উম্মুল মু’মিনীন হযরত খাদীজাতুল কুবরা আলাইহাস সালাম উনার
বিছাল শরীফ
আবূ ত্বালিব উনার ইন্তিকালের পর উম্মুল মু’মিনীন হযরত খাদীজাতুল কুবরা আলাইহাস
সালাম উনার বিছাল শরীফ সংঘটিত হয়। তিনি ২৫ বৎসর নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার
সহধর্মিনী হিসেবে বেমেছাল খিদমতের আঞ্জাম দেন। উম্মুল মু’মিনীন হযরত খাদীজাতুল
কুবরা আলাইহাস সালাম উনার বিছাল শরীফ-এর বৎসরকে আখিরী রসূল, হাবীবুল্লাহ
হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি আমুল হুযূন বা চিন্তার বৎসর বলে
ঘোষণা করেন। বাস্তবিকই তা ছিলো চিন্তার বৎসর। প্রথমতঃ শিয়াবে আবূ ত্বালিবে দীর্ঘ
তিন বৎসর দুঃখে কষ্টে অবস্থান, দ্বিতীয়তঃ ৪২ বৎসরের খিদমতের
আঞ্জামদাতা চাচা আবূ ত্বালিব উনার ইন্তিকাল, তৃতীয়তঃ উম্মুল
মু’মিনীন হযরত খাদীজাতুল কুবরা আলাইহাস সালাম উনার বিছাল শরীফ। উম্মুল মু’মিনীন
হযরত খাদীজাতুল কুবরা আলাইহাস সালাম তিনি আনুষ্ঠানিক নুবুওওয়াতের ১০ম বৎসর বিছাল
শরীফ লাভ করেন। তখন উনার বয়স মুবারক ছিলো পয়ষট্টি বৎসর। জিহুন নামক স্থানে উনাকে
দাফন মুবারক করা হয়। নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক
ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি স্বয়ং উনার জিসম মুবারক কবর মুবারকে রাখেন
এবং দাফন মুবারক সম্পন্ন করেন। তখনো জানাযা নামাযের বিধান জারি হয়নি। (মাদারিজুন
নুবুওওয়াত, সীরাতুন নবী ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম)
আল বিদায়া ওয়ান নিহায়া গ্রন্থের ২য় জিলদ ১২৭ পৃষ্ঠায় উল্লেখ রয়েছে,
قال حضرت محمد بن اسحاق رحمة الله عليه ماتت حضرت خديجة عليها السلام وابو طالب فى عام واحد
অর্থ: “হযরত মুহম্মদ ইবনে ইসহাক্ব রহমতুল্লাহি আলাইহি তিনি বলেন, উম্মুল মু’মিনীন হযরত খাদীজাতুল কুবরা আলাইহাস সালাম এবং আবূ
ত্বালিব উনাদের বিছাল শরীফ একই বছর হয়।
হযরত আব্দুল্লাহ ইবনে মুনদা রহমতুল্লাহি আলাইহি তিনি উনার ‘আল মাআরিফাহ’
গ্রন্থে এরূপ বর্ণনা উল্লেখ করেছেন।
আল বিদায়া ওয়ান নিহায়া ২য় জিলদ ১২৭ পৃষ্ঠায় উল্লেখ রয়েছে,
عن أبى هريرة قال: أتى جبرائيل إلى رسول الله صلى الله عليه و سلم فقال يا رسول الله صلى الله عليه و سلم هذه خديجة قد أتت معها إناء فيه إدام- أو طعام أو شراب- فاذا هى أتتك فاقرأ عليها السلام من ربها ومنى و بشرها ببيت فى الجنة من قصب لا صخب فيه ولا نصب-
অর্থ: “হযরত আবূ হুরায়রা রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু উনার থেকে বর্ণিত। তিনি
বলেন, একদিন হযরত জিবরীল আলাইহিস সালাম তিনি
আখিরী রসূল, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া
সাল্লাম উনার খিদমতে উপস্থিত হয়ে বললেন, ইয়া রসূলাল্লাহ! ইয়া
হাবীবাল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম! ইনি উম্মুল মু’মিনীন হযরত খাদীজাতুল
কুবরা আলাইহাস সালাম। তিনি আপনার খিদমতে একটি পাত্র নিয়ে আসতেছেন তার মধ্যে তরকারী
ও খাদ্য-পানীয় রয়েছে। তিনি যখন আপনার নিকট উপস্থিত হবেন তখন উনার রব মহান আল্লাহ
পাক উনার পক্ষ থেকে এবং আমার পক্ষ থেকে আপনি উনাকে সালাম পৌঁছিয়ে দিবেন এবং উনাকে
জান্নাতের একটি বাসস্থানের সুসংবাদ দিবেন। সেটি হবে মুক্তার তৈরি। তাতে কোনো
শোরগোল ও দুঃখ-কষ্ট থাকবে না। (বুখারী শরীফ ও মুসলিম শরীফ)
মূলত, উম্মুল মু’মিনীন
হযরত খাদীজাতুল কুবরা আলাইহাস সালাম তথা হযরত উম্মাহাতুল মু’মিনীন আলাইহিন্নাস
সালাম উনাদের ফাযায়িল ফযীলত, বুযূর্গী ও সম্মান মহান আল্লাহ
পাক তিনি উনার পবিত্র কুরআন শরীফ-এ এবং সাইয়্যিদুল মুরসালীন, ইমামুল মুরসালীন, খতামুন নাবীইয়ীন, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি উনার হাদীছ
শরীফ-এ উল্লেখ করেছেন।
মহান আল্লাহ পাক তিনি ইরশাদ করেন,
النَّبِيُّ
أَوْلَى بِالْمُؤْمِنِينَ مِنْ أَنفُسِهِمْ وَأَزْوَاجُهُ أُمَّهَاتُهُمْ
অর্থ: “নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি
ঈমানদারগণের নিকট তাদের প্রাণের চেয়েও অধিক প্রিয়। আর উনার সম্মানিত আহলিয়াগণ
উনারা মু’মিনগণের মাতা।” (সূরা আহযাব : আয়াত শরীফ- ৬)
আলোচ্য আয়াত শরীফ-এ মহান আল্লাহ পাক উনার রসূল, সাইয়্যিদুল মুরসালীন, ইমামুল মুরসালীন,
খতামুন নাবীইয়িন, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক
ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার সঙ্গিনী আলাইহিন্নাস সালাম উনাদেরকে ام المومنين (উম্মুল মু’মিনীন) বা মু’মিনদের মাতা বলা হয়েছে।
অর্থাৎ আখিরী রসূল, হাবীবুল্লাহ হুযূর
পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার সঙ্গিনীগণ সমস্ত উম্মতের নিকট নিজের
মায়ের মতো। নিজের মাকে যেমন তা’যীম-তাকরীম বা সম্মান করা ফরয তা থেকে লক্ষ কোটিগুণ
বেশি মহান আল্লাহ পাক উনার রসূল, নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার যাঁরা আহলিয়া
আলাইহিন্নাস সালাম উনাদেরকে সম্মান, ইজ্জত করা প্রত্যেক
উম্মতের জন্য ফরয। নিজের মাকে যেমন বিয়ে করা হারাম, তেমনি
মহান আল্লাহ পাক উনার হাবীব হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার আহলিয়া
আলাইহিন্নাস সালাম উনাদেরকে কোনো (পুরুষ) উম্মতের জন্য বিয়ে করা হারাম।
মহান আল্লাহ পাক তিনি ইরশাদ করেন,
وَلَا أَن تَنكِحُوا
أَزْوَاجَهُ مِن بَعْدِهِ أَبَدًا
অর্থ: “মহান আল্লাহ পাক উনার হাবীব হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম
উনার বিছাল শরীফ (বিদায়)-এর পর উনার সঙ্গিনী আলাইহিন্নাস সালাম উনাদেরকে তোমরা
বিয়ে করবে না, তোমাদের জন্য
উনাদেরকে বিয়ে করা হারাম।” (সূরা আহযাব : আয়াত শরীফ- ৫৩)
মহান আল্লাহ পাক তিনি উম্মুল মু’মিনীন আলাইহিন্নাস সালাম উনাদের সম্পর্কে
ইরশাদ করেছেন,
يَا نِسَاء النَّبِيِّ
لَسْتُنَّ كَأَحَدٍ مِّنَ النِّسَاء
অর্থ: “হে নবী পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার আহলিয়াগণ! আপনারা
অন্যান্য মহিলাদের মতো নন।” (সূরা আহযাব : আয়াত শরীফ ৩২)
অর্থাৎ সাইয়্যিদুল মুরসালীন, ইমামুল মুরসালীন,
হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি যেমন
দুনিয়ার অন্য কোনো মানুষের মতো নন, তেমনি উনার আহলিয়া তথা
উম্মাহাতুল মু’মিনীন আলাইহিন্নাস সালাম উনারাও অন্য কোনো মহিলাদের মতো নন।
সুবহানাল্লাহ!
মহান আল্লাহ পাক উনাদেরকে বেমেছাল পূতঃপবিত্রা এবং সুমহান চরিত্র মুবারকের
অধিকারিনী করে মহান আল্লাহ পাক উনার হাবীব হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া
সাল্লাম উনার জন্য খাছ করে সৃষ্টি করেছেন। সে জন্য উনাদের একটি খাছ লক্বব মুবারক
হচ্ছে ازواخ مطهرات(আযওয়াজুম মুত্বহারাত) অর্থাৎ পূতঃপবিত্রা আহলিয়া। এ সম্পর্কে মহান
আল্লাহ পাক তিনি ইরশাদ করেন,
إِنَّمَا يُرِيدُ اللَّهُ لِيُذْهِبَ
عَنكُمُ الرِّجْسَ أَهْلَ الْبَيْتِ وَيُطَهِّرَكُمْ تَطْهِيرًا
অর্থ: “হে (মহান আল্লাহ পাক উনার হাবীব হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া
সাল্লাম উনার) আহলে বাইত শরীফগণ! মহান আল্লাহ পাক তিনি চান আপনাদের থেকে
(সর্বপ্রকার) অপবিত্রতা, অশালীনতা দূর করতে।
তিনি আপনাদেরকে সম্পূর্ণরূপে পবিত্রা করতে চান।” (সূরা আহযাব : আয়াত শরীফ ৩৩)
উপরোক্ত আয়াত শরীফ-এর অর্থ এটা নয় যে, আহলে বাইত উম্মুল
মু’মিনীন আলাইহিন্নাস সালাম উনাদের মধ্যে কোনো প্রকার অপবিত্রতা রয়েছে যা থেকে
উনাদেরকে পবিত্র করতে হবে। বরং এর অর্থ হচ্ছে যে, মহান
আল্লাহ পাক তিনি স্বয়ং স্বীয় ভাষায় কুরআন শরীফ-এর মধ্যে উনাদের পবিত্রতার বিষয়টি
আনুষ্ঠানিকভাবে ঘোষণা করেছেন। যেমন, আখিরী রসূল, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি নবী-রসূল
হিসেবে সৃষ্টি হওয়ার পরও উনাকে দুনিয়াবী জিন্দেগী মুবারক-এ উনার চল্লিশ বছর বয়স
মুবারকে আনুষ্ঠানিকভাবে নবী হিসেবে ঘোষণা করা হয়েছে।
মূলত, কোনো প্রকার অশ্লীল
ও অশালীন কাজ তো দূরের কথা, কোনো প্রকার অশোভনীয় ও
মুরুওয়াতের খিলাফ কাজও হযরত উম্মাহাতুল মু’মিনীন আলাইহিন্নাস সালাম উনাদেরকে
স্পর্শ করতে পারেনি। তাই মহান আল্লাহ পাক তিনি ইরশাদ করেন-
يَا نِسَاء النَّبِيِّ
مَن يَأْتِ مِنكُنَّ بِفَاحِشَةٍ مُّبَيِّنَةٍ يُضَاعَفْ لَهَا الْعَذَابُ ضِعْفَيْنِ وَكَانَ ذَلِكَ عَلَى اللَّهِ يَسِيرًا
অর্থ: “হে আমার হাবীব ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার সঙ্গিনীগণ! আপনাদের
মধ্যে কেউ যদি কোনো প্রকার স্পষ্ট শালীনতার খিলাফ কাজে জড়িত হন তবে উনাকে দ্বিগুণ
অসন্তুষ্টি দেয়া হবে। এটা মহান আল্লাহ পাক উনার পক্ষে অত্যন্ত সহজ। (সূরা আহযাব :
আয়াত শরীফ ৩০)
উপরোক্ত আয়াত শরীফ-এ দ্বিগুণ শাস্তির কথা বলা হয়েছে। তবে অর্থ হলো উনারা মহান
আল্লাহ পাক উনার হাবীব হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার ছোহবত অর্জন
ও সঙ্গিনী হওয়ার কারণে উনাদের মর্যাদা-মর্তবা অন্যান্যদের তুলনায় সীমাহীন ঊর্ধ্বে।
উনারা যে বেমেছাল ফযীলত, মর্যাদা ও মর্তবার
অধিকারিণী ছিলেন তারই দলীল পেশ করেছেন মহান আল্লাহ পাক তিনি উক্ত আয়াত শরীফ-এ।
বিশেষ করে উম্মুল মু’মিনীন হযরত খাদীজাতুল কুবরা আলাইহাস সালাম উনার
মর্যাদা-মর্তবা ছিলো আলাদা। উনার সম্পর্কে স্বয়ং সাইয়্যিদুল মুরসালীন, ইমামুল মুরসালীন, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক
ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি হাদীছ শরীফ-এ ইরশাদ করেন-
عن حضرت على عليه السلام قال سمعت رسول الله صلى الله عليه و سلم يقول خير نسائها حضرت مريم بنت عمران عليها السلام وخير نسائها حضرت خديجة بنت خويلد عليها السلام
হযরত আলী কাররামাল্লাহু ওয়াজহাহূ আলাইহিস সালাম উনার হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, আমি নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর
পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনাকে বলতে শুনেছি। তিনি বলেছেন, পূর্ববর্তী উম্মতগণের মধ্যে শ্রেষ্ঠ মহিলা হচ্ছেন হযরত মরিয়ম বিনতে ইমরান
আলাইহাস সালাম ও পরবর্তী উম্মতের মধ্যে শ্রেষ্ঠ মহিলা হচ্ছেন উম্মুল মু’মিনীন হযরত
খাদীজা বিনতে খুওয়াইলিদ আলাইহাস সালাম। (বুখারী, মুসলিম,
আহমদ, কানযুল উম্মাল, মিশকাত-৫৭৩)
অন্য হাদীছ শরীফ-এ ইরশাদ হয়েছে-
عن حضرت حذيفة عليها السلام قال قال رسول الله صلى الله عليه و سلم : حضرت خديجة عليها السلام سابقة نساء العالمين الى الايمان بالله و بمحمد صلى الله عليه و سلم
অর্থ: “হযরত হুযাইফা রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু উনার থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক
ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি বলেছেন, হযরত খাদীজা
আলাইহাস সালাম তিনি মহান আল্লাহ পাক ও হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম
উনাদের প্রতি ঈমান আনার ক্ষেত্রে বিশ্ববাসী সমস্ত মহিলাদের মধ্য অগ্রগণ্য।
(মুসতাদরাক লিল হাকিম, কানযুল উম্মাল)
হাদীছ শরীফ-এ আরো ইরশাদ হয়েছে-
عن حضرت عروة رضى الله تعالى عنه مرسلا قال رسول الله صلى الله عليه و سلم حضرت خديجة عليها السلام خير نساء عالمها و حضرت مريم عليها السلام خير نساء عالمها و حضرت فاطمة عليها السلام خير نساء عالمها-
অর্থ: “হযরত উরওয়া রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু মুরসাল সূত্রে বর্ণনা করেন, নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক
ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি ইরশাদ করেন, উম্মুল
মু’মিনীন হযরত খাদীজা আলাইহাস সালাম তিনি দুনিয়ার সমস্ত মহিলাদের মধ্যে শ্রেষ্ঠা,
হযরত মারইয়াম আলাইহাস সালাম তৎকালীন সমস্ত মহিলাদের মধ্যে শ্রেষ্ঠা
ও উম্মু আবিহা হযরত ফাতিমাতুয যাহরা আলাইহাস সালাম তিনি পরবর্তী সমস্ত মহিলাদের
মধ্যে শ্রেষ্ঠা। (আল হারিছ, কানযুল উম্মাল)
হাদীছ শরীফ-এ আরো ইরশাদ হয়েছে-
عن حضرت حذيفة رضى الله تعالى عنه قال قال رسول الله صلى الله عليه و سلم سيدة نساء المؤمنين فلانة و حضرت خديجة بنت خويلد عليها السلام اول نساء المسلمين اسلاما
অর্থ: “হযরত হুযাইফা রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু উনার থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক
ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি বলেন, ঈমানদার মহিলাদের
মধ্যে ওমুক (উম্মুল মু’মিনীন হযরত খাদীজাতুল কুবরা আলাইহাস সালাম) সাইয়্যিদা এবং
উম্মুল মু’মিনীন হযরত খাদীজা আলাইহাস সালাম তিনিই মুসলমান মহিলাদের মধ্যে প্রথম
ইসলাম গ্রহণকারিণী। (আবূ ইয়ালা, কানযুল উম্মাল)
হাদীছ শরীফ-এ বর্ণিত রয়েছে-
كمل من الرجال كثير ولم يكمل من النساء الا ثلث حضرت مريم بنت عمران عليها السلام حضرت اسية امرأة فرعون عليها السلام و حضرت خديجة بنت خويلد عليها السلام
অর্থ: “পুরুষদের মধ্যে অনেকেই কামালিয়াত অর্জন করেছেন। কিন্তু মহিলাদের মধ্যে
বিশেষ করে কামালিয়াত ও পূর্ণতা পেয়েছেন তিনজন। হযরত ইমরান আলাইহিস সালাম উনার মেয়ে
হযরত মারইয়াম আলাইহাস সালাম, ফিরাউনের স্ত্রী
হযরত আসিয়া আলাইহাস সালাম এবং খুওয়াইলিদের কন্যা উম্মুল মু’মিনীন হযরত খাদীজাতুল
কুবরা আলাইহাস সালাম।
স্মরণীয় যে, উম্মুল মু’মিনীন
সাইয়্যিদাতুনা হযরত খাদীজাতুল কুবরা আলাইহাস সালাম তিনি আনুষ্ঠানিক নুবুওওয়াত
প্রকাশের ১০ম বৎসর ১৭ই রমাদ্বান শরীফ বিছাল শরীফ লাভ করেন। উনার বিছাল শরীফ
কুল-কায়িনাতের নিকট ছিলো এক ঐতিহাসিক দিন। যে দিনকে পালন করা সম্পর্কে আলোচনা করা
প্রত্যেক মুসলমানদের জন্য ফরয-ওয়াজিব।
0 Comments:
Post a Comment