّدٌ رَّسُوْلُ اللهِﷺ يَا اُمِّىْ دَخَلَ سَيِّدُنَا مَوْلَانَا مُحَمَّدٌ رَّسُوْلُ اللهِﷺ اِلٰى غُرْفَتِىْ وَوَضَعَ يَدَهٗ عَلٰى رَأْسِىْ فَذَهَبَ الْجَرْحُ وَذَهَبَ الدَّمُ وَعِنْدَمَا فَتَحْتِى الْبَابَ خَرَجَ يَا اُمِّىْ
‘মা! নিশ্চয়ই তিনি হচ্ছেন নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম। নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি আমার কক্ষে মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র তাশরীফ মুবারক নিয়ে আমার মাথায় উনার মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র নূরুল মাগফিরাত মুবারক (মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র হাত মুবারক) রাখলেন বা বুলিয়ে দিলেন, তৎক্ষণাৎ (আমার) ক্ষত সেরে গেলো এবং রক্ত বন্ধ হয়ে গেলো। মা! যখনই আপনি দরজা খুললেন, তখনই তিনি অদৃশ্য হয়ে গেলেন।’ (তখন মেয়েটির মা ও ডাক্তারসহ সকলে মিলে দেখলো যে, মেয়েটির মাথায় ক্ষতের কোনো চিহ্নই নেই এবং রক্তক্ষরণেরও কোনো চিহ্ন নেই। সুবহানাল্লাহ!) সাথে সাথেই মেয়েটির মা এবং ঐ সময় সেখানে যারা উপস্থিত ছিলেন সকলেই মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র কালিমা শরীফ পাঠ করে মুসলমান হয়ে যান। আর সিডন শহরের খ্রীষ্টধর্মে দীক্ষিত সমস্ত পরিবার এবং আমেরিকান ইউনিভার্সিটি হাসপাতালের ডাক্তারদের সমস্ত স্টাফ সকলেই মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র দ্বীন ইসলাম গ্রহণ করে মুসলমান হয়ে যান। সুবহানাল্লাহ!
লেবাননের অধিকাংশ মানুষ এই ওয়াক্বেয়া সম্পর্কে অবগত রয়েছেন।” সুবহানাল্লাহ!
ছাহিবু সাইয়্যিদি সাইয়্যিদিল আ’ইয়াদ শরীফ, আহলু বাইতি রসূলিল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম, ক্বায়িম মাক্বামে হাবীবুল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম, রহমাতুল্লিল আলামীন মামদূহ মুর্শিদ ক্বিবলা সাইয়্যিদুনা হযরত সুলত্বানুন নাছীর আলাইহিস সালাম তিনি ইরশাদ মুবারক করেন,
فَاللهُ خَيْرٌ حٰفِظًا وَّهُوَ اَرْحَمُ الرّٰحِمِيْنَ
‘মহান আল্লাহ পাক তিনি সর্বোত্তম হিফাযতকারী এবং তিনি হচ্ছেন ‘আরহামুর রহিমীন’ অর্থাৎ সবচেয়ে বড় দয়ালু।’ (সম্মানিত ও পবিত্র সূরা ইঊসুফ শরীফ : সম্মানিত ও পবিত্র আয়াত শরীফ ৬৪)
এই সম্মানিত ও পবিত্র আয়াত শরীফ উনার তাফসীর মুবারক হচ্ছেন,
فَرَسُوْلُ اللهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ خَيْرٌ حٰفِظًا وَّهُوَ رَحْمَةٌ لِّلْعٰلَمِيْنَ
‘মহান আল্লাহ পাক উনার মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র রসূল, উনার মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র হাবীব মাহবূব, নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি সর্বোত্তম হিফাযতকারী এবং তিনি হচ্ছেন ‘রহমাতুল্লিল আলামীন’ অর্থাৎ সমস্ত আলমের জন্য রহমত মুবারক স্বরূপ।’ সুবহানাল্লাহি ওয়া রসূলিহী ওয়া আহলি বাইতিহী ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম!
এই ঘটনাসহ মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র সাইয়্যিদু সাইয়্যিদিল আ’ইয়াদ শরীফ সংশ্লিষ্ট অন্যান্য ঘটনা মুবারকগুলো থেকে সেই বিষয়টিই স্পষ্ট হয়ে যায়।” (সুবহানা মামদূহ মুর্শিদ ক্বিবলা আলাইহিস সালাম!)
তাহলে মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র সাইয়্যিদু সাইয়্যিদিল আ’ইয়াদ শরীফ পালন করা সমস্ত সৃষ্টির জন্য কতো সীমাহীন বেমেছাল রহমত-বরকত, সাকীনাহ্, নেয়ামত, মাগফিরাত, নাজাত ও গাইবী মদদ মুবারক লাভের কারণ, সেটা সমস্ত জিন-ইনসান, তামাম কায়িনাতবাসী সকলের চিন্তা ও কল্পনার উর্ধ্বে। সুবহানাল্লাহ!
(২) মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র সাইয়্যিদু সাইয়্যিদিল আ’ইয়াদ শরীফ উনার সম্মানার্থে মহান আল্লাহ পাক উনার এবং নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার অর্থাৎ উনাদের তরফ থেকে মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র বিশেষ মাক্বাম মুবারক হাদিয়া
ছাহিবু সাইয়্যিদি সাইয়্যিদিল আ’ইয়াদ শরীফ, আহলু বাইতি রসূলিল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম, ক্বায়িম মাক্বামে হাবীবুল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম, রহমাতুল্লিল আলামীন মামদূহ মুর্শিদ ক্বিবলা সাইয়্যিদুনা হযরত সুলত্বানুন নাছীর আলাইহিস সালাম তিনি ১৪৪৩ হিজরী শরীফ উনার মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র ২রা রজবুল হারাম শরীফ লাইলাতুল জুমু‘আহ্ শরীফ চতুর্থ তলা মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র খানকাহ্ শরীফ উনার মধ্যে মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র সাইয়্যিদু সাইয়্যিদিল আ’ইয়াদ শরীফ মাহফিল মুবারক-এ ইরশাদ মুবারক করেন, “গত রাত্রে অর্থাৎ মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র ১লা রজবুল হারাম শরীফ লাইলাতুল খমীস শরীফ (বৃহস্পতিবার রাত) উনার ঘটনা। আমি রাত ৩টা সোয়া ৩টার দিকে মোরাকাবা অবস্থায় ছিলাম। হঠাৎ আমি দেখতেছি- সারা দুনিয়ায় অনেক হৈ চৈ এবং সবাই অস্থির। আমার আত্মীয় স্বজন আছেন, অন্যান্য সারা দুনিয়ায় পৃথিবীর দূর-দূরান্তে, দেশ-বিদেশে, অনেক লোক। হৈ চৈ। কি ব্যাপার? উনারা সবাই এসেছেন যে, আমাদেরকে কিছু দেন। আমি বললাম, ‘আমি কি দিবো?’ উনারা বললেন, কেন? আপনাকে তো যিনি খ¦ালিক যিনি মালিক যিনি রব মহান আল্লাহ পাক উনি এবং যিনি নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনি অর্থাৎ উনারা ‘রহমাতুল্লিল আলামীন’ মাক্বাম মুবারক উনার পূর্ণ হিস্সা হাদিয়া মুবারক করেছেন। সেখান থেকে রহমত মুবারক দেন। সুবহানাল্লাহি ওয়া রসূলিহী ওয়া আহলি বাইতিহী ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম! (সুবহানা মামদূহ মুর্শিদ ক্বিবলা আলাইহিস সালাম!) আমি বললাম কোথায়? সবাই বললেন, আপনি উপরের দিকে দৃষ্টি করেন। আমি উপরের দিকে দৃষ্টি করলাম। দেখলাম, সেখান থেকে অঝোর ধারায় সম্মানিত রহমত মুবারক বর্ষিত হচ্ছেন। নূরের মতো। সকলে বললেন, আমাদেরকে দেন? আমি বললাম, ঠিক আছে; আপনারা এখান থেকে নেন। আমি সেখান থেকে সবাইকে দিতে থাকলাম।
অনেক দেওয়ার পর যিনি খ¦ালিক যিনি মালিক যিনি রব মহান আল্লাহ পাক উনার এবং যিনি নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার অর্থাৎ উনাদের তরফ থেকে বলা হলো- এভাবে কিভাবে হবে? এটা একটা স্থায়ী ব্যবস্থা করতে হবে। সেটা কি? উনারা উনাদের তরফ থেকে একখানা সম্মানিত লিবাস মুবারক আমাকে হাদিয়া মুবারক করলেন। আর বললেন, এটা আপনি পরিধান করে আপনি হাক্বীক্বী ক্বায়িম মাক্বাম হন। সুবহানাল্লাহি ওয়া রসূলিহী ওয়া আহলি বাইতিহী ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম! (সুবহানা মামদূহ মুর্শিদ ক্বিবলা আলাইহিস সালাম!) এটা উনারা দিলেন। এটা হচ্ছে- ইযারের মতো অর্থাৎ লুঙ্গির মতো আবার লুঙ্গি না। শরীরে পরে বেধে রাখা যায়। সাদা রংয়ের। সেটা সাদা রং, তার মধ্যে তুলা দিয়ে ফুলানো, ফোমের মতো। সুন্দর একটা কাপড়। পরলাম। উনারা বললেন, এখন থেকে নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার মাধ্যম দিয়ে যে সম্মানিত রহমত মুবারক বান্দা-বান্দী, জিন-ইনসান লাভ করতো, সেটা আপনার থেকে লাভ করবে। সুবহানাল্লাহি ওয়া রসূলিহী ওয়া আহলি বাইতিহী ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম! (সুবহানা মামদূহ মুর্শিদ ক্বিবলা আলাইহিস সালাম!) আরো যতো লোক আসলো সারা দুনিয়াব্যাপী জিন-ইনসান যারা যা আরজী করতে থাকে, তারা সে অনুযায়ী লাভ করতে থাকে। সুবহানাল্লাহি ওয়া রসূলিহী ওয়া আহলি বাইতিহী ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম! (সুবহানা মামদূহ মুর্শিদ ক্বিবলা আলাইহিস সালাম!)
এটা আমি আগে বলেছিলাম। যে, যাত্রাবাড়ীর পীর ছাহেব আলাইহিস সালাম তিনি যে এসে আমার মধ্যে ফানা হয়ে বাক্বা হয়ে গেলেন, নিজের অস্তিত্ব বিলীন করে দিলেন। এভাবেই নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার মধ্যে ফানা হয়ে বাক্বা হয়ে যেতে হবে। উনার জন্য সব বিলীন করে দিতে হবে। তখন তার জন্য কামিয়াবী হাছিল করা, যতো নিয়ামত রয়েছেন তা হাছিল করা সহজ এবং সম্ভব হবে।” সুবহানাল্লাহি ওয়া রসূলিহী ওয়া আহলি বাইতিহী ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম! (সুবহানা মামদূহ মুর্শিদ ক্বিবলা আলাইহিস সালাম!)
ছাহিবু সাইয়্যিদি সাইয়্যিদিল আ’ইয়াদ শরীফ, আহলু বাইতি রসূলিল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম, ক্বায়িম মাক্বামে হাবীবুল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম, রহমাতুল্লিল আলামীন মামদূহ মুর্শিদ ক্বিবলা সাইয়্যিদুনা হযরত সুলত্বানুন নাছীর আলাইহিস সালাম তিনি ১৪৪৩ হিজরী শরীফ উনার মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র ৬ই রজবুল হারাম শরীফ লাইলাতুছ ছুলাছা শরীফ (মঙ্গলবার রাতে) এবং মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র ১১ই রজবুল হারাম শরীফ লাইলাতুল আহাদ শরীফ (রোববার রাতে) ৪র্থ তলা মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র খানকাহ্ শরীফ উনার মধ্যে ইরশাদ মুবারক করেন, “এই ‘সাইয়্যিদু সাইয়্যিদিল আ’ইয়াদ শরীফ’ উনার সম্মানার্থেই মহান আল্লাহ পাক উনি এবং উনার মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র হাবীব মাহবূব, নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনি অর্থাৎ উনারা আমাকে ‘রহমাতুল্লিল আলামীন’ এই সম্মানিত মাক্বাম মুবারকখানা হাদিয়া মুবারক করেছেন। (সুবহানা মামদূহ মুর্শিদ ক্বিবলা আলাইহিস সালাম!) দেখলাম যে, সবাই এসে আমাকে বলতেছে, আমাদেরকে কিছু সম্মানিত রহমত মুবারক দেন। আমি বললাম কোথা থেকে? সবাই বললেন, আপনি উপরের দিকে দৃষ্টি করেন। আমি উপরের দিক দৃষ্টি মুবারক দিয়ে দেখলাম, সেখান থেকে অঝোর ধারায় সম্মানিত রহমত মুবারক বর্ষিত হচ্ছেন। সকলে বললো, আমাদেরকে দেন? আমি সেখান থেকে সবাইকে দিতে থাকলাম। যিনি খ¦ালিক যিনি মালিক যিনি রব মহান আল্লাহ পাক উনার এবং যিনি নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার অর্থাৎ উনাদের তরফ থেকে বলা হলো- এভাবে কিভাবে হবে? এটা একটা স্থায়ী ব্যবস্থা করতে হবে। তারপর উনারা উনাদের তরফ থেকে একখানা সম্মানিত লিবাস মুবারক আমাকে হাদিয়া মুবারক করলেন এবং আমাকে তা পরিয়ে দিলেন। (সুবহানা মামদূহ মুর্শিদ ক্বিবলা আলাইহিস সালাম!) অর্থাৎ ‘রহমাতুল্লিল আলামীন’ মাক্বাম মুবারকখানা হাদিয়া মুবারক করে দেয়া হয়ে গেলো। লেবাস মুবারকখানা শরীরে পরে বেঁধে রাখা যায়। সাদা রংয়ের এবং তার মধ্যে তুলা দিয়ে ফুলানো, ফোমের মতো। অনেক সুন্দর। উনারা বললেন, এই লিবাস মুবারক পরলে এখান থেকে কুদরতীভাবে সম্মানিত রহমত মুবারক বের হতে থাকবেন। দেখলাম যে, কুদরতীভাবে সম্মানিত রহমত মুবারক বের হচ্ছেন আর সমস্ত কায়িনাতের মাঝে ছড়িয়ে পড়ছেন এবং সবাই সম্মানিত রহমত মুবারক গ্রহণ করছে।” (সুবহানা মামদূহ মুর্শিদ ক্বিবলা আলাইহিস সালাম!)
তাহলে মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র সাইয়্যিদু সাইয়্যিদিল আ’ইয়াদ শরীফ পালন করার কতো বেমেছাল ফযীলত মুবারক, সেটা সমস্ত জিন-ইনসান, তামাম কায়িনাতবাসী সকলের চিন্তা ও কল্পনার উর্ধ্বে। সুবহানাল্লাহ!
যিনি খালিক্ব মালিক রব মহান আল্লাহ পাক তিনি ছাহিবু সাইয়্যিদি সাইয়্যিদিল আ’ইয়াদ শরীফ, আহলু বাইতি রসূলিল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম, ক্বায়িম মাক্বামে হাবীবুল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম, রহমাতুল্লিল আলামীন মামদূহ মুর্শিদ ক্বিবলা সাইয়্যিদুনা হযরত সুলত্বানুন নাছীর আলাইহিস সালাম উনার সম্মানার্থে আমাদের সবাইকে অনন্তকালব্যাপী জারীকৃত মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র সাইয়্যিদু সাইয়্যিদিল আ’ইয়াদ শরীফ মাহফিল মুবারক-এ মাল-জান সমস্ত কিছু দিয়ে মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র গোলামী মুবারক উনার আনজাম মুবারক দেয়ার তাওফীক্ব দান করুন। আমীন!
0 Comments:
Post a Comment