হুযুরপাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার পবিত্র জীবনী মুবারক । (পর্ব- ৫৮৫-৭৫০) (ট)


আরব গোত্রসহ অন্যান্য গোত্রে দ্বীন ইসলাম উনার প্রতি আহবান :
যিনি খালিক্ব, মালিক, রব মহান আল্লাহ পাক উনার হাবীব সাইয়্যিদুল মুরসালীন, ইমামুল মুরসালীন, খতামুন নাবিইয়ীন, নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি আরবদের প্রতিটি গোত্রকে পবিত্র দ্বীন ইসলাম উনার প্রতি আহবান করেছেন। অনেকে পবিত্র দ্বীন ইসলাম উনাকে গ্রহণ করে ছাহাবায়ে রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহুম উনাদের অন্তর্ভুক্ত হয়েছেন। যারা পবিত্র দ্বীন ইসলাম গ্রহণ করেননি তাদের মধ্যে অনেকে আখিরী নবী সাইয়্যিদুল মুরসালীন, ইমামুল মুরসালীন, খতামুন নাবিইয়ীন, নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার বিরোধিতা করেছে আবার অনেকেই নিরব ভূমিকা পালন করেছে।
পবিত্র হাদীছ শরীফ উনার মধ্যে ইরশাদ মুবারক মুবারক হয়েছেন,
قال حضرت ربيعة ابن عباد رضى الله تعالى عنه. إنى لغلام شاب مع أبى بمنى ورسول الله صلى الله عليه وسلم يقف على منازل القبائل من العرب فيقول يابنى فلان إنى رسول الله صلى الله عليه وسلم اليكم امركم أن تعبدوا الله ولا تشركوا به شيئا وأن تخلعوا ما تعبدون من دونه من هذه الانداد، وأن تؤمنوا بى وتصدقوا بى وتمنعونى حتى أبين عن الله ما بعشى به.
অর্থ: “রবীয়া ইবনে আববাদ রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু তিনি বলেন, আমি আমার পিতা উনার সাথে মীনাতে অবস্থান করছিলাম। তখন আমি বয়সে নবীন যুবক। আখিরী নবী হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি ঐ সময় আরবের বিভিন্ন গোত্রের তাঁবুতে তাশরীফ নিতেন এবং বলতেন, হে অমুক গোত্র! আমি তোমাদের নিকট যিনি খালিক্ব, মালিক, রব মহান আল্লাহ পাক উনার রসূল হিসেবে প্রেরিত হয়েছি। আমি তোমাদের নির্দেশ দিচ্ছি যে, তোমরা খালিক্ব, মালিক, রব মহান আল্লাহ পাক উনার ইবাদত করবে। উনার সাথে কাউকে শরিক করবে না। তোমরা যে সমস্ত দেব-দেবীর পূজা করো তা বর্জন করো। তোমরা আমার প্রতি ঈমান আনয়ন কর এবং আমাকে হক্ব বা সত্য বলে মেনে নাও। আর তোমরা আমার যারা শত্রু তাদেরকে প্রতিহত করো যাতে করে যিনি খালিক্ব, মালিক, রব মহান আল্লাহ পাক তিনি আমাকে যে পবিত্র দ্বীন ইসলাম দিয়ে পাঠিয়েছেন, আমি তা সকলের নিকট পৌঁছাতে পারি।”
আল বিদায়া ওয়ান নিহায়া ২য় জিলদ ১৩৯ পৃষ্ঠায় বর্ণিত রয়েছে,
قال حضرت ابن اسحاق رحمة الله عليه وحدثنى حضرت ابن شهاب الزهرى رحمة الله عليه أنه عليه الصلاة السلام أنى كندة فى منازلهم وفيهم سيد لهم يقال له مليح، فدعاهم الى الله عزوجل وعرض عليهم نفسه فابوا عليه-
অর্থ : হযরত ইবনে ইসহাক্ব রহমতুল্লাহি আলাইহি তিনি বলেন, হযরত ইবনে শিহাব যুহরী রহমতুল্লাহি আলাইহি তিনি আমার নিকট বর্ণনা করেছেন যে, পবিত্র দ্বীন ইসলাম উনার দাওয়াত নিয়ে সাইয়্যিদুল মুরসালীন, ইমামুল মুরসালীন, খাতামুন নাবিইয়ীন, নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি কিন্দা গোত্রের তাঁবুতে তাশরীফ নিলেন। সেখানে তাদের দলপতি মালীহ উপস্থিত ছিলো। আখিরী নবী সাইয়্যিদুল মুরসালীন, ইমামুল মুরসালীন, খাতামুন নাবিইয়ীন, নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি তাদেরকে যিনি খালিক্ব মালিক রব মহান আল্লাহ পাক উনার দিকে আহবান করলেন এবং নিজেকে তাদের নিকট পেশ করলেন। তারা উনার ডাক মুবারক উনার প্রতি সাড়া দিতে অস্বীকৃত জানালো। নাউযুবিল্লাহ!
قال حضرت ابن اسحاق رحمة الله عليه وحدثنى حضرت محمد بن عبد الرحمن بن حصين رحمة الله عليه أنه أنى كلبا فى منازلهم الى بطن منهم يقال لهم بنو عبد الله فدعاهم الى الله وعرض عليهم نفسه حتى إنه ليقول يابنى عبد الله إن الله قد أحسن اسم أبيكم فلم يقبلوا منه ماعرض عليهم. وحدثنى بعض أصحابنا عن حضرت عبد الله بن كعب بن مالك رحمة الله عليه أن رسول الله صلى الله عليه وسلم أتى بنى حنيفة فى منازلهم فدعاهم الى الله وعرض عليهم نفسه فلم يك أحد من العرب اقبح ردا عليه منهم.
অর্থ : “হযরত ইবনে ইসহাক্ব রহমতুল্লাহি আলাইহি তিনি আরো বলেন, হযরত মুহম্মদ ইবনে আব্দুর রহমান ইবনে হুসাইন রহমতুল্লাহি আলাইহি তিনি আমার নিকট বর্ণনা করেছেন যে, সাইয়্যিদুল মুরসালীন, ইমামুল মুরসালীন, খাতামুন নাবিইয়ীন, নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি কালব গোত্রের বানূ আব্দুল্লাহ নামক উপগোত্রের তাঁবুতে তাশরীফ নিয়ে তাদেরকে খালিক্ব, মালিক, রব মহান আল্লাহ পাক উনার প্রতি আহ্বান করলেন এবং উনার মুবারক খিদমতের আঞ্জাম দানের বিষয়টি আলোচনা করলেন। তিনি বললেন, হে বনু আব্দুল্লাহ! খালিক্ব, মালিক, রব মহান আল্লাহ পাক তিনি তো তোমাদের গোত্রীয় পিতাকে একটি সুন্দর নাম দিয়েছেন। তারা উনার ডাকে সাড়া দেয়নি এবং উনার কথা মুবারক রক্ষা করেনি এবং উনার খিদমতের আঞ্জাম দিতে ইচ্ছাও করেনি। নাঊযুবিল্লাহ! আমাদের এক সঙ্গী হযরত আব্দুল্লাহ ইবনে কা’ব ইবনে মালিক উনার উদ্ধৃতি দিয়ে আমার নিকট বর্ণনা করেছেন যে, সাইয়্যিদুল মুরসালীন, ইমামুল মুরসালীন, খাতামুন নাবিইয়ীন, নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি বনু হানীফা গোত্রের তাঁবুতে তাশরীফ নিয়ে তাদেরকেও খালিক্ব, মালিক, রব মহান আল্লাহ পাক উনার প্রতি আহ্বান জানালেন এবং তাদেরকে উনার মুবারক খিদমতের আঞ্জাম দেয়ার পরামর্শ দিলেন। উত্তরে তারা যে সমস্ত ভাষা ব্যবহার করলো আরবের কেউ এই সমস্ত ভাষা ব্যবহার করেনি। নাঊযুবিল্লাহ!
وحدثنى حضرت الزهرى رحمة الله عليه أنه أتى بنى عامر بن صعصعة فدعاهم إلى الله وعرض عليهم نفسه. فقال له رجل منهم يقال له بحيرة بن فراس. والله لو أنى أخذت هذا الفتى من قريش لأكلت به العرب، ثم قال له أرأيت إن نحن تابعناك على أمرك ثم أظهرك الله على من يخالفك ايكون لنا الامر من بعدك؟ قال الامر لله يضعه حيث يشاء. قال فقال له أقهدف نحورنا للعرب دونك فاذا أظهرك الله كان الأمر لغيرنا! لا حاجة لنا بأمرك. فابوا عليه.
রাবী বলেন, আমার নিকট হযরত যুহরী রহমতুল্লাহি আলাইহি তিনি বর্ণনা করেছেন যে, খালিক্ব, মালিক, রব মহান আল্লাহ পাক উনার হাবীব সাইয়্যিদুল মুরসালীন, ইমামুল মুরসালীন, খাতামুন নাবিইয়ীন, নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি আমির ইবনে সা’সাআহ গোত্রের নিকট তাশরীফ নিলেন এবং তাদেরকে খালিক্ব, মালিক, রব মহান আল্লাহ পাক উনার প্রতি ঈমান গ্রহণ এবং সাইয়্যিদুল মুরসালীন, ইমামুল মুরসালীন, খাতামুন নাবিইয়ীন, নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার প্রতি ঈমানসহ খিদমতের আঞ্জাম দেয়ার ব্যাপারে আলোচনা করলেন। বুহায়রা ইবনে ফিরাস নামের একজন প্রত্যুত্তরে বলেছিলো, খালিক্ব, মালিক, রব মহান আল্লাহ পাক উনার ক্বসম! কুরাইশ গোত্রের এই সম্মানিত যুবক উনাকে যদি আমি আমার অধীনস্থ করতে পারতাম, তবে উনার মাধ্যমে আমি সমগ্র আরব ভূখ-ে কর্তৃত্ব প্রতিষ্ঠা করতাম। তারপর সে সাইয়্যিদুল মুরসালীন, ইমামুল মুরসালীন, খাতামুন নাবিইয়ীন, নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনাকে বললো, আচ্ছা! আমরা যদি আপনাকে অনুসরণ করি, মেনে নেই তারপর আপনি আপনার যারা শত্রুতা করে থাকে তাদের উপর আপনি বিজয় লাভ করেন তাহলে আপনার পর আমরা কি রাজত্বের মালিক হবো? সাইয়্যিদুল মুরসালীন, ইমামুল মুরসালীন, খাতামুন নাবিইয়ীন, নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি বললেন, কর্তৃত্ব ও রাজত্ব মূলত খালিক্ব, মালিক, রব মহান আল্লাহ পাক উনার হাত মুবারকে। তিনি যাকে ইচ্ছা তাকেই তা দান করেন। তখন বুহায়রা সে বললো, এ কেমন কথা যে, আমরা আপনার খিদমতের আঞ্জাম দিবো এবং আমরা আরবদের আক্রমণ বুক পেতে নিবো আর আপনি বিজয়ী হলে রাজত্ব যাবে অন্যের হাতে। নাঊযুবিল্লাহ! যা হোক আপনার অনুসরণ করার আমাদের কোনো প্রয়োজন নেই। নাঊযুবিল্লাহ! তারা সাইয়্যিদুল মুরসালীন, ইমামুল মুরসালীন, খাতামুন নাবিইয়ীন, নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার কথা মুবারক অস্বীকার করলো।
فلما صدر الناس رجعت بنو عامر إلى شيخ لهم قد كان أدركه السن حتى لا يقدر أن يوافى معهم المواسم، فكانوا إذا رجعوا اليه حدنوه بما يكون فى ذلك الموسم، فلما قدموا عليه ذلك العام سألهم عما كان فى موسمهم فقالوا جاءنا فتى من قريش ثم أحد بنى عبد المطلب يزعم أنه نبى يدعونا إلى أن تمنعه ونقوم معه ونخرج به إلى بلادنا. قال فوضع الشيخ يده على رأسه ثم قال يال يابنى عامر هل لها من تلاف؟ هل لذناباها من مطلب؟ والذى نفس فلان بيده ماتقولها اسماعيلى قط، وإنها لحق فأين رأيكم كان عنكم.
হজ্জের মৌসুম শেষে লোকজন নিজ নিজ দেশে ফিরে গেলো। বনু আমির গোত্রের লোকেরা তাদের এক বয়োবৃদ্ধ নেতৃস্থানীয় লোকের নিকট উপস্থিত হলো। বার্ধক্যের কারণে তিনি হজ্জে যেতে পারেননি। প্রতি বছর হজ্জ থেকে ফিরে গিয়ে তারা ওই বছর পবিত্র মক্কা শরীফ উনার মধ্যে সংঘটিত বিষয়সমূহ উনাকে জানাতো। এবার উনার নিকট উপস্থিত হয়ে এই মৌসুমে সংঘটিত ঘটনাবলী সম্পর্কে তিনি তাদের জিজ্ঞেস করলেন। তারা বললো, কুরাইশ বংশের বনী আব্দুল মুত্তালিব আলাইহিস সালাম উনার এক সুমহান ব্যক্তি তিনি আমাদের নিকট তাশরীফ নিয়েছিলেন। তিনি বলছিলেন যে, তিনি মহান আল্লাহ পাক উনার রসূল, সাইয়্যিদুল মুরসালীন, ইমামুল মুরসালীন, খাতামুন নাবিইয়ীন, নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম। উনার খিদমতের আঞ্জাম দেয়ার জন্যে, উনাকে সহযোগিতা করার জন্যে এবং উনাকে আমাদের দেশে নিয়ে আসার জন্যে তিনি আমাদের নিকট আলোচনা করেছেন। এ কথা শুনে বৃদ্ধ লোকটি উনার মাথায় হাত দিয়ে বললেন, হে আমির গোত্র! তোমাদের জন্যে কি ধ্বংস এসে গেলো? যে সুযোগ তোমরা হাতছাড়া করেছ তা কি আর ফিরে পাবে? অমুকের প্রাণ যার হাত মুবারকে উনার ক্বসম করে বলছি। ইসমায়ীলী বংশধর উনারা তো বিন্দুমাত্র বানোয়াটি কথা-বার্তা বলেন না। তিনি যা এনেছেন তাতো নিশ্চিত সত্য। তোমাদের বিবেক-বিবেচনা তখন কোথায় ছিলো।”
উক্ত কিতাবের অন্য বর্ণনায় এসেছে,
ثم أقبل على رسول الله صلى الله عليه وسلم فقال قم فالحق بقومك، فوالله لولا أنك عند قومى لضربت عنقك. قال فقام رسول الله صلى الله عليه وسلم الى ناقته فركيها، فغمز الخبيث بحيرة شاكلتها فقمصت برسول الله صلى الله عليه وسلم فالقته. وعند بنى عامر يومئذ ضباعة ابنة عامر بن قرط، كانت من النسوة اللاتى أسلمن مع رسول الله بمكة أحد منكم؟
অর্থ: সাইয়্যিদুল মুরসালীন, ইমামুল মুরসালীন, খাতামুন নাবিইয়ীন, নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার দিকে বুহায়রা তাকালো। সে বললো, দয়া করে আপনি আপনার সম্প্রদায়ের নিকট চলে যান। মহান আল্লাহ পাক উনার ক্বসম! এখন আপনি যদি আমার সম্প্রদায়ের নিকট না হয়ে অন্য কোথাও হতেন, তবে আমি আপনাকে শহীদ করতাম। নাঊযুবিল্লাহ! রাবী বলেন, অতঃপর সাইয়্যিদুল মুরসালীন, ইমামুল মুরসালীন, খাতামুন নাবিইয়ীন, নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি উনার উটনী মুবারক উনার উপর উঠে বসে পড়লেন। খবীছ বুহায়রা এসে উটনীর চলার পথ রোধ করে দেয়। নাঊযুবিল্লাহ! ফলে সাইয়্যিদুল মুরসালীন, ইমামুল মুরসালীন, খাতামুন নাবিইয়ীন, নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার উটনী মুবারক লাফিয়ে উঠে এবং সাইয়্যিদুল মুরসালীন, ইমামুল মুরসালীন, খাতামুন নাবিইয়ীন, নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি পিঠ মুবারক থেকে মাটিতে তাশরীফ নেন।
বনু আমির গোত্রের নিকট তখন আমির ইবনে কুরাত উনার কন্যা দাবায়া অবস্থান করছিলেন। মক্কা শরীফ উনার মধ্যে যে সমস্ত হযরত মহিলা ছাহাবায়ে কিরাম রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহুম উনারা সাইয়্যিদুল মুরসালীন, ইমামুল মুরসালীন, খাতামুন নাবিইয়ীন, নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার প্রতি ঈমান এনেছিলেন, তিনি ছিলেন উনাদের মধ্যে একজন। আত্মীয়দের সঙ্গে দেখা করার জন্যে তিনি এখানে এসেছিলেন। তিনি বললেন, হে আমার বংশধরগণ! এখনতো আমির জীবিত নেই। তোমাদের সামনে সাইয়্যিদুল মুরসালীন, ইমামুল মুরসালীন, খাতামুন নাবিইয়ীন, নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনাকে কষ্ট দেয়া হচ্ছে ও উনার প্রতি খারাপ আচরণ করা হচ্ছে। অথচ তোমরা কেউ উনার জন্য এগিয়ে যাচ্ছো না।

فقام ثلاثة من بنى عمها الى بحيرة واثنين اعاناه، فاخذ كل رجل منهم رجلا فجلد به الارض، ثم جلس على صدره ثم علوا وجوههم لطما، فقال رسول الله صلى الله عليه وسلم اللهم بارك على هؤلاء والعن هؤلاء -قال فأسلم الثلاثة الذين نصروه وقتلوا شهداء وهم؛ غطيف وغطفان ابنا سهل، وعروة- أو عذرة- بن عبد الله بن سلمة رضى الله عنهم.
এবার উনার তিনজন চাচাতো ভাই বদবখত বুহায়রাকে আক্রমণ করার জন্যে উঠে দাঁড়ালেন। বিপরীত পক্ষের অপর দু’জন প্রস্তুত হলো বুহায়রাকে সাহায্য করার জন্যে। ফলে উভয় পক্ষের একেকজন তার প্রতিপক্ষকে আক্রমণ করলো। সাইয়্যিদুল মুরসালীন, ইমামুল মুরসালীন, খাতামুন নাবিইয়ীন, নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার পক্ষের প্রত্যেকেই উনারা তার প্রতিপক্ষকে মাটিতে ফেলে দিয়ে তাদের বুকের উপর উঠে বসলেন। এবং তাদেরকে চপেটাঘাত করতে লাগলেন। সাইয়্যিদুল মুরসালীন, ইমামুল মুরসালীন, খাতামুন নাবিইয়ীন, নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি দোয়া করলেন, হে বারে ইলাহী! এই তিনজন ব্যক্তিকে বরকত দান করুন আর ওই কাফির তিনটিকে লা’নত দিন।
এই তিনজন যাঁরা সাইয়্যিদুল মুরসালীন, ইমামুল মুরসালীন, খাতামুন নাবিইয়ীন, নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার খিদমতের আঞ্জাম দিচ্ছিলেন উনারা পরবর্তীতে পবিত্র ইসলাম গ্রহণ করেন এবং যুদ্ধে শহীদ হয়েছেন। উনারা হচ্ছেন, সাহলের দু’পুত্র হযরত গাতীফ রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু এবং হযরত গাতফন রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু আর তৃতীয়জন হলেন আব্দুল্লাহ ইবনে সালামা উনার পুত্র হযরত উরওয়া রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু।
আরো বর্ণিত রয়েছে যে,
وقد روى هذا الحديث بتمامه حضرت الحافظ سعيد بن يحيى بن سعيد الاموى رحمة الله عليه فى مغازيه عن أبيه به. وهلك الاخرون وهم؛ بحيرة بن فراس، وحزن بن عبد الله بن سلمة بن قشير، ومعاوية بن عبادة أحد بنى عقيل لعنهم الله لعنا كثيرا.
অর্থ: “হযরত হাফিয সায়ীদ ইবনে ইয়াহইয়া ইবনে সায়ীদ আল উমাবী রহমতুল্লাহি আলাইহি তিনি উনার ‘মাগাযী’ গ্রন্থে উনার পিতার বরাতে উক্ত ঘটনা বর্ণনা করেছেন। অপর তিনজন ধ্বংস হয়েছিলো। তারা হলো বুহায়রা ইবনে ফিরাস, হাযান ইবনে আব্দুল্লাহ ইবনে সালামা ইবনে কুশাইর এবং আকীল গোত্রের মুয়াবিয়া ইবনে উবাদা। তাদের প্রতি মহান আল্লাহ পাক উনার পক্ষ থেকে অনন্তকাল ধরে লা’নত।”
(আল বিদায়া ওয়ান নিহায়া ২য় জিলদ ১৪১পৃষ্ঠা)
পবিত্র হাদীছ শরীফ উনার মধ্যে আরো উল্লেখ রয়েছে,
فاتى بكر بن وائل فقال ممن القوم؟ قالوا من بكر بن وائل. فقال من أى بكر بن وائل؟ قالوا من بنى قيس بن ثعلبة. قال كيف العدد؟ قالوا كثير مثل الثرى. قال فكيف المنعة؟ قالوا لا منعة جاو رنا فارس فنحن لا تمتنع منهم ولا نجير عليهم. قال فتجعلون لله عليكم إن هو أبقا كم حتى تنزلوا منازلهم، وتستنكحوا نساءهم، وتستعبدوا أبناءهم أن تسبحوا الله ثلاثا وثلاثين، وتحمدوه ثلاثا وثلاثين، وتكبروه أربعا وثلاثين.
অর্থ: সাইয়্যিদুল মুরসালীন, ইমামুল মুরসালীন, খাতামুন নাবিইয়ীন, নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি বকর ইবনে ওয়াইল গোত্রের নিকট তাশরীফ নিলেন। জিজ্ঞাসা করলেন, আপনারা কোন গোত্রের? তারা বললো, বকর ইবনে ওয়াইল গোত্রের লোক। তিনি বললেন, বকর ইবনে ওয়াইল গোত্রের কোন শাখার আপনারা অন্তর্ভুক্ত। তারা বললো, কায়স ইবনে ছা’লাবা শাখার। তিনি বললেন, আপনাদের সংখ্যা কেমন? তারা বললো, প্রচুর ধুলাবালির সংখ্যার ন্যায়। তিনি বললেন, আপনাদের প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা কেমন? তারা বললো, আমাদের নিজস্ব কোনো প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা নেই। পারস্য স¤্রাট আমাদের আশ্রয় দিয়েছেন। সুতরাং তাদেরকে বাদ দিয়ে আমরা কারোও খিদমতের আঞ্জাম দিতে পারবো না এবং ওদেরকে ডিঙ্গিয়ে আমরা কাউকে স্থানও দিতে পারবো না। সাইয়্যিদুল মুরসালীন, ইমামুল মুরসালীন, খাতামুন নাবিইয়ীন, নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি বললেন, তবে আপনারা মহান আল্লাহ পাক উনার সাথে এই ওয়াদায় আবদ্ধ হন যে, তিনি যদি আপনাদের বাঁচিয়ে রাখেন তাহলে আপনারা ওই পারসিকদের স্থান দখল করতে পারেন, তাদের স্ত্রীদের বিবাহ করতে পারেন এবং তাদের ছেলে সন্তানদের ক্রীতদাসে পরিণত করতে পারেন, তাহলে মহান আল্লাহ পাক উনার উদ্দেশ্যে ৩৩ বার ‘সুবহানাল্লাহ’, ৩৩ বার ‘আলহামদুলিল্লাহ’ ও ৩৪ বার ‘আল্লাহু আকবার’ পাঠ করবেন।
قالوا ومن أنت؟ قال أنا رسول الله صلى الله عليه وسلم. ثم انطلق فلما ولى عنهم قال الكلبى وكان عمه أبو لهب يقبعه فيقول للناس لاتقبلوا قوله، ثم مر أبولهب فقالوا هل تعرف هذا الرجل؟ قال نعم هذا فى الذروة منا فعن أى شأنه تسألون؟ فاخبروه بما دعاهم اليه وقالوا زعم أنه رسول الله صلى الله عليه وسلم، قال ألا لا ترفعوا برأسه قولا فانه مجنون يهذى من أم رأسه. قالوا قد رأينا ذلك حين ذكر من أمر فارس ماذكر.
তারা বললো, আপনি কে? তিনি বললেন, আমি মহান আল্লাহ পাক উনার রসূল হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম। এরপর তিনি সেখান থেকে চলে এলেন। তিনি চলে আসার পর আবূ লাহাব সেখানে উপস্থিত হলো। হযরত কালবী রহমতুল্লাহি আলাইহি তিনি বলেন, সাইয়্যিদুল মুরসালীন, ইমামুল মুরসালীন, খাতামুন নাবিইয়ীন, নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার চাচা আবূ লাহাব উনার পিছনে পিছনে লেগে থাকতো এবং লোকদেরকে বলতো তোমরা উনার কথা মুবারককে গ্রহণ করো না। বস্তুত আবূ লাহাব সেখানে উপস্থিত হওয়ার পর লোকজন তাকে বললো তুমি কি উনাকে চিনো? আবূ লাহাব বললো, হ্যাঁ! আমি উনাকে চিনি। তিনি আমাদের মধ্যে সবচেয়ে সম্মানিত ও সম্ভ্রান্ত ব্যক্তি। তোমরা উনার সম্পর্কে কি জানতে চাচ্ছো? সাইয়্যিদুল মুরসালীন, ইমামুল মুরসালীন, খাতামুন নাবিইয়ীন, নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি তাদেরকে যে বিষয় বলেছেন এবং শিক্ষা দিয়েছেন সে সম্পর্কে তারা আবূ লাহাবকে জানালো এবং বললো যে, তিনি নিজেকে খালিক্ব, মালিক, রব মহান আল্লাহ পাক উনার রসূল বা হাবীব বলে নিজেকে প্রকাশ করেছেন। আবূ লাহাব বললো, তোমরা উনার কথা মুবারক গ্রহণ করে উনাকে বাহবা দিও না। তিনি একজন পাগল ব্যক্তি। নাঊযুবিল্লাহ! মাথায় যা আসে তাই বলেন। নাঊযুবিল্লাহ! তারা বললো, হ্যাঁ! আমরা উনাকে পাগল বলেই মনে করেছি। নাঊযুবিল্লাহ! যখন তিনি পারসিকদের বিরুদ্ধে আমাদের বিজয়ের কথা বলেছেন।” (আল বিদায়া ওয়ান নিহায়া ২য় জিলদ ১৪১ পৃষ্ঠা)
আল বিদায়া ওয়ান নিহায়া ২য় জিলদ ১৪২ ও ১৪৩ পৃষ্ঠায় উল্লেখ রয়েছে,
عن حضرت ابن عباس رضى الله تعالى عنه حدثنى على بن ابى طالب. قال لما أمر الله رسوله أن يعرض نفسه على قبائل العرب خرج وانا معه و حضرت ابو بكر عليه السلام إلى منى حتى دفعنا إلى مجلس من مجالس العرب، فتقدم حضرت أبوبكر عليه السلام فسلم، وكان حضرت أبوبكر عليه السلام مقدما فى كل خير،
অর্থ: “হযরত আব্দুল্লাহ ইবনে আব্বাস রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহুমা উনার থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, হযরত আলী ইবনে আবূ ত্বালিব আলাইহিস সালাম তিনি আমার নিকট বর্ণনা করেছেন। তিনি বলেন, মহান আল্লাহ পাক তিনি উনার রসূল, সাইয়্যিদুল মুরসালীন, ইমামুল মুরসালীন, খাতামুন নাবিইয়ীন, নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনাকে নির্দেশ মুবারক দিলেন তিনি যেনো আরবের বিভিন্ন গোত্রের নিকট তাশরীফ নিয়ে পবিত্র দ্বীন ইসলাম উনার দাওয়াত দেন। সাইয়্যিদুল মুরসালীন, ইমামুল মুরসালীন, খাতামুন নাবিইয়ীন, নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি মিনার পথে বের হলেন। সাথে ছিলেন সাইয়্যিদুনা হযরত আবূ বকর ছিদ্দীক্ব আলাইহিস সালাম তিনি এবং আমি।
আমরা আরবদের এক মজলিসে উপস্থিত হই। সাইয়্যিদুল মুরসালীন, ইমামুল মুরসালীন, খাতামুন নাবিইয়ীন, নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি সামনের দিকে এগিয়ে গিয়ে তাদেরকে সালাম দিলেন। সমস্ত কল্যাণকর বা নেক কাজে হযরত আবূ বকর ছিদ্দীক্ব আলাইহিস সালাম তিনি ছিলেন আমাদের মধ্যে অগ্রগামী। বংশ পরিচিতি সম্পর্কে তথা সমস্ত কল্যাণকর কাজে উনার ব্যাপক জানা-শুনা ছিলো এবং তিনি ছিলেন সকলের অগ্রগামী।
وكان رجلا نسابة فقال ممن القوم؟ قالوا من ربيعة، قال وأن ربيعة أنتم أمن هامها أم من لهازمها؟ قالوا بل من هامها العظمى. قال حضرت أبوبكر عليه السلام فمن أى هامتها العظمى. فقال ذهل الا كبر، قال لهم حضرت ابوبكر عليه السلام منكم عوف الذى كان يقال لاحر بوادى عوف؟ قالوا لا قال فمنكم بسطام بن قيس ابو اللواء ومنتهى الاحياء؟ قالوا لا. قال فمنكم الحوفزان بن شريك قاتل الملوك وسالبها أنفسها؟ قالوا لا. قال فمنكم جساس بن مرة بن ذهل حامى الذمار ومانع الجار؟ قالوا لا.
قال فمنكم المزدلف صاحب العمامة الفردة؟ قالوا لا-
সাইয়্যদুনা হযরত আবূ বকর ছিদ্দীক্ব আলাইহিস সালাম তিনি বললেন, আপনারা কোন সম্প্রদায়ের লোক? তারা বললো, রাবিয়া সম্প্রদায়ের লোক। তিনি বললেন, মূল রাবীয়া গোত্রের না শাখা গোত্রের। তারা বললো, মূল রাবীয়া গোত্রের। হযরত আবূ বকর ছিদ্দীক্ব আলাইহিস সালাম তিনি বললেন, তবে কোন মূল গোত্রের অন্তর্ভুক্ত। তারা বললো যুহল-ই-আকবরের গোত্রের অন্তর্ভুক্ত। হযরত আবূ বকর ছিদ্দীক্ব আলাইহিস সালাম তিনি বললেন, তোমাদের মধ্যে কি আওফ আছে, যার সম্পর্কে বলা হয় যে, আওফের উপত্যকায় উত্তাপ নেই। তারা বললো, না। সাইয়্যিদুনা হযরত আবূ বকর ছিদ্দীক্ব আলাইহিস সালাম তিনি বললেন, তোমাদের মধ্যে কি বুসতাম ইবনে কায়স আছে, উনার উপাধি পতাকাবাহী এবং যিনি গোত্রের উৎস। তারা বললো, না তিনি নেই। সাইয়্যিদুনা হযরত আবূ বকর ছিদ্দীক্ব আলাইহিস সালাম তিনি বললেন, তোমাদের মধ্যে কি হাওফাযান ইবনে শুয়ায়ক আছে, যার উপাধি রাজার হন্তা ও আত্মরক্ষাকারী? তারা বললো, না, নেই। সাইয়্যিদুনা হযরত ছিদ্দীক্বে আকবার আলাইহিস সালাম তিনি বললেন, তোমাদের জাসসাস ইবনে মুররা ইবনে যুহল আছে, যার লক্বব হলো আত্মসংযমী ও প্রতিবেশীদের হিফাযতকারী? তারা বললো, না, নেই। সাইয়্যিদুনা হযরত ছিদ্দীক্বে আকবর আলাইহিস সালাম তিনি বললেন, তোমাদের মধ্যে কি মুযদালিফ আছেন, যিনি তুলনাহীন একক শিরস্থানের অধিকারী? তারা বললো, না।
قال فانتم اخوال الملوك من كندة قالوا لا- قال فأنتم اصهار الملوك من لخم؟ قالوا لا. قال لهم حضرت ابوبكر عليه السلام فلستم بذهل الا كبر، بل أنتم ذهل الاصغر. قال فوثب اليه منهم غلام يدعى دغفل بن حنظلة الذهلى- حين بقل وجهه- فاخذ بزمام ناقة حضرت أبى بكر عليه السلام وهو يقول:
إن على سائلنا أن نسألهوالعبء لا نعرفه أو نحمله.
يا هذا إنك سألتنا فأخبر ناك ولم نكتمك شيئا، ونحن نريد أن نسألك فمن أنت؟ قال رجل من قريش. فقال الغلام بخ بخ أهل السؤدد والرئاسة، قادمة العرب وهاديها فمن أنت من قريش؟ فقال له رجل من بنى تيم بن مرة.
তাই তিনি বললেন, তবে তোমরা কি কিনদা-রাজাদের মাতুল বংশধর? তারা বললো, না, তা নয়। তিনি বললেন, তবে তোমরা কি লাখামী রাজাদের শ্বশুর গোত্র? তারা বললো, না, তা নয়। এবার সাইয়্যিদুনা ছিদ্দীক্বে আকবর আলাইহিস সালাম তিনি তাদেরকে বললেন, তবে তোমরা ঊর্ধ্বতন যুহলের গোত্রভুক্ত নও, বরং তোমরা অধস্তন যুহলের বংশধর।
বর্ণনাকারী বলেন, তখনই দাগফাল ইবনে হানযালা যুহালী নামে এক যুবক লাফিয়ে এসে সাইয়্যিদুনা হযরত ছিদ্দীক্বে আকবর আলাইহিস সালাম উনার উষ্ট্রি মুবারক-এর লাগাম চেপে ধরলো এবং বললো,
إن على سائلنا أن نسألهوالعبء لا نعرفه أو نحمله.
“যিনি আমাদেরকে জিজ্ঞেস করলেন, আমরা নিশ্চয়ই উনাকে উনার বংশ পরিচয় সম্পর্কে জিজ্ঞেস করবো। পোশাক দেখে আমরা উনাকে চিনতে পারছি না কিংবা উনার সম্পর্কে আমরা অজ্ঞ।”
তারা বললো, হে আগন্তুক ব্যক্তি! আপনি তো আমাদের জিজ্ঞাসা করলেন, আমরা আপনাকে জানালাম। আমাদের কিছুই আমরা গোপন রাখিনি। এবার আমরা আপনাকে কিছু জিজ্ঞেস করতে চাই। আপনার পরিচয় কি? সাইয়্যিদুনা হযরত ছিদ্দীক্বে আকবর আলাইহিস সালাম তিনি বললেন, আমি কুরাইশ বংশের একজন ব্যক্তি। যুবকটি বললো, বাহ বাহ! আপনি তো নেতৃত্বদানকারী আরবের অগ্রগামী ও শীর্ষ স্থানীয় বংশের অন্তর্ভুক্ত। সে এবার বললো, আপনি কুরাইশ বংশের কোন শাখার অন্তর্ভুক্ত? তিনি বললেন, তায়ম ইবনে মুররা শাখার অন্তর্ভুক্ত।
فقال له الغلام أمكنت والله الرامى من سواء الثغرة؟ أفمنكم قصى بن كلاب الذى قتل بمكة المتغلبين عليها واجلى بقيتهم وجمع قومه من كل أوب حتى أوطنهم مكة ثم استولى على الدار وأنزل قريشا منازلها فسمته العرب بذلك مجمعا، وفيه يقول الشاعر:
أليس أبوكم كان يدعى مجمعابه جمع الله القبائل من فهر
فقال حضرت ابوبكر عليه السلام لا. قال فمنكم عبد مناف الذى انهت اليه الوصايا وابو الغطاريف السادة؟ فقال حضرت أبوبكر عليه السلام لا. قال فمنكم عمروبن عبد مناف هاشم الذى هشم الثر يد لقومه ولأهل مكة، ففيه يقول الشاعر:
সে বললো, মহান আল্লাহ পাক উনার ক্বসম! আপনি শত্রু পক্ষের বক্ষ লক্ষ্য করে তীর নিক্ষেপ করতে পারেন? কুসাই ইবনে কিলাব কি আপনাদের গোত্রভুক্ত? যিনি পবিত্র মক্কা শরীফ উনাকে দখলকারীদের অধিকাংশ হত্যা আর অবশিষ্টদেরকে দেশান্তরিত করেছিলেন? নিজের সম্প্রদায়ভুক্ত লোকদেরকে বিভিন্ন স্থান থেকে এনে পবিত্র মক্কা শরীফ উনার মধ্যে পুনর্বাসন করেছিলেন। তারপর ওই জনপদের কর্তৃত্ব গ্রহণ করেছিলেন? কুরাইশ বংশকে যিনি মর্যাদার আসনে আসীন করেছিলেন। এজন্য আরব জাতি উনাকে মুজাম্মি, বা একত্রকারী নামে আখ্যায়িত করেছে। উনার সম্পর্কে জনৈক কবি বলেন,
أليس أبوكم كان يدعى مجمعابه جمع الله القبائل من فهر
“তোমাদের পূর্বপুরুষ কি একত্রকারী উপাধিতে ভূষিত ছিলেন না? উনার মাধ্যমে মহান আল্লাহ পাক তিনি ফিহর গোত্রের সকল শাখাকে একত্রিত করেছেন?”

0 Comments: