পবিত্র আকাবা উনার দ্বিতীয় বাইয়াত শরীফ:
আনুষ্ঠানিক
নুবুওয়াত প্রকাশের ত্রয়োদশ বৎসর পবিত্র আকাবা উনার দ্বিতীয় বাইয়াত বা শপথ অনুষ্ঠিত
হয়। পবিত্র মদীনা শরীফ উনার মধ্যে হযরত মুসআব ইবনে উমায়র রদ্বিয়াল্লাহু তায়লা আনহু
উনাকে পবিত্র মদীনাবাসী উনাদেরকে ইসলামের দাওয়াত দেয়ার জন্যে প্রেরণ করা হয়েছিলো।
উক্ত বৎসর তিনি হযরত আনছার ছাহাবায়ে কিরাম রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহুম এবং পবিত্র
মদীনা শরীফ উনার অনেক সম্প্রদায়ের লোকজন উনাদেরকে নিয়ে পবিত্র মক্কা শরীফ উনার
মধ্যে উপস্থিত হলেন।
সাইয়্যিদুল
মুরসালীন, ইমামুল মুরসালীন, খাতামুন
নাবিইয়ীন, নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ
হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার সঙ্গে উনাদের কথাবার্তা হলো যে,
আইয়ামে তাশরীক উনার দিবসে অর্থাৎ ১২ই যিলহজ্জ শরীফ তারিখে উনারা
পবিত্র আকাবা নামক স্থান মুবারকে একত্রিত হবেন। উনাদের সম্মানিত ও মহিমান্বিত করার
জন্যে, সাইয়্যিদুল মুরসালীন, ইমামুল
মুরসালীন, খাতামুন নাবিইয়ীন, নূরে
মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া
সাল্লাম উনার খিদমতের আঞ্জাম দেয়ার লক্ষ্যে এবং দ্বীন ইসলাম ও মুসলমান উনাদেরকে
বিজয়ী করার জন্যে মহান আল্লাহ পাক তিনি এই সময়টিকে উনাদের জন্যে নির্ধারণ করে
দিলেন।
আল বিদায়া ওয়ান
নিহায়া গ্রন্থের ২য় খন্ড ১৫৮ পৃষ্ঠায় উল্লেখ রয়েছে,
فحدثنى حضرت معبد بن كعب بن مالك رضى الله تعالى عنه أن أخاه حضرت عبد الله بن كعب رضى الله تعالى عنه- وكان من أعلم الانصار- حدثه أن أباه كعبا حدثه- وكان ممن شهد العقبة وبايع رسول الله صلى الله عليه وسلم بها- قال خرجنا فى حجاج قومنا من المشركين وقد صلينا وفقهنا ومعنا البراء بن معرور سيدنا وكبيرنا،
অর্থ: “হযরত ইবনে
ইসহাক্ব রহমতুল্লাহি আলাইহি তিনি বলেন, আমাকে হযরত মা’বাদ ইবনে
কা’ব ইবনে মালিক রহমতুল্লাহি আলাইহি তিনি জানিয়েছেন যে, উনার
ভাই হযরত আব্দুল্লাহ ইবনে কা’ব রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু তিনি উনাকে জানিয়েছেন।
হযরত আব্দুল্লাহ রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু তিনি ছিলেন হযরত আনছার ছাহাবায়ে কিরাম
রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহুম উনাদের মধ্যে অন্যতম বড় আলিম। বস্তুত হযরত আব্দুল্লাহ
রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু তিনি বলেছেন যে, উনার পিতা উনাকে
জানিয়েছেন, তিনি পবিত্র আকাবা উনার প্রথম বাইয়াত শরীফ উনার
সময় উপস্থিত ছিলেন এবং সাইয়্যিদুল মুরসালীন, ইমামুল মুরসালীন,
খাতামুন নাবিইয়ীন, নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার পবিত্র হাত
মুবারক ধরে তিনি বাইয়াত হয়েছিলেন। তিনি বলেছেন, আমাদের
সম্প্রদায়ের প্রায় অনেক লোকজনকে নিয়ে আমরা সবাই পবিত্র মক্কা শরীফ উনার দিকে
রওয়ানা হলাম। আমরা তখন ছলাত বা নামায পড়তাম এবং দ্বীন ইসলাম উনার ইলম হাছিল করতাম।
আমাদের সাথে ছিলেন আমাদের বয়োজ্যোষ্ঠ ও নেতৃস্থানীয় ব্যক্তি হযরত বারা ইবনে মা’রূর
রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু।
فلما وجهنا لفرنا وخرجنا من المدينة قال حضرت البراء كعب رضى الله تعالى عنه ياهؤلاء إنى قد رأيت رأيا والله ما أدرى أتوافقوننى
عليه أم لا؟ قلنا وما ذلك؟ قال قد رأيت أن لا أدع هذه البنية منى بظهر- يعنى الكعبة- وأن أصلى اليها قال فقلنا والله ما بلغنا أن نبينا صلى الله عليه وسلم يصلى إلا إلى الشام وما نريد أن نخالفه. فقال إنى لمصل اليها، قال فقلنا له لكنا لا نفعل. قال فكنا إذا حضرت الصلاة صلينا إلى الشام وصلى هو إلى الكعبة حتى قدمنا مكة. قال لى يا ابن أخى انطلق بنا إلى رسول الله صلى الله عليه وسلم حتى اسأله عما صنعت فى سفرى هذا فانه قد وقع فى نفسى منه شئ. لما رأيت من خلافكم إياى فيه. قال فخرجنا نسأل عن رسول الله صلى الله عليه وسلم- وكنالا نعرفه ولم نره قبل ذلك-
পবিত্র মদীনা শরীফ
থেকে পবিত্র মক্কা শরীফ উনার উদ্দেশ্যে আমরা যখন ছফর করলাম তখন হযরত বারা
রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু তিনি বললেন, হে লোক সকল! আমি একটি
সিদ্ধান্ত নিয়েছি; তোমরা আমার সাথে একমত হবে কিনা- আমি জানি
না। আমরা বললাম, সিদ্ধান্তটা কি? তিনি
বললেন, আমি সিদ্ধান্ত নিয়েছি যে, এই
পবিত্র কা’বা শরীফ উনাকে আমি পিছনে রাখতে পারবো না; আমি বরং
ওই পবিত্র কা’বা শরীফ উনার দিকে মুখ করেই নামায আদায় করবো। আমরা বললাম, আমরা তো জানি যে, সাইয়্যিদুল মুরসালীন, ইমামুল মুরসালীন, খাতামুন নাবিইয়ীন, নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু
আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি সিরিয়া তথা পবিত্র বাইতুল মুকাদ্দাস শরীফ উনার দিকে মুখ
করেই নামায আদায় করেন। সুতরাং আমরা সাইয়্যিদুল মুরসালীন, ইমামুল
মুরসালীন, খাতামুন নাবিইয়ীন, নূরে
মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া
সাল্লাম উনার বিপরীত আমল করব না। হযরত বারা রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু তিনি বললেন,
আমি পবিত্র কা’বা শরীফ উনার দিকে মুখ করেই নামায আদায় করবো। আমরা
বললাম আমরা কিন্তু তা করবো না। এরপর নামাযের সময় হলে আমরা নামায পড়তাম সিরিয়া তথা
পবিত্র বাইতুল মুকাদ্দাস শরীফ উনার দিকে মুখ করে আর তিনি নামায আদায় করতেন পবিত্র
কা’বা শরীফ উনার দিকে মুখ করে। এভাবে আমরা পবিত্র মক্কা শরীফ উনার মধ্যে এসে
পৌঁছলাম।
পবিত্র মক্কা শরীফ
উনার মধ্যে এসে তিনি আমাকে বললেন, ভাতিজা! আপনি আমাকে নিয়ে
সাইয়্যিদুল মুরসালীন, ইমামুল মুরসালীন, খাতামুন নাবিইয়ীন, নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার নিকট চলুন।
ছফরে আমি যা করেছি সে সম্পর্কে আমি উনার নিকট জানতে চাবো। কারণ আমি যা করেছি সে
সম্পর্কে আমার মনে একটু প্রশ্ন এসেছে যে, আমি আপনাদের সকলের
উল্টো কাজ করেছি।
বর্ণনাকারী হযরত
কা’ব রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু তিনি বলেন, সাইয়্যিদুল
মুরসালীন, ইমামুল মুরসালীন, খাতামুন
নাবিইয়ীন, নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ
হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার থেকে বিষয়টি জানার জন্যে আমরা উনার
সাক্ষাৎ মুবারকের উদ্দেশ্যে রওয়ানা হলাম। আমরা কিন্তু তখনও উনাকে চিনতাম না এবং
ইতঃপূর্বে উনাকে কোনো দিন দেখিনি।
فلقينا رجلا من أهل مكة فسألناه عن رسول الله صلى الله عليه وسلم قال هل تعرفانه؟ فقلنا لا، فقال هل تعرفان حضرت العباس بن عبد المطلب عليه السلام عمه؟ قال قلنا نعم! وقد كنا نعرف حضرت العباس عليه السلام كان لا يزال يقدم علينا تاجرا، قال فاذا دخلتما المسجد فهو الرجل الجالس مع العباس قال فدخلنا المسجد وإذا حضرت العباس عليه السلام جالس ورسول الله صلى الله عليه وسلم جالس معه، فسلمنا ثم جلسنا اليه فقال رسول الله صلى الله عليه وسلم للعباس عليه السلام. هل تعرف هذين الرجلين يا أبا الفضل؟ قال نعم، هذا حضرت البراء بن معرور رضى الله تعالى عنه سيد قومه وهذا حضرت كعب بن مالك رضى الله تعالى عنه قال فوالله ما أنسى قول رسول الله صلى الله عليه وسلم الشاعر؟ قال نعم!
পথে পবিত্র মক্কা
শরীফ উনার একজন লোকের সাথে আমাদের সাক্ষাৎ হয়। আমরা উনাকে সাইয়্যিদুল মুরসালীন, ইমামুল
মুরসালীন, খাতামুন নাবিইয়ীন, নূরে
মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া
সাল্লাম উনার সম্পর্কে জিজ্ঞেস করি। তিনি বলেন, আপনারা কি
উনাকে চিনেন? আমরা বললাম, না, উনাকে আমরা চিনি না। তিনি বললেন, তবে উনার চাচা
সাইয়্যিদুনা হযরত আব্বাস ইবনে আব্দুল মুত্তালিব আলাইহিস সালাম উনাকে চিনেন?
আমরা বললাম, হ্যাঁ, আমরা
উনাকে চিনি। হযরত আব্বাস আলাইহিস সালাম তিনি নিয়মিত ব্যবসায়ীক কাজে পবিত্র মদীনা
শরীফ যেতেন বলে আমরা উনাকে চিনতাম। লোকটি বললেন, আপনারা
পবিত্র মসজিদুল হারাম উনার মধ্যে প্রবেশ করলে দেখতে পাবেন যে, হযরত আব্বাস আলাইহিস সালাম উনার সাথে একজন ব্যক্তি বসা আছেন। তিনিই
সাইয়্যিদুল মুরসালীন, ইমামুল মুরসালীন, খাতামুন নাবিইয়ীন, নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম। সুবহানাল্লাহ!
আমরা পবিত্র মসজিদুল হারাম শরীফ উনার মধ্যে প্রবেশ করেই দেখলাম হযরত আব্বাস আলাইহিস
সালাম তিনি বসে রয়েছেন এবং উনার সঙ্গে সাইয়্যিদুল মুরসালীন, ইমামুল
মুরসালীন, খাতামুন নাবিইয়ীন, নূরে
মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া
সাল্লাম তিনিও বসা রয়েছেন। আমরা প্রথমতঃ সালাম দিলাম এবং উনার নিকট গিয়ে বসলাম।
হযরত আব্বাস আলাইহিস সালাম উনার উদ্দেশ্যে সাইয়্যিদুল মুরসালীন, ইমামুল মুরসালীন, খাতামুন নাবিইয়ীন, নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু
আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি বললেন, হে আবুল ফযল! আপনি কি এ
দু’জনকে চিনেন? হযরত আব্বাস আলাইহিস সালাম তিনি বললেন,
হ্যাঁ! চিনি। ইনি হচ্ছেন গোত্রপতি বারা’ ইবনে মা’রূর রদ্বিয়াল্লাহু
তায়ালা আনহু আর উনি হচ্ছেন হযরত কা’ব ইবনে মালিক রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু।
সাইয়্যিদুল মুরসালীন, ইমামুল মুরসালীন, খাতামুন নাবিইয়ীন, নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি বললেন,
কবি কা’ব? হযরত আব্বাস আলাইহিস সালাম তিনি
বললেন, হ্যাঁ।
فقال له حضرت البراء بن معرور رضى الله تعالى عنه يانبى الله إنى خرجت فى سفرى هذا قد هدانى الله تعالى للاسلام، فرأيت أن لا أجعل هذه البنية منى بظهر فصليت اليها وقد خالفنى أصحابى فى ذلك حتى وقع فى نفسى من ذلك شئ فماذا ترى؟ قال قد كنت على قبلة لو صبرت عليها.
(বর্ণনাকারী বলেন, সাইয়্যিদুল
মুরসালীন, ইমামুল মুরসালীন, খাতামুন
নাবিইয়ীন, নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ
হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি যে বলেছেন- কবি হযরত কা’ব
রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু, তা আমি কোনো দিন ভুলবো না।
সুবহানাল্লাহ!)
এরপর হযরত বারা
ইবনে মারূর রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু তিনি বললেন, নূরে
মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া
সাল্লাম! মহান আল্লাহ পাক তিনি আমাকে দ্বীন ইসলাম উনার পথে কবুল করেছেন। আমি
ইতঃপূর্বে ইসলাম গ্রহণ করেছি। আমি যখন এই ছফরে বের হই তখন আমার মনে একটি প্রশ্ন
জাগে যে, এই পবিত্র কা’বা শরীফ উনাকে পিছনে রাখা সমীচীন হবে
না। ফলে আমি বায়তুল মুকাদ্দাস শরীফ উনার দিকে মুখ না করে বরং পবিত্র কা’বা শরীফ
উনার দিকে মুখ করেই নামায আদায় করেছি। আমার সাথীগণ সকলে আমার বিপরীত আমল করেছেন।
অর্থাৎ উনারা পবিত্র কা’বা শরীফ উনাকে পিছনে রেখে পবিত্র বাইতুল মুকাদ্দাস শরীফ
উনার দিকে মুখ করে নামায আদায় করেছেন। ফলে এ বিষয়ে আমার মনে একটি প্রশ্নের সৃষ্টি
হয়েছে? এখন এ বিষয়ে আপনার নিকট জাওয়াব প্রার্থনা করছি?
সাইয়্যিদুল মুরসালীন, ইমামুল মুরসালীন,
খাতামুন নাবিইয়ীন, নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি ইরশাদ মুবারক
করেন, আপনি যে ক্বিবলা মুবারক উনার অনুসারী তাতে অবিচল
থাকুন।
قال حضرت كعب بن مالك رضى الله تعالى عنه ثم خرجنا إلى الحج وواعدنا رسول الله صلى الله عليه وسلم العقبة من أوسط أيام التشريق، فلما فرغنا من الحج وكانت الليلة التى واعدنا رسول الله صلى الله عليه وسلم فيها ومعنا عبد الله بن عمرو ابن حرام حضرت أبو جابر رضى الله تعالى عنه سيد من سادتنا أخذناه وكنا نكتم من معنا من قومنا من المشركين أمرنا، فكلمناه وقلنا له يا أبا جابر إنك سيد من سادتنا وشريف من أشرافنا وإنا نرغب بك عما أنت فيه أن تكون حطبا للنار غدا، ثم دعوناه إلى الاسلام وأخبرناه بميعاد رسول الله صلى الله عليه وسلم إيانا العقبة قال فاسلم وشهد معنا العقبة وكان نقيبا.
বর্ণনাকারী হযরত
কা’ব ইবনে মালিক রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু তিনি বলেন, এরপর
আমরা পবিত্র হজ্জ আদায়ের উদ্দেশ্যে বেরিয়ে পড়ি এবং ১২ই যিলহজ্জ শরীফ আকাবা উনাতে
সাইয়্যিদুল মুরসালীন, ইমামুল মুরসালীন, খাতামুন নাবিইয়ীন, নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার সাথে সাক্ষাৎ
মুবারক করবো বলে কথা দিয়ে যাই। আমরা পবিত্র হজ্জ শরীফ শেষ করি। সাইয়্যিদুল
মুরসালীন, ইমামুল মুরসালীন, খাতামুন
নাবিইয়ীন, নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ
হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার সঙ্গে দীদার মুবারকের ওই রাতটি
আগমন করলো। আমাদের সাথে ছিলেন আমাদের গোত্র প্রধান হযরত আব্দুল্লাহ ইবনে আমর ইবনে
হারাম আবু জাবির রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু তিনি। তিনি তখনো মুসলমান হননি। আমাদের
সাথী অমুসলিম তাদের থেকে আমরা আমাদের কার্যক্রম গোপন রাখতাম। আমরা আমাদের
গোত্রপ্রধান ও সরদার হযরত আব্দুল্লাহ ইবনে আমর রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু উনার
সঙ্গে একান্তে কথা বলি। আমরা উনাকে বললাম, হে আবু জাবির
রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু! আপনি আমাদের অন্যতম সরদার এবং সম্ভ্রান্ত ব্যক্তি।
আপনি যে পথে আছেন সে পথ থেকে আখিরাতে জাহান্নামের জ্বালানি হতে হবে। তাই আমরা
আপনাকে হিফাযত করতে চাই। এরপর আমরা উনাকে পবিত্র দ্বীন ইসলাম উনার দাওয়াত দেই এবং
পবিত্র আকাবা শরীফ উনার মধ্যে আমাদের সাথে সাইয়্যিদুল মুরসালীন, ইমামুল মুরসালীন, খাতামুন নাবিইয়ীন, নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু
আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার আসন্ন মজলিসের কথা উনাকে অবহিত করি। তিনি পবিত্র দ্বীন
ইসলাম গ্রহণ করেন এবং আমাদের সঙ্গে পবিত্র আকাবা উনার মধ্যে উপস্থিত হন। পরে তিনি
একজন বিশিষ্ট নক্বীব হলেন।” সুবহানাল্লাহ!
অন্য বর্ণনায় এসেছে,
فواعدناه شعب العقبة، فاجتمعنا عندها من رجل ورجلين حتى توافينا فقلنا يارسول الله صلى الله عليه وسلم علام نبايعك؟ قال تبايعونى على السمع والطاعة فى النشاط والكسل، والنفقة فى العسر واليسر، وعلى الامر بالمعروف والنهى عن المنكر، وأن تقولوا فى الله لا تخافوا فى الله لومة لائم وعلى أن تنصر ونى فتمنعونى إذا قدمت عليكم مما تمنعون منه أنفسكم وأزواجكم وأبناءكم ولكم الجنة. فقمنا اليه وأخذ بيده حضرت أسعد بن زرارة رضى الله تعالى عنه- وهو من أصغرهم- وهو أصغر السبعين-
“পবিত্র আকাবা উনার
গিরি সঙ্কটে সাইয়্যিদুল মুরসালীন, ইমামুল মুরসালীন,
খাতামুন নাবিইয়ীন, নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার সাথে আমাদের
সাক্ষাতের সিদ্ধান্ত হলো। যথা সময়ে একজন দু’জন করে আমরা উনার নিকট উপস্থিত হলাম।
শেষ পর্যন্ত আমরা সকলে সেখানে সমবেত হলাম। আমরা বললাম, ইয়া
রসূলাল্লাহ, ইয়া হাবীবাল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া
সাল্লাম। কোন বিষয়ে আমরা আপনার হাত মুবারকে বাইয়াত করবো? তিনি
বললেন, আপনারা আমার হাত মুবারকে বাইয়াত করবেন যে, সুখে, দুঃখে সর্বাবস্থায় আপনারা আমার কথা মুবারক
শুনবেন, আমার আদেশ-নির্দেশ মুবারক পালন করবেন। অভাবের সময়
স্বচ্ছলতার সময় সর্বসময়ে তোমরা মহান আল্লাহ পাক উনার পথে দান-সদকা করবেন। আপনারা
মহান আল্লাহ পাক উনার সন্তুষ্টির পক্ষে কথা বলবেন, মহান
আল্লাহ পাক উনার পক্ষে কথা বলতে গিয়ে, কাজ করতে গিয়ে কোনো
প্রকার ভর্ৎসনাকারীর ভর্ৎসনার তোয়াক্কা করবেন না। আপনারা এ বিষয়েও বাইয়াত করবেন যে,
আপনারা আমার খিদমত করবে এবং আপনাদের নিকট যখন আমি যাই তখনই আপনারা
আমার খিদমতের ভার গ্রহণ করবেন। যেমনটি নিরাপত্তা দিয়েছেন আপনাদের নিজেদেরকে এবং
আপনাদের আহলিয়া ও পুত্রগণদের। বিনিময়ে আপনারা জান্নাত লাভ ও আল্লাহ পাক ও উনার
হাবীব হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু উনার সন্তুষ্টি লাভ করতে পাবেন। উনার হাত মুবারক ধরে
বাইয়াত হওয়ার জন্যে আমরা উঠে দাঁড়ালাম। তখনই আসয়াদ ইবনে যুরারা তিনি এসে
সাইয়্যিদুল মুরসালীন, ইমামুল মুরসালীন, খাতামুন নাবিইয়ীন, নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার হাত মুবারকে
হাত রাখলেন। তিনি আমাদের ৭০ জন যুবক উনাদের মধ্যে অন্যতম ছিলেন।
إلا أنا، فقال رويدا يا أهل يثرب فانالم نضرب اليه أكباد الابل إلا ونحن نعلم أنه رسول الله صلى الله عليه وسلم، وإن اخراجه اليوم مناوأة للعرب كافة وقتل خياركم وتعضكم السيوف. فاما أنتم قوم تصبرون على ذلك فخذوه وأجركم على الله، وأما أنتم قوم تخافون من أنفسكم خيفة فذروه. فبينوا ذلك فهو أعذرلكم عند الله. قالوا أبط عنا يا أسعد فوالله لا ندع هذه البيعة ولا نسليها أبدا. قال فقمنا اليه فبايعناه وأخذ علينا وشرط ويعطينا على ذلك الجنة.
বর্ণনাকারী জাবির
রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু তিনি বলেন, অবশ্য আমি উনার চেয়ে ছোট
ছিলাম। তিনি বললেন, হে পবিত্র মদীনা শরীফ উনার অধিবাসীগণ!
থামুন, আমরা উটের পিঠে আরোহন করে দীর্ঘপথ পাড়ি দিয়ে এখানে
এসেছি এজন্যে যে, আমরা ঈমান এনেছি তিনি মহান আল্লাহ পাক উনার
রসূল, সাইয়্যিদুল মুরসালীন, ইমামুল
মুরসালীন, খাতামুন নাবিইয়ীন, নূরে
মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া
সাল্লাম। তবে কথা হলো, আজ যদি আপনারা উনাকে এখান থেকে নিয়ে
যান, তবে আরবের সকলেই আপনাদের শত্রু হয়ে যায়। আপনাদের
নেতৃস্থানীয় লোকদের শহীদ করে। তীক্ষ্ম তরবারী আপনাদের গরদানে উড়ায়। এ পরিস্থিতিতে
আপনারা যদি এই অঙ্গীকারে অবিচল থাকতে পারেন, অটল থাকতে পারেন,
তবে উনাকে নিয়ে যান, ফলশ্রুতিতে মহান আল্লাহ
পাক তিনি খুশি হবেন। আর যদি আপনারা নিজেদের ব্যাপারে শংকিত হয়ে থাকেন, উনার পূর্ণ খিদমতের আঞ্জামে অক্ষমতার ভয় করেন, তবে
উনাকে রেখে যান। মহান আল্লাহ পাক উনার নিকট ওযর পেশ করার জন্যে এটিই হবে সহজতর।
উপস্থিত লোকজন বললেন, হে হযরত আসয়াদ রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা
আনহু! আপনি এখান থেকে সরে যান, আমরা এই পবিত্র বাইয়াত শরীফ
ত্যাগ করবো না এবং কস্মিনকালেও এর বরখেলাফ করবো না। বর্ণনাকারী বলেন, এরপর আমরা সাইয়্যিদুল মুরসালীন, ইমামুল মুরসালীন,
খাতামুন নাবিইয়ীন, নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার সম্মুখে
দাঁড়ালাম এবং উনার হাত মুবারকে বাইয়াত হলাম। তিনি আমাদের থেকে কিছু শর্ত ও
অঙ্গীকার আদায় করলেন আর বিনিময়ে আমাদেরকে জান্নাত লাভের প্রতিশ্রুতি দিলেন।”
সুবহানাল্লাহ! (আল বিদায়া ওয়ান নিহায়া ২য় জিলদ ১৫৯ পৃষ্ঠা)
হাদীছ শরীফ উনার
মধ্যে বর্ণিত রয়েছে,
قال حضرت كعب بن مالك رضى الله تعالى عنه. قال فنمنا تلك الليلة مع قومنا فى رحالنا حتى إذا مضى ثلث الليل خرجنا من رحالنا لميعاد رسول الله صلى الله عليه وسلم نتسلل تسلل القطا مستخفين حتى اجتمعنا فى الشعب عند العقبة ونحن ثلاثة وسبعون رجلا ومعنا امرأتان من نسائنا نسيبة بنت كعب أم عمارة إحدى نساء بنى مازن بن النجار، واسماء ابنة عمرو بن عدى بن نابى إحدى نساء بنى سلمة وهى أم منيع. وقد صرح حضرت ابن اسحاق رحمة الله عليه فى رواية حضرت يونس بن بكير رحمة الله عليه عنه بأسم‘هم وأنسايهم.
অর্থ: “হযরত কা’ব
ইবনে মালিক রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু তিনি বলেন, এই
রাতে আমাদের লোকদের সাথে আমরা আমাদের তাঁবুতে ঘুমিয়ে পড়ি। রাতের এক তৃতীয়াংশ
অতিবাহিত হওয়ার পর সাইয়্যিদুল মুরসালীন, ইমামুল মুরসালীন,
খাতামুন নাবিইয়ীন, নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার সঙ্গে
প্রতিশ্রুত সাক্ষাত মুবারকের জন্যে আমরা তাঁবু হতে বেরিয়ে পড়ি। আমরা বের হলাম চুপি
চুপি অতি সন্তপর্ণে যেমন বেরিয়ে আসে বিড়াল। আমরা সকলে পবিত্র আকাবায় গিয়ে একত্রিত
হলাম। আমরা ছিলাম ৭৩ জন পুরুষ। আমাদের সঙ্গে ছিলেন ২ জন মহিলাও। একজন হযরত উম্মু
আম্মারা নাসীবাহ বিনতে কা’ব রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু। তিনি বনু মাযিন ইবনে
নাজ্জার গোত্রের অন্তর্ভুক্ত ছিলেন। দ্বিতীয়জন হযরত আমর ইবনে আদী ইবনে নাবী
রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু উনার কন্যা হযরত আসমা রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহা। তিনি
ছিলেন বনু সালামা গোত্রের মেয়ে। উনার উপনাম ছিলো উম্মু মানী। হযরত ইবনে ইসহাক্ব
ইউনুস ইবনে বুকয়ার রহমতুল্লাহি আলাইহি উনার থেকে বর্ণনা করেন। তিনি পবিত্র আকাবায়
উপস্থিত লোকদের নাম ও বংশ পরিচয় স্পষ্টভাবে উল্লেখ করেছেন।”
অন্য বর্ণনায় এসেছে, “বাইয়াত
গ্রহণকারীগণ বললেন- মহান আল্লাহ পাক উনার ক্বসম! আমরা তো যোদ্ধা জাতি। প্রজন্ম
থেকে প্রজন্মে উত্তরাধিকার সূত্রে আমরা যুদ্ধ পেয়ে আসছি। হযরত বারা রদ্বিয়াল্লাহু
তায়ালা আনহু তিনি কথা বলছিলেন এরই মধ্যে আবু হায়ছাম ইবনে তায়হান রদ্বিয়াল্লাহু
তায়ালা আনহু তিনি বলে উঠলেন- ইয়া রাসূলাল্লাহ, ইয়া
হাবীবাল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম! এখন আমাদের মাঝে এবং স্থানীয়
সম্প্রদায় ইয়াহুদীদের মাঝে মৈত্রী চুক্তি আছে। আপনার অনুসরণ করতে গিয়ে আমরা ওই
চুক্তি ভঙ্গ করবো। পরে আপনি এমন কিছু করবেন নাকি যে, আমরা
যদি এই চুক্তি ভঙ্গ করি এবং আপনার খিদমতের আঞ্জামের ওয়াদা দেই তারপর মহান আল্লাহ
পাক তিনি আপনাকে সার্বিক বিজয় দান করেন, তাহলে আপনি আমাদের
ছেড়ে আপনার সম্প্রদায়ের নিকট ফিরে আসবেন। উনার কথায় সাইয়্যিদুল মুরসালীন, ইমামুল মুরসালীন, খাতামুন নাবিইয়ীন, নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু
আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি মুচকি হাসলেন এবং বললেন,
بل الرم الدم والهدم الهدم انا منكم وانتم منى احارب من حاربتم واسالم من سالمتم-
অর্থ: “আমার জীবন
আপনাদের জীবন, আমার বিদায় আপনাদের বিদায়। আমি আপনাদের,
আপনারা আমার। আপনারা যার বিরুদ্ধে যুদ্ধ করবেন, আমি তার বিরুদ্ধে যুদ্ধ করবো আর আপনারা যার সাথে সন্ধি করবেন আমি তার সাথে
সন্ধি করবো।” হযরত কা’ব রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু তিনি বলেন, তখন সাইয়্যিদুল মুরসালীন, ইমামুল মুরসালীন, খাতামুন নাবিইয়ীন, নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি বললেন,
আমাকে আপনাদের মধ্য থেকে ১২ জন প্রতিনিধি মনোনীত করে দিন। উনারা
উনাদের সম্প্রদায়ের উপর দায়িত্বশীল হবেন। উনারা খাজরাজ গোত্র থেকে ৯ জন এবং আওস
গোত্র থেকে ৩ জন মোট ১২ জন প্রতিনিধি বাছাই করে দিলেন। পবিত্র দ্বীন ইসলাম উনার
ইতিহাসে এই ১২ জন নকীবরূপে পরিচিত।”
আল বিদায়া ওয়ান
নিহায়া ২য় জিলদ ১৬১, ১৬২ পৃষ্ঠায় উল্লেখ রয়েছে,
قال حضرت ابن اسحاق رحمة الله عليه وهم حضرت أبو أمامة أسعد بن زرارة رضى الله تعالى عنه المنقدم، و حضرت سعد بن الربيع بن عمرو بن أبى زهير بن مالك بن امرئ القيس بن مالك بن ثعلبة بن كعب بن الخزرج بن الحارث بن الخزرج رضى الله تعالى عنه و حضرت عبد الله بن رواحة بن امرئ القيس {بن عمرو بن امرئ القيس} بن مالك بن ثعلبة بن كعب بن الخزرج بن الحرث بن الخزرج رضى الله تعالى عنه، و حضرت رافع بن مالك بن العجلان رضى الله تعالى عنه المنقدم، و حضرت البراء بن معرور بن صخربن خنساء بن سنان بن عبيد بن عدى بن غنم بن كعب بن سلمة بن سعد بن على ابن أسد بن ساردة بن تزيد بن جشم بن الخزرج رضى الله تعالى عنه و حضرت عبد الله بن عمرو بن حرام بن ثعلبة بن حرام ابن كعب بن غنم بن كعب بن سلمة رضى الله تعالى عنه، و حضرت عبادة بن الصامت رضى الله تعالى عنه المتقدم، و حضرت سعد بن عبادة بن دليم بن حارثة بن خزيمة بن ثعلبة بن طريف بن الخزرج بن ساعدة بن كعب بن الخزرج رضى الله تعالى عنه، و حضرت المنذر بن عمرو بن خنيس بن حارثة بن لوذذان بن عبد ود بن زيد بن ثعلبة بن الخزرج بن ساعدة بن كعب ابن الخزرج رضى الله تعالى عنه. فهؤلاء تسعة من الخزرج
অর্থ “হযরত ইবনে
ইসহাক রহমতুল্লাহি আলাইহি তিনি বলেন, ওই ১২জন হলেন
পূর্বেল্লিখিত (১) হযরত আবু উমামা আসয়াদ ইবনে যুরারাহ রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু,
(২) হযরত সায়াদ ইবনে রাবী (ইবনে আমর ইবনে আবূ যুহায়রা ইবনে মালিক ইবনে
ইমরুল কায়স ইবনে মালিক ইবনে ছা’লাবা ইবনে কা’ব ইবনে খাযরাজ ইবনে হারিছ ইবনে
খাযরাজ) রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু, (৩) হযরত আব্দুল্লাহ
ইবনে রাওয়াহা ইবনে ইমরুল কায়স ইবনে আমর ইবনে ইমরুল কায়স ইবনে মালিক ইবনে ছা’লাবা
ইবনে কা’ব ইবনে খাযরাজ ইবনে হারিছ ইবনে খাযরাজ। পূর্বোল্লিখিত (৪) হযরত রাফি’
ইবনে মালিক ইবনে আজলান রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু, (৫) হযরত
বারা ইবনে মা’রূর ইবনে সাখর ইবনে খানসা ইবনে সিনান ইবনে উবাইদ ইবনে আদী ইবনে গানাম
ইবনে কা’ব ইবনে সালামা ইবনে সাআদ ইবনে আলী ইবনে আসাদ ইবনে সারিদা ইবনে তাযীদ ইবনে
জাশম ইবনে খাযরাজ রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু, (৬) হযরত
আব্দুল্লাহ ইবনে আমর (ইবনে হারাম ইবনে ছা’লাবা ইবনে হারাম ইবনে কা’ব ইবনে গানাম
ইবনে কা’ব ইবনে সালামা) রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু, পূর্বোল্লিখিত
(৭) হযরত উবাদা ইবনে ছামিত রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু (৮) হযরত সাআদ ইবনে উবাদা
(ইবনে দালীম ইবনে হারিছা ইবনে খুযায়মা ইবনে ছা’লাবা ইবনে তারীফ ইবনে খাযরাজ ইবনে
সায়িদা ইবনে কা’ব ইবনে খাযরাজ) রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু, (৯)
হযরত মুনযির ইবনে আমর খুনায়স ইবনে হারিছা ইবনে লুযান ইবনে আবদুদ (ইবনে যায়দ ইবনে
ছা’লাবা ইবনে খাযরাজ ইবনে সায়িদা ইবনে কা’ব ইবনে খাযরাজ) রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা
আনহু। এই ৯ জন হলেন, খাযরাজ গোত্রভুক্ত।
ومن الاوس ثلاثة وهم، حضرت أسيد بن حضير بن سماك بن عتيك بن رافع بن امرئ القيس بن زيد بن عبد الاشهل بن جشم بن الخزرج بن عمرو بن مالك ابن الاوس رضى الله تعالى عنه، و حضرت سعد بن خيثمة بن الحارث بن مالك بن كعب بن النحاط بن كعب بن حارثة بن غنم بن السلم بن امرئ القيس بن مالك بن الاوس رضى الله تعالى عنه، و حضرت رفاعة بن عبد المنذر بن زنير بن زيد بن أمية بن زيد بن مالك بن عوف بن عمرو بن عوف بن مالك بن الاوس رضى الله تعالى عنه.
قال حضرت كعب بن مالك رضى الله تعالى عنه فى ذكر النقباء الاثنى عشر هذه الليلة- ليلة العقبة الثانية- حين قال
:
১২ জন নকীব উনাদের
মধ্যে আওস গোত্রের ছিলেন ৩ জন। উনারা হলেন, (১) হযরত উসাইদ
ইবনে হুদ্বায়র (ইবনে সিমাক ইবনে আতীক ইবনে রাফি’ ইবনে ইমরুল কায়স ইবনে যায়দ ইবনে
আব্দুল আশহাল ইবনে জাশম ইবনে খাযরাজ ইবনে আমর ইবনে মালিক ইবনে আওস) রদ্বিয়াল্লাহু
তায়ালা আনহু, (২) হযরত সাআদ ইবনে খায়শামা হারিছ ইবনে মালিক
ইবনে কা’ব ইবনে নুহাত ইবনে কা’ব ইবনে হারিছা ইবনে গানাম ইবনে সালাম ইবনে ইমরুল
কায়স ইবনে মালিক ইবনে আওস রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু, (৩)
হযরত রিফাআ ইবনে আব্দুল মুনযির (ইবনে যানীর ইবনে যায়দ ইবনে উমাইয়া ইবনে যায়দ ইবনে
মালিক ইবনে আওফ ইবনে আমর ইবনে আওফ ইবনে মালিক ইবনে আওস) রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা
আনহু।
আকাবার দ্বিতীয়
বাইয়াত শরীফ উনার রাতে উপস্থিত ১২ জন প্রতিনিধি সম্পর্কে কবি কা’ব ইবনে মালিক
রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু তিনি বলেন,
أبلغ أبيا أنه فال رأيه – وحان غداة الشعب والحين واقع
উবাইয়কে জানিয়ে দাও
যে, তার অভিমত ও পরিকল্পনা ব্যর্থ হয়েছে এবং তা সম্পূর্ণই ধ্বংস
হয়েছে আকাবার শপথ দিবসে। ধ্বংস তো তাদের উপর আপতিত হবেই।
أبى الله ما منتك نفسك إنه – بمرصاد أمر الناس راء وسامع
তোমার মন যা কামনা
করছে মহান আল্লাহ পাক তিনি তা প্রত্যাখ্যান করেছেন। মানুষের কর্মতৎপরতা সম্পর্কে
তিনি সদা সতর্ক। তিনি সব দেখেন, সব শুনেন।
وأبلغ أبا سفيان أن قد بدالنا – باحمد نور من هدى الله ساطع
হযরত আবু সুফিয়ান রদ্বিয়াল্লাহু
তায়ালা আনহু উনাকে জানিয়ে দিন (অর্থাৎ এই কবিতা হযরত আবূ সুফিয়ান রদ্বিয়াল্লাহু
তায়ালা আনহু উনার ইসলাম গ্রহণের পূর্বের ঘটনা।) সাইয়্যিদুল মুরসালীন, ইমামুল
মুরসালীন, খাতামুন নাবিইয়ীন, নূরে
মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম
উনার সাথে সাথে আমাদের নিকটও মহান আল্লাহ পাক উনার হিদায়েতের প্রদীপ্ত আলো
প্রকাশিত হয়েছে।
فلا ترغبن فى حشد أمر تريده – وألب وجمع كل ماأنت جامع
সুতরাং আপনি যে
পকিল্পনা বাস্তবায়ন কামনা করছেন, তা পূর্ণতা লাভের আশা
করবেন না। যতো ইচ্ছা প্রস্তুতি নিন, যা ইচ্ছা সংগ্রহ করুন
তাতে কোনো কাজ হবে না।
ودونك فاعلم أن نقض عهودنا – أباه عليك الرهط حين تبايعوا
আপনি এটাও জেনে
রাখুন যে, সাইয়্যিদুল মুরসালীন, ইমামুল মুরসালীন, খাতামুন নাবিইয়ীন, নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু
আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার সাথে সম্পাদিত আমাদের শপথ ও অঙ্গীকার ভঙ্গ করার জন্যে
আপনি যে প্রস্তাব দান করেছেন আমাদের দল তা প্রত্যাখ্যান করেছেন। যখন উনারা
অঙ্গীকার করেছেন, তখনই আপনার প্রস্তাব প্রত্যাখ্যাত হয়েছে।
أباه البراء وابن عمرو كلاهما – وأسعد يأباه عليك ورافع
হযরত বারা’ রদ্বিয়াল্লাহু
তায়ালা আনহু এবং হযরত ইবনে আমর রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু উনারা দু’জনেই আপনার
প্রস্তাব প্রত্যাখ্যান করেছেন। হযরত আসয়াদ রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু এবং রাফি’
রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু তিনিও তা প্রত্যাখ্যান করেছেন।
وسعد أباه الساعدى ومنذر – لأنفك إن حاولت ذلك جادع
হযরত সাআদ সাইদী
রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু তিনি তা প্রত্যাখ্যান করেছেন। হযরত মুনযির
রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু তিনিও তা প্রত্যাখ্যান করেছেন। যদি আপনি ওই প্রস্তাব
বাস্তবায়ন করতে চান, তবে আপনার নাক কাটা যাবে।
وما ابن ربيع إن تناولت عهده – بمسلمه لا يطمعن ثم طامع
আপনি যদি হযরত ইবনে
রাবী রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু উনাকে বাইয়াত ভঙ্গের প্রস্তাব দেন, তবে
তিনি তা মানবেন না, সুতরাং কেউ যেনো সে বিষয়ে লোভ না করে।
وأيضا فلا يعطيكه ابن رواحة – وإخفاره من دونه السم ناقع
হযরত ইবনে রাওয়াহা
রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু তিনি আপনার কাম্য বস্তু দিবেন না। উনার আশ্রিত ব্যক্তির
নিরাপত্তা বিঘœ করা
উনার জন্যে পরিপূর্ণ বিষের ন্যায়।
وفاء به والقوقلى بن صامت – بمندوحة عما تحاول يافع
সাইয়্যিদুল
মুরসালীন, ইমামুল মুরসালীন, খাতামুন
নাবিইয়ীন, নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ
হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনাকে দেয়া অঙ্গীকার পূর্ণকরণ ও
প্রতিশ্রুতি পালনে কাওকালী ইবনে সামীত উদারমনা ও মুক্ত হস্ত। আপনি যা চাচ্ছেন তা
রহিত করণে তিনি সদা প্রস্তুত।
أبو هيثم أيضا وفى بمثلها – وفاء بما أعطى من العهد خالع
হযরত হায়ছাম
রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু তিনিও প্রতিশ্রুতি পালনকারী। যে অঙ্গীকার তিনি প্রদান
করেছেন, তা পালনে তিনি অবিচল।
وما ابن حضير إن أردت بمطمع – فهل أنت عن احموقة الغى نازع
আপনি যদি চান, তবু
ইবনে হুযায়র আপনাকে আশ্বাস দিবেন না। এখন গুমরাহীর বোকামী থেকে আপনি কি বেরিয়ে
আসবেন।
وسعد أخو عمرو بن عوفى فأنه – ضروح لما حاولت ملأ مر مانع
আমর ইবনে আওফ
গোত্রের হযরত সাআদ রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু, আপনি
যা কামনা করুন তা প্রতিরোধ করার জন্যে তিনি সদা প্রস্তুত।
أولاك نجوم لا يغبك منهم – عليك بنحس فى دجى الليل طالع
এসব নক্ষত্রের
অনুসরণ করাই আপনার জন্যে শ্রেয়। অন্ধকার রাতে আগমনকারী কোনো অশুভ শক্তি যেনো
আপনাকে উনাদের থেকে আড়াল করতে না পারে।
قال حضرت ابن هشام رحمة الله عليه : فذ كرفيهم أبا الهيم بن التيهان ولم يذ كر رفاعة.
হযরত ইবনে হিশাম
রহমতুল্লাহি আলাইহি তিনি বলেন, হযরত কা’ব ইবনে মালিক
রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু তিনি এই কবিতায় পবিত্র আকাবায় উপস্থিত ব্যক্তিগণের
মধ্যে হযরত আবূ হায়ছাম রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু উনার নাম উল্লেখ করেননি।”
পবিত্র হাদীছ শরীফ
উনার মধ্যে ইরশাদ হয়েছে,
عن حضرت اسماعيل بن عبيد الله بن رفاعة رحمة الله عليه عن أبيه قال قدمت روايا خمر، فاتاها عبادة بن الصامت فخرقها وقال إنا بايعنا رسول الله صلى الله عليه وسلم على السمع والطاعة فى النشاط والكسل، والنفقة فى العسر واليسر، وعلى الامر بالمعروف والنهى عن المنكر، وعلى أن نقول فى الله لا تأخذنا فيه لومة لائم، وعلى أن ننصر رسول الله صلى الله عليه وسلم إذا قدم علينا يثرب مما تمنع به أنفسنا وأرواحنا وأبناءنا ولنا الجنة. فهذه بيعة رسول الله صلى الله عليه وسلم التى بايعناه عليها، وهذا اسناد جيد.
অর্থ: “হযরত
ইসমায়ীল ইবনে উবায়দুল্লাহ ইবনে রিফায়া রহমতুল্লাহি আলাইহি তিনি উনার সম্মানিত পিতা
উনার সূত্রে বর্ণনা করেন। তিনি বলেছেন যে, আমি একদিন শরাবের
পাত্র এগিয়ে দিলাম। হযরত উবাদা ইবনে ছামিত রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু তিনি সেখানে
এলেন এবং ওই পাত্র ভেঙ্গে ফেললেন এবং বললেন, আমরা সাইয়্যিদুল
মুরসালীন, ইমামুল মুরসালীন, খাতামুন
নাবিইয়ীন, নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ
হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার পবিত্র হাত মুবারকে বাইয়াত হয়েছি।
আমরা অঙ্গীকার করেছি যে, আনন্দ-বিষাদ সব অবস্থায় উনার
আনুগত্য করবো। স্বচ্ছল অস্বচ্ছল সর্বাবস্থায় মহান আল্লাহ পাক উনার রাস্তায় দান
খয়রাত করবো। আমরা সৎকাজের আদেশ দিবো, অসৎ কাজ থেকে বারণ
করবো। আমরা মহান আল্লাহ পাক উনার রাস্তায় কথা বলে যাবো, কোনো
নিন্দুকের নিন্দা আমাদের পিছপা করতে পারবে না। আমরা আরো অঙ্গীকার করেছি যে,
সাইয়্যিদুল মুরসালীন, ইমামুল মুরসালীন,
খাতামুন নাবিইয়ীন, নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি পবিত্র মদীনা
শরীফ তাশরীফ আনলে আমরা উনার খিদমত মুবারকের আঞ্জাম দিবো। আমাদের নিজেদেরকে ও
আমাদের সন্তানদেরকে যেভাবে রক্ষা করি তার চেয়েও উত্তমভাবে উনার খিদমত করবো,
বিনিময়ে আমরা জান্নাত তথা মহান আল্লাহ পাক ও উনার হাবীব নূওে
মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া
সাল্লাম উনাদের সন্তুষ্টি লাভ করতে পারবো। এটি ছিলো সাইয়্যিদুল মুরসালীন, ইমামুল মুরসালীন, খাতামুন নাবিইয়ীন, নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু
আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার সঙ্গে আমাদের অঙ্গীকার বা ওয়াদা। উনার হাত মুবারকে আমাদের
বাইয়াত। এটি একটি উত্তম সনদ। (বাইহাক্বী শরীফ)
আল বিদায়া ওয়ান
নিহায়া ২য় জিলদ ১৬৪ ও ১৬৫ পৃষ্ঠায় উল্লেখ রয়েছে,
قال حضرت ابن اسحاق رحمة الله عليه فى حديثه عن حضرت معبد بن كعب رضى الله تعالى عنه عن أخيه حضرت عبد الله بن كعب بن مالك رضى الله تعالى عنه. قال فلما بايعنا رسول الله صلى الله عليه وسلم صرخ الشيطان من رأس العقبة بانفذ صوت سمعته قط؟ يا أهل الجباجب - والجباجب المنازل - هل لكم فى مذمم والصباء معه قد اجتمعوا على حربكم. قال فقال رسول الله صلى الله عليه وسلم هذا أزب العقبة، هذا ابن أزبب.
অর্থ: “হযরত ইবনে
ইসহাক্ব রহমতুল্লাহি আলাইহি তিনি বলেন, হযরত মা’বাদ ইবনে কা’ব
রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু উনার থেকে তিনি উনার ভাই হযরত আব্দুল্লাহ ইবনে কা’ব
ইবনে মালিক রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু উনার থেকে, বর্ণনা
করেছেন। তিনি বলেছেন, আমরা যখন সাইয়্যিদুল মুরসালীন, ইমামুল মুরসালীন, খাতামুন নাবিইয়ীন, নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু
আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার হাত মুবারকে বাইয়াত হলাম, তখন আকাবা
পাহাড়ের চূড়া থেকে শয়তান এমন জোড়ে একটি চিৎকার দিলো, যা
ইতোপূর্বে কখনো আমি শুনিনি। চিৎকার দিয়ে সে বললো, হে তাঁবু ও
গৃহের অধিবাসীগণ! এক নিন্দিক ব্যক্তি এবং উনার সাথে কতক ধর্মত্যাগী লোকজন উনাদের
ব্যাপারে তোমরা কোনো ব্যবস্থা নিবে কি? নাঊযুবিল্লাহ! তারা
তো তোমাদের বিরুদ্ধে জিহাদ করার জন্যে সমবেত হয়েছেন, একমত
হয়েছেন। নাঊযুবিল্লাহ! সাইয়্যিদুল মুরসালীন, ইমামুল মুরসালীন,
খাতামুন নাবিইয়ীন, নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি ইরশাদ মুবারক
করলেন, এই চিৎকারকারী হলো আকাবার উনার ঘৃণ্য আযিব জিন। সে
ঘৃণ্য বংশজাত।
قال حضرت ابن هشام رحمة الله عليه ويقال ابن أزيب. أتسمع أى عدو الله؟ أما والله لا تفرغن لك. ثم قال رسول الله صلى الله عليه وسلم ارفضوا الى رحالكم. قال فقال حضرت العباس بن عبادة بن نضلة رضى الله تعالى عنه يارسول الله والذى بعثك بالحق إن شئت لنميلن على أهل منى غدا بأسيافنا قال فقال رسول الله صلى الله عليه وسلم لم نؤمر بذلك ولكن ارجعوا إلى رحالكم.
قال فرجعنا إلى مضاجعنا فنمنا فيها حتى أصبحنا، فلما أصبحنا غدت علينا جلة قريش حتى جاؤنا فى منازلنا فقالوا يامعشر الخزرج إنه قد بلغنا أنكم قد جئتم إلى صاحبنا هذا تستخر جونه من بين أظهرنا وتبايعونه
على حربنا. وإنه والله ما من حى من العرب أبغض الينا من أن تنشب الحرب بيننا وبينهم منكم قال فانبعث من هناك من مشركى قومنا يحلفون ما كان من هذا شئ وما علمناه، قال و صدقوا لم يعلموا، قال وبعضنا ينظر إلى بعض. قال ثم قام القوم
হযরত ইবনে হিশাম
রহমতুল্লাহি আলাইহি তিনি বলেন, শয়তানকে ‘ইবনে আযিব’ বলা
হয়। সাইয়্যিদুল মুরসালীন, ইমামুল মুরসালীন, খাতামুন নাবিইয়ীন, নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি আরো বলেন,
“হে মহান আল্লাহ পাক উনার দুশমন। আমরা তোকে এই সুযোগ দিবো না। এরপর
সাইয়্যিদুল মুরসালীন, ইমামুল মুরসালীন, খাতামুন নাবিইয়ীন, নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি ইরশাদ মুবারক
করলেন, এবার সবাই নিজ নিজ তাঁবুতে ফিরে যান। হযরত আব্বাস
ইবনে উবাদা ইবনে নাযলা রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু তিনি বলেছেন, ইয়া রাসূলাল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম! যে মহান খালিক্ব মালিক
রব মহান আল্লাহ পাক আপনাকে সত্য সহকারে প্রেরণ করেছেন উনার ক্বসম! আপনি চাইলে
আগামীকাল ভোরে আমরা তরবারী নিয়ে পবিত্র মিনাবাসীদের উপর অভিযান চালাতে পারি।
সাইয়্যিদুল মুরসালীন, ইমামুল মুরসালীন, খাতামুন নাবিইয়ীন, নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি বললেন,
না এখনও আমরা সে বিষয়ে আদেশপ্রাপ্ত হইনি। সবাই বরং তাঁবুতে ফিরে
যান। বর্ণনাকারী তিনি বলেন, আমরা সবাই আমাদের তাঁবুতে ফিরে
গেলাম এবং ভোর পর্যন্ত ঘুমিয়ে কাটালাম। সকালে কুরাইশ কাফিরদের কতক নেতা আমাদের
নিকট হাজির হলো। তার বললো, হে খাযরাজ সম্প্রদায়ের ব্যক্তিগণ!
আমরা খবর পেয়েছি যে, আপনারা আমাদের বিরোধী ব্যক্তিগণ উনাদের
নিকট গিয়েছিলেন। আপনারা নাকি উনাকে আমাদের নিকট থেকে নিয়ে যেতে চান। আর আপনারা
আমাদের বিরুদ্ধে যুদ্ধ করার জন্যে উনার হাত মুবারকে বাইয়াত হয়েছেন। আপনাদের সাথে
যুদ্ধ করাকে আমরা যত ঘৃণ্যা করি, আরবের অন্য কোনো গোত্রের
সাথে যুদ্ধকে আমরা তত ঘৃণা করি না। তাদের কথা শুনে আমাদের সম্প্রদায়ের মুশরিকরা
উঠে দাঁড়ালো এবং ক্বসম করে বললো, এমন কোনো ঘটনা তো ঘটেনি এবং
এ বিষয়ে আমরা কিছুই জানি না। বস্তুত তারা সত্যি বলেছিলো। আসলে তারা তো এ বিষয়ে
কিছুই জানতো না। বর্ণনাকারী বলেন, আমরা যারা পবিত্র আকাবা
উনার বাইয়াতের মজলিসে উপস্থিত ছিলাম। আমরা পরস্পর একে অপরকে দেখতে ছিলাম। এরপর
কুরাইশ লোকজন চলে যাওয়ার জন্য উঠে দাঁড়ালো।
0 Comments:
Post a Comment