সুওয়াল :
আমরা জানি যে, হযরত মুসা আলাইহিস সালাম উনার সময় মানুষ সীমা লংঘন করেছিল। সে কারণে মানুষ
বানরে পরিণত হয়েছিল। কাজেই আমরা জানতে চাই যে, বানরের তখন হতে উৎপত্তি, না তার
পূর্বে বা পরে হতে?
জাওয়াব :
সুওয়ালে বর্ণিত ঘটনাটি হযরত মুসা আলাইহিস সালাম উনার যুগের নয়। আসলে সেটা হযরত দাউদ
আলাইহিস সালাম উনার যুগে হয়েছিল। যে প্রসঙ্গে মহান আল্লাহ পাক তিনি পবিত্র সূরা
বাক্বারা শরীফ উনার ৬৫-৬৬নং পবিত্র আয়াত শরীফ উনাদের মধ্যে বলেন,
ولقد
علمتم الذين اعتدوا منكم فى السبت فقلنا لهم كونوا قردة خاسئين- فجعلنها نكالا لما
بين يديه وما خلفها ومو عظة للمتقين.
অর্থ : “তোমরা
অবশ্যই অবগত আছ যে,
যারা তোমাদের মধ্যে শনিবারে সীমা লংঘন করেছিল, আমি
তাদেরকে বলেছিলাম,
তোমরা লাঞ্ছিত বানরে পরিণত হয়ে যাও। আমি এ ঘটনাকে তাদের সমসাময়িক এবং তাদের পরবর্তীদের
জন্য দৃষ্টান্ত স্বরূপ এবং মুত্তাক্বীনদের জন্য উপদেশ স্বরূপ স্থাপন করেছি।”
উপরোক্ত
পবিত্র আয়াত শরীফ উনাদের ব্যাখ্যায় হযরত মুফাসসীরীনয়ে কিরাম উনারা বলেন যে, হযরত
দাউদ আলাইহিস সালাম উনার সময় বণী ইসরাইল সম্প্রদায় যখন মাছ শিকারের ব্যাপারে সীমা
লংঘন করে অর্থাৎ তাদের জন্য শনিবার দিন ছিল পবিত্র, যা ইবাদতের জন্য নির্দিষ্ট করা হয়েছিল
এবং মাছ শিকারের জন্য নিষিদ্ধ দিন হিসেবে ঘোষণা করা হয়েছিল। এ আদেশ অমান্য করার
কারণে তাদের প্রতি গযব নাযিল হয় এবং তাদের আকৃতির বিকৃতি ঘটে অর্থাৎ তারা বানরে
পরিণত হয়।
হযরত
ক্বাতাদাহ রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু তিনি বলেন, সীমা লংঘনকারীদের মধ্যে যারা যুবক
ছিল, তারা বানরে পরিণত হয়,
এবং যারা বৃদ্ধ ছিল, তারা শুকরে পরিণত হয় আর তারা
সকলেই তিনদিন পর মরে নিশ্চিহ্ন হয়ে যায়।
মুসলিম
শরীফ উনার মধ্যে হযরত আব্দুল্লাহ বিন মাসউদ রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু হতে বর্ণিত
আছে যে, একদা কয়েকজন হযরত ছাহাবায়ে কিরাম রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহুম উনারা মহান
আল্লাহ পাক উনার রসূল নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক
ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনাকে জিজ্ঞাসা করছিলেন যে, আমাদের
যুগের বানর ও শুকর সেই রূপান্তরিত ইহুদী সম্প্রদায় কিনা বা তাদের বংশধর কিনা? জবাবে
নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি বলেন, “মহান
আল্লাহ পাক তিনি যখন কোন সম্প্রদায়ের উপর আকৃতি বিকৃতির আযাব নাযিল করেন, তখন তারা
জমিন থেকে বিলুপ্ত হয়ে যায়। বানর ও শুকর পৃথিবীতে পূর্বেও ছিল এবং ভবিষ্যতেও
থাকবে। এদের সাথে হযরত দাউদ আলাইহিস সালাম উনার যুগে সীমা লংঘনের ফলে মানুষ থেকে
রূপানন্তরিত বানর ও শুকরের কোনই সম্পর্ক নেই।
আবা-৩৪
0 Comments:
Post a Comment