মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র সাইয়্যিদু সাইয়্যিদিল আ’ইয়াদ শরীফ পালন করার বেমেছাল ফযীলত মুবারক-পর্ব-৪

মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র সাইয়্যিদু সাইয়্যিদিল আ’ইয়াদ শরীফ পালন করার বেমেছাল ফযীলত মুবারক-পর্ব-৪

মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র সাইয়্যিদু সাইয়্যিদিল আ’ইয়াদ শরীফ হচ্ছেন সরাসরি মহান আল্লাহ পাক উনার মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র আমল মুবারক। সুবহানাল্লাহ! স্বয়ং মহান আল্লাহ পাক তিনি নিজেই সৃষ্টির শুরু থেকে অদ্যবধি দায়িমীভাবে মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র সাইয়্যিদু সাইয়্যিদিল আ’ইয়াদ শরীফ পালন করে যাচ্ছেন এবং অনন্তকাল যাবৎ পালন করতেই থাকবেন। সুবহানাল্লাহ! তাই মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র সাইয়্যিদু সাইয়্যিদিল আ’ইয়াদ শরীফ উনার চেয়ে বড় ও ফযীলতপূর্ণ আর কোনো আমল নেই। সুবহানাল্লাহ! বান্দার তরফ থেকে সর্বশেষ মাক্বাম হচ্ছে আবদিয়াতের মাক্বাম আর মহান আল্লাহ পাক উনার তরফ থেকে সর্বোচ্চ, সর্বশ্রেষ্ঠ এবং সর্বশেষ মাক্বাম মুবারক হচ্ছেন মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র সাইয়্যিদু সাইয়্যিদিল আ’ইয়াদ শরীফ উনার মাক্বাম মুবারক। সুবহানাল্লাহ! তাহলে এই মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র সাইয়্যিদু সাইয়্যিদিল আ’ইয়াদ শরীফ পালন করলে বান্দা-বান্দী, উম্মত, জিন-ইনসান কত বড় নেয়ামত লাভ করবে এবং তা পালন করার কত বেমেছাল ফযীলত মুবারক, সেটা সমস্ত জিন-ইনসান, তামাম কায়িনাতবাসী সকলের চিন্তা ও কল্পনার উর্ধ্বে। সুবহানাল্লাহ! মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র সাইয়্যিদু সাইয়্যিদিল আ’ইয়াদ শরীফ পালন করার বেমেছাল ফযীলত মুবারক সম্পর্কে বাস্তবে অসংখ্য ঘটনা মুবারক বর্ণিত রয়েছেন। নিম্নে কয়েকখানা ঘটনা মুবারক উল্লেখ করা হলো-

মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র সাইয়্যিদু সাইয়্যিদিল আ’ইয়াদ শরীফ মাহফিল মুবারক-এ অংশগ্রহণকারী, এ উপলক্ষে খুশি প্রকাশকারী, মাল-সম্পদ ব্যয়কারী এবং নেক আমলকারী উনাদের সকলের প্রতি নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার বিশেষ সুসংবাদ মুবারক:

১. কিতাবে বর্ণিত রয়েছেন,

حضرت مير محمد نعمان رحمة الله عليه  وبعضے ياران اينجائى كه در وقائع ان حضرت صلى الله تعا لى عليه وعلى اله وسلم ديده اند كه ازين معركه مولود   بسيار راضى اند

অর্থ: “হযরত মীর মুহম্মদ নু’মান রহমতুল্লাহি আলাইহি তিনি এবং অন্যান্য সাথীগণ নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনাকে স্বপ্নে দেখেছেন যে, নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র মীলাদ শরীফ মাহফিল মুবারক অর্থাৎ মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র সাইয়্যিদু সাইয়্যিদিল আ’ইয়াদ শরীফ মাহফিল মুবারক উনার প্রতি অত্যন্ত সন্তুষ্ট।” সুবহানাল্লাহ! (মকতূবাত শরীফ)

২. হুজ্জাতুদ্দীন হযরত ইমাম আবূ আব্দুল্লাহ মুহম্মদ ইবনে আব্দুল্লাহ ইবনে মুহম্মদ ইবনে যুফার মাক্কী ছিক্বিল্লী রহমতুল্লাহি আলাইহি (বিলাদত শরীফ ৪৯৭ হিজরী শরীফ : বিছাল শরীফ  ৫৬৫ হিজরী শরীফ) তিনি বলেন,

وَ‌سَـمِعْتُ شَيْخَنَا حَضْرَتْ اَبَا عَبْدِ اللهِ بْنِ اَبِـىْ مُـحَمَّدِۣ  النُّعْمَانِ رَحْـمَةُ اللهِ عَلَيْهِ يَقُولُ سَـمِعْتُ الشَّيْخَ حَضْرَتْ اَبَا مُوْسَى الزَّرْهُوْنِـىِّ رَحْـمَةُ اللهِ عَلَيْهِ يَقُوْلُ رَاَيْتُ النَّبِـىَّ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ فِـى النَّوْمِ فَذَكَرْتُ لَهٗ مَا يَقُوْلُهُ الْفُقَهَاءُ فِـىْ عَمَلِ الْوَلَائِمِ فِـى الْمَوْلِدِ فَقَالَ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ مَنْ فَرِحَ بِنَا فَرِحْنَا بِهٖ

অর্থ: “আমি আমাদের শায়েখ হযরত আবূ আব্দুল্লাহ ইবনে আবূ মুহম্মদ নু’মান রহমতুল্লাহি আলাইহি উনার কাছ থেকে শুনেছি, তিনি হযরত শায়েখ আবূ মূসা যারহূনী রহমতুল্লাহি আলাইহি উনার কাছ থেকে শুনেছেন। হযরত ইমাম আবূ মূসা যারহূনী রহমতুল্লাহি আলাইহি তিনি বলেন, আমি একবার নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনাকে স্বপ্নে দেখি। তখন আমি নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র খিদমত মুবারক-এ মাওলিদুন্নবী ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম অর্থাৎ মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র সাইয়্যিদু সাইয়্যিদিল আ’ইয়াদ শরীফ মাহফিল মুবারক এবং মাহফিল মুবারক উনার মধ্যে বিশেষ মেহমানদারীর ব্যবস্থা করার বিষয়ে ফক্বীহগণ যা বলেন, সে বিষয়গুলো পেশ করি। জবাবে নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি ইরশাদ মুবারক করেন, 

مَنْ فَرِحَ بِنَا فَرِحْنَا بِهٖ

‘যে ব্যক্তি আমাদের জন্য খুশি মুবারক প্রকাশ করে, আমরা তার জন্য খুশি মুবারক প্রকাশ করি।” সুবহানাল্লাহ! (সুবুলুল হুদা ওয়ার রশাদ ১/৩৬৩)

৩. কিতাবে আরো বর্ণিত রয়েছেন,

عَنْ بَعْضِ الْعُلَمَاءِ اَنَّهٗ رَاَى النَّبِـىَّ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ فِـى الْمَنَامِ فَقَالَ يَا رَسُوْلَ اللهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ مَا تَقُوْلُ مِنْ هٰذِهِ الْمَوَالِيْدِ الَّتِـىْ يَصْنَعُهَا النَّاسُ وَ‌يَـجْتَمِعُوْنَ لَـهَا وَيَفْرَحُوْنَ بِـهَا وَيُنْفِقُوْنَ فِيْهِ الْاَمْوَالَ وَيُزَوِّدُوْنَـهَا مِنْ صَالِحِ الْاَعْمَالِ فَقَالَ النَّبِـىُّ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ مَنْ فَرِحَ بِنَا فَرِحْنَا بِهٖ فَالْمُحِبُّ مَعَ اَحْبَابِهٖ

অর্থ: “একজন বুযূর্গ ব্যক্তি উনার সম্পর্কে বর্ণিত রয়েছেন যে, তিনি একবার নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনাকে স্বপ্নে দেখেন। তখন তিনি নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র খিদমত মুবারক-এ আরজী পেশ করেন- ‘ইয়া রাসূলাল্লাহ, ইয়া হাবীবাল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম! লোকজন যে মাওলিদুন্নবী ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম অর্থাৎ মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র সাইয়্যিদু সাইয়্যিদিল আ’ইয়াদ শরীফ উনার মাহফিল মুবারক করেন এবং এই মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র মাহফিল মুবারক উপলক্ষে উনারা একত্রিত হন, এই উপলক্ষে খুশি মুবারক প্রকাশ করেন, মাল-সম্পদ খরচ করেন এবং অনেক নেক আমল করেন, এ সম্পর্কে আপনি কী বলেন?’ জবাবে নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি ইরশাদ মুবারক করেন,

مَنْ فَرِحَ بِنَا فَرِحْنَا بِهٖ فَالْمُحِبُّ مَعَ اَحْبَابِهٖ

‘যে ব্যক্তি আমাদের জন্য খুশি মুবারক প্রকাশ করে, আমরা তার জন্য খুশি মুবারক প্রকাশ করি। মুহব্বতকারী ব্যক্তি যাঁকে মুহব্বত করে, উনার সাথেই সে থাকবে।” সুবহানাল্লাহ! (তাযকিরাতুল ওয়ায়িযীন ১২৫)

কাজেই, যাঁরা মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র সাইয়্যিদু সাইয়্যিদিল আ’ইয়াদ শরীফ উনার মাহফিল মুবারক করেন এবং এই মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র মাহফিল মুবারক উপলক্ষে একত্রিত হন, এই উপলক্ষে খুশি মুবারক প্রকাশ করেন, মাল-সম্পদ খরচ করেন এবং বিভিন্ন নেক আমল করেন, উনাদের প্রতি নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি অত্যন্ত সন্তুষ্ট হন, খুশি মুবারক প্রকাশ করেন এবং উনারা সবসময় নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার বিশেষ নিসবত মুবারক-এ থাকেন। সুবহানাল্লাহ!

নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার পক্ষ থেকে মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র সাইয়্যিদু সাইয়্যিদিল আ’ইয়াদ শরীফ পালন করার বিষয়ে উদ্বুদ্ধ করণ এবং মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র নির্দেশ মুবারক প্রদান:

৪. হুজ্জাতুদ্দীন হযরত ইমাম আবূ আব্দুল্লাহ মুহম্মদ ইবনে আব্দুল্লাহ ইবনে মুহম্মদ ইবনে যুফার মাক্কী ছিক্বিল্লী রহমতুল্লাহি আলাইহি (বিলাদত শরীফ ৪৯৭ হিজরী শরীফ : বিছাল শরীফ ৫৬৫ হিজরী শরীফ) তিনি বলেন,

وَ‌قَدْ عَمِلَ الْمُحِبُّوْنَ لِلنَّبِـىِّ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ فَرْحًا بِـمَوْلِدِهِ الْوَلَائِمَ فَمِنْ ذٰلِكَ مَا عَمِلَهٗ بِالقَاهِرَةِ الْمُعِزِّيَّةِ مِنَ الْوَلَائِمِ الْكِبَارِ حَضْرَتْ اَلشَّيْخُ اَبُو الْـحَسَنِ اَلْمَعْرُوْفُ بِاِبنِ قُفْلٍ رَحْـمَةُ اللهِ عَلَيْهِ شَيْخُ شَيْخِنَا حَضْرَتْ اَبِـىْ عَبْدِ اللهِ مُـحَمَّدِ بْنِ النُّعْمَانِ رَحْـمَةُ اللهِ عَلَيْهِ وَعَمِلَ ذٰلِكَ قَبْلُ حَضْرَتْ جَـمَالُ الدِّيْنِ الْعَجَمِىُّ الْـهَمْذَانِـىُّ رَحْـمَةُ اللهِ عَلَيْهِ وَمِـمَّنْ عَمِلَ ذٰلِكَ عَلـٰـى قَدَرِ وُسْعِهٖ حَضْرَتْ يُوْسُفُ الْـحَجَّارُ رَحْـمَةُ اللهِ عَلَيْهِ بِـمِصْرَ وَقَدْ رَاَى النَّبِـىَّ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ وَهُوَ يُـحَرِّضُ حَضْرَتْ يُوْسُفَ الْمَذْكُوْرَ رَحْـمَةُ اللهِ عَلَيْهِ عَلـٰى عَمَلِ ذٰلِكَ 

অর্থ: “নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার মুহব্বতকারীগণ উনার মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র বরকতময় বিলাদতী শান মুবারক প্রকাশের খুশিতে অর্থাৎ মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র সাইয়্যিদু সাইয়্যিদিল আ’ইয়াদ শরীফ উনার সম্মানার্থে খুশি মুবারক প্রকাশ করে মাহফিল মুবারক করে বিশেষ মেহমানদারীর ব্যবস্থা করে আসছেন। মিশরের কায়রোতে যে সকল আশেকে রাসূল ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামগণ উনারা মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র সাইয়্যিদু সাইয়্যিদিল আ’ইয়াদ শরীফ উনার সম্মানার্থে খুশি মুবারক প্রকাশ করে মাহফিলের ইন্তিজাম করে বড় বড় যিয়াফত বা মেহমানদারীর ব্যবস্থা করেছেন, উনাদের মধ্যে হযরত শায়েখ আবুল হাসান রহমতুল্লাহি আলাইহি তিনি অন্যতম। যিনি হযরত ইবনে কুফুল রহমতুল্লাহি আলাইহি নামে প্রসিদ্ধ ছিলেন। তিনি আমাদের শায়েখ (মুর্শিদ) হযরত আবূ আব্দুল্লাহ মুহম্মদ ইবনে নু’মান রহমতুল্লাহি আলাইহি উনার শায়েখ (মুর্শিদ)। সুবহানাল্লাহ!  উনার পূর্বে হযরত জামালুদ্দীন আজমী হামযানী রহমতুল্লাহি আলাইহি তিনি এই আমল মুবারক করতেন। সুবহানাল্লাহ! আর মিশরে যাঁরা ব্যাপক আকারে এই সম্মানিত আমল মুবারক করেছেন, হযরত ইঊসুফ হাজ্জার রহমতুল্লাহি আলাইহি তিনি হচ্ছেন উনাদের মধ্যে অন্যতম। আর অবশ্যই তিনি নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনাকে স্বপ্নে দেখেছেন- স্বয়ং নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি হযরত ইঊসুফ হাজ্জার রহমতুল্লাহি আলাইহি উনাকে এই মীলাদুন্নবী ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম অর্থাৎ মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র সাইয়্যিদু সাইয়্যিদিল আ’ইয়াদ শরীফ উনার সম্মানার্থে মাহফিল মুবারক করে মেহমানদারী করার বিষয়ে উদ্বুদ্ধ করেছেন।” সুবহানাল্লাহ! (সুবুলুল হুদা ওয়ার রশাদ ১/৩৬৩)

৫-৬. হুজ্জাতুদ্দীন হযরত ইমাম আবূ আব্দুল্লাহ মুহম্মদ ইবনে আব্দুল্লাহ ইবনে মুহম্মদ ইবনে যুফার মাক্কী ছিক্বিল্লী রহমতুল্লাহি আলাইহি তিনি আরো বলেন,

سَـمِعْتُ حَضْرَتْ يُوْسُفَ بْنَ عَلِـىِّ بْنِ زُرَيْقِۣ الشَّامِىَّ رَحْـمَةُ اللهِ عَلَيْهِ اَلْاَصْلَ الْمِصْرِىَّ اَلْمَوْلِدَ الْـحَجَّارَ بِـمِصْرَ فِـىْ مَنْزِلِهٖ بِـهَا حَيْثُ يَعْمَلُ مَوْلِدَ النَّبِـىِّ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ يَقُوْلُ رَاَيْتُ النَّبِـىَّ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ فِـى الْمَنَامِ مُنْذُ عِشْرِيْنَ سَنَةً وَكَانَ لِـىْ اَخٌ فِـى اللهِ تَعَالـٰـى يُقَالُ لَهٗ حَضْرَتْ اَلشَّيْخُ اَبُوْ بَكْرِ ۣ الْـحَجَّارُ رَحْـمَةُ اللهِ عَلَيْهِ فَرَاَيْتُ كَاَنَّنِـىْ وَحَضْرَتْ اَبَا بَكْرٍ رَحْـمَةُ اللهِ عَلَيْهِ هٰذَا بَيْنَ يَدَىِ النَّبِـىِّ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ جَالِسَيْنِ فَاَمْسَكَ حَضْرَتْ اَبُوْ بَكْرٍ رَحْـمَةُ اللهِ عَلَيْهِ لِـحْيَةَ نَفْسِهٖ وَفَرَقَهَا نِصْفَيْنِ وَذَكَرَ لِلنَّبِـىِّ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ كَلَامًا لَـمْ اَفْهَمْهُ فَقَالَ النَّبِـىُّ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ مُـجِيْبًا لَهٗ لَوْلَا هٰذَا لَكَانَتْ هٰذِهٖ فِـى النَّارِ وَدَارَ اِلَـىَّ وَقَالَ لَاَضْرِبَنَّكَ وَكَانَ بِيَدِهٖ قَضِيْبٌ فَقُلْتُ لِاَىِّ شَيْـئٍ يَا رَسُوْلَ اللهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ فَقَالَ حَتّٰـى لَا تُبْطِلِ الْمَوْلِدَ وَلَا السُّنَنَ قَالَ حَضْرَتْ يُوْسُفُ رَحْـمَةُ اللهِ عَلَيْهِ فَعَمِلْتُهٗ مُنْذُ عِشْرِيْنَ سَنَةً اِلَـى الْاٰنِ قَالَ وَسَـمِعْتُ حَضْرَتْ يُوْسُفَ رَحْـمَةُ اللهِ عَلَيْهِ الْمَذْكُوْرَ يَقُوْلُ سَـمِعْتُ اَخِىْ حَضْرَتْ اَبَا بَكْرِ ۣ الْـحَجَّارَ رَحْـمَةُ اللهِ عَلَيْهِ يَقُوْلُ سَـمِعْتُ حَضْرَتْ مَنْصُوْرَا ۣ النَّشَّارَ رَحْـمَةُ اللهِ عَلَيْهِ يَقُوْلُ رَاَيْتُ النَّبِـىَّ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ فِـى الْمَنَامِ يَقُوْلُ لِـىْ قُلْ لَهٗ لَا يُبْطِلْهُ يَعْنِـى الْمَوْلِدَ مَا عَلَيْكَ مِـمَّنْ اَكَلَ وَمِـمَّنْ لَـمْ يَاْكُلْ 

অর্থ: “আমি শুনেছি, হযরত ইমাম ইউসুফ ইবনে আলী ইবনে যুরাইক শামী রহমতুল্লাহি আলাইহি- যিনি মূলত মিশরীয় ছিলেন এবং মিশরের হাজ্জার নামক স্থানে বিলাদত শরীফ গ্রহণ করেছেন। সেখানে তিনি উনার বাড়ীতে মাওলিদুন্নবী ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম অর্থাৎ মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র সাইয়্যিদু সাইয়্যিদিল আ’ইয়াদ শরীফ পালন করতেন, এই উপলক্ষে বিশেষ মাহফিল মুবারক উনার ইন্তিজাম করতেন। তিনি বলেছেন, ‘আমি বিশ বছর যাবৎ নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনাকে স্বপ্নে দেখছি। সুবহানাল্লাহ! হযরত শায়েখ আবূ বকর হাজ্জার রহমতুল্লাহি আলাইহি নামে আমার একজন দ্বীনী ভাই ছিলেন। একবার আমি স্বপ্নে দেখি- আমি এবং আমার দ্বীনী ভাই এই হযরত আবূ বকর হাজ্জার রহমতুল্লাহি আলাইহি তিনি অর্থাৎ আমরা দুজন নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার সম্মুখে বসে আছি। হযরত আবূ বকর হাজ্জার রহমতুল্লাহি আলাইহি তিনি স্বীয় দাঁড়ি ধারণ করে তা দুই ভাগে বিভক্ত করলেন এবং নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার সাথে কিছু কথাবার্তা মুবারক বললেন, যা আমি বুঝতে পারিনি। তখন নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি উনার কথার জবাবে ইরশাদ মুবারক করেন, ‘যদি এটি না হতো, তাহলে এটি জাহান্নামে নিপতিত হতো।’ আর তিনি আমার দিকে লক্ষ্য করে ইরশাদ মুবারক করেন ‘আমি তোমাকে প্রহার করবো।’ তখন নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র নূরুল মাগফিরাত মুবারক (মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র হাত মুবারক) উনার মধ্যে একখানা ডাল বা লাঠি মুবারক ছিলেন। আমি বললাম- ‘ইয়া রাসূলাল্লাহ, ইয়া হাবীবাল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম! কি কারণে আপনি আমাকে প্রহার করবেন?’ জবাবে নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি ইরশাদ মুবারক করেন, ‘যাতে আপনি মাওলিদ শরীফ অর্থাৎ মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র সাইয়্যিদু সাইয়্যিদিল আ’ইয়াদ শরীফ মাহফিল মুবারক বন্ধ না করেন এবং মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র সুন্নত মুবারকসমূহ ছেড়ে না দেন।’ সুবহানাল্লাহ! হযরত ইমাম ইঊসুফ রহমতুল্লাহি আলাইহি তিনি বলেন, ‘তাই আমি বিগত বিশ বছর থেকে এখন পর্যন্ত অর্থাৎ দীর্ঘ বিশ বছর যাবৎ নিয়মিতভাবে মাওলিদুন্নবী ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম অর্থাৎ মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র সাইয়্যিদু সাইয়্যিদিল আ’ইয়াদ শরীফ মাহফিল মুবারক করে যাচ্ছি।’ সুবহানাল্লাহ! হুজ্জাতুদ্দীন হযরত ইমাম আবূ আব্দুল্লাহ মুহম্মদ ইবনে আব্দুল্লাহ মাক্কী ছিক্বিল্লী রহমতুল্লাহি আলাইহি তিনি বলেন, আমি এই হযরত ইঊসুফ রহমতুল্লাহি আলাইহি উনাকে বলতে শুনেছি, আমি আমার দ্বীনী ভাই হযরত আবূ বকর হাজ্জার রহমতুল্লাহি আলাইহি উনাকে বলতে শুনেছি- তিনি বলেছেন, আমি হযরত মানছূর নাশ্শার রহমতুল্লাহি আলাইহি উনাকে বলতে শুনেছি যে, তিনি বলেছেন- ‘আমি নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনাকে স্বপ্নে দেখেছি। নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি আমাকে বলেছেন, ‘আপনি উনাকে অর্থাৎ হযরত ইঊসুফ রহমতুল্লাহি আলাইহি উনাকে বলে দিন যে, তিনি যেন এই মাহফিল মুবারক অর্থাৎ মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র সাইয়্যিদু সাইয়্যিদিল আ’ইয়াদ শরীফ মাহফিল মুবারক করা এবং এই উপলক্ষে বিশেষ মেহমানদারী করে খাদ্য খাওয়ানোর বিষয়টি ছেড়ে না দেন। যার ইচ্ছা এই মাহফিল মুবারক উনার সম্মানিত তাবারুক গ্রহণ করবে আর যার ইচ্ছা সম্মানিত তাবারুক গ্রহণ করবে না, এর প্রতি আপনার লক্ষ্য রাখার দরকার নেই’।” সুবহানাল্লাহ! (সুবুলুল হুদা ওয়ার রশাদ ১/৩৬৩)

এভাবে যুগে যুগে নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি স্বীয় উম্মতদেরকে মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র সাইয়্যিদু সাইয়্যিদিল আ’ইয়াদ শরীফ পালন করার বিষয়ে উদ্বুদ্ধ করেছেন এবং মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র নির্দেশ মুবারক প্রদান করেছেন। সুবহানাল্লাহ!

কাজেই, সমস্ত জিন-ইনসান, তামাম কায়িনাতবাসী সকলের জন্য ফরযে আইন হচ্ছেন মাল-জান সমস্ত কিছু বিলিয়ে দিয়ে অনন্তকালব্যাপী দায়িমীভাবে সাইয়্যিদু সাইয়্যিদিল আ’ইয়াদ শরীফ পালন করা। সুবহানাল্লাহ!  

যিনি খালিক্ব মালিক রব মহান আল্লাহ পাক তিনি ছাহিবু সাইয়্যিদি সাইয়্যিদিল আ’ইয়াদ শরীফ, আহলু বাইতি রসূলিল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম, ক্বায়িম মাক্বামে হাবীবুল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম, রহমতুল্লিল আলামীন মামদূহ মুর্শিদ ক্বিবলা সাইয়্যিদুনা হযরত সুলত্বানুন নাছীর আলাইহিস সালাম উনার সম্মানার্থে আমাদের সবাইকে সেই তাওফীক্ব দান করুন। আমীন!


0 Comments: